Advertisment

স্রেফ আমাকেই সিবিআই জেরা কেন, হাইকোর্টে প্রশ্ন তুললেন রাজীব কুমার

২০১৩ সালে সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসে, এবং অভিযুক্তদের তালিকা প্রকাশ করে সিট। সেই তালিকায় আসামের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নাম থাকলেও তাঁকে জেরা করেনি সিবিআই।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
rajib kumar

রাজীব কুমার। ফোটো- টুইটার

সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি মামলায় নাম থাকা সত্ত্বেও আসামের বর্তমান অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে জেরা করেনি সিবিআই, মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টকে এমনটাই জানালেন কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার তথা সিআইডির বর্তমান অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল রাজীব কুমার। বিচারপতি মধুমন্তী মৈত্রের এজলাসে রাজীব কুমারের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায় বলেন, সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তের উদ্দেশ্যে গঠিত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) ১২১ জন অফিসারদের মধ্যে থেকে কেবলমাত্র এই আইপিএস অফিসারকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেছে নিয়েছে সিবিআই।

Advertisment

মিলন মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য অনুযায়ী, আজ থেকে ছয় বছর আগে, অর্থাৎ ২০১৩ সালে, সারদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসে, এবং অভিযুক্তদের তালিকা প্রকাশ করে সিট। সেই তালিকায় হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নাম থাকলেও তাঁকে জেরা করেনি সিবিআই। সিটের প্রধান হিসাবে তখন নিযুক্ত ছিলেন রাজীব কুমার।

আরও পড়ুন: রাজীব কুমারের বয়ান রেকর্ড শেষ, ৪ ঘণ্টা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ সিবিআইয়ের

রাজীব কুমারের আইনজীবীর অভিযোগ, ১২১ জন পুলিশ আধিকারিকের মধ্যে থেকে সিবিআই যে তাঁর মক্কেলকেই শুধুমাত্র বেছে নিয়েছে, তার নেপথ্যে কোনও নেতিবাচক উদ্দেশ্য রয়েছে। উল্লেখ্য, সারদা কেলেঙ্কারি যখন সামনে আসে, সেই সময় বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার ছিলেন রাজীব কুমার, এবং সিটের প্রাত্যহিক কার্যকলাপ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে।

সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তের স্বার্থে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মে মাসে একটি নোটিশ পাঠায় সিবিআই। সেই নোটিশ খারিজের দাবিতেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন রাজীব। এদিন সমস্ত সওয়াল জবাব শোনার পর বৃহস্পতিবার অর্থাৎ কাল পর্যন্ত মামলার শুনানির স্থগিতাদেশ দিয়েছেন বিচারপতি।

সিবিআই এর আগে একাধিকবার দাবি করেছে, সিট-এর দায়িত্বে থাকাকালীন সারদা মামলার তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে সাহায্য করেন রাজীব কুমার। তবে সারদা তদন্তে রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে। দীর্ঘ টালবাহানার পর শেষমেশ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত ফেব্রুয়ারি মাসে শিলংয়ে রাজীব কুমারকে টানা পাঁচদিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। তবে জিজ্ঞাসাবাদের পরও সন্তুষ্ট হয়নি দেশের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা। তদন্তের স্বার্থে রাজীবকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা প্রয়োজন, এই আর্জিই আদালতে রাখে সিবিআই।

আরও পড়ুন: রাজীব কুমারের ‘রক্ষাকবচের’ মেয়াদ ফের বাড়ালো হাইকোর্ট

মে মাসে রাজীব কুমারের গ্রেফতারের অন্তর্বতী রক্ষাকবচ সরিয়ে নেয় সুপ্রিম কোর্ট। ফলে কলকাতার প্রাক্তন নগরপালকে গ্রেফতার করতে আর কোনও বাধা থাকে না সিবিআইয়ের। তবে গ্রেফতারির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপের জন্য রাজীব কুমারকে সাত দিনের সময় দেয় আদালত। সেই মাসেই বাতিল করা হয় তাঁর আগাম জামিনের আবেদনও। তবে মে মাসের শেষে কলকাতা হাইকোর্ট জানায়, আপাতত গ্রেফতার করা যাবে না রাজীব কুমারকে, যদিও সিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হবে তাঁকে।

অন্যদিকে, তিনি তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করেছেন, ফলে, তাঁকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই বলে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিলেন রাজীব কুমার। একইসঙ্গে বিজেপি নেতা মুকুল রায়, কৈলাশ বিজয়বর্গীয়দের বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ সামনে আনেন তিনি। বিজেপি নেতাদের মদতেই সিবিআই তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলে আদালতে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন রাজীব কুমার।

cbi police Saradha Scam
Advertisment