/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/27/ramen-2025-08-27-11-48-41.jpg)
Success Story: বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে রমেন মণ্ডল।
নদী ভাঙনের আতঙ্ক সঙ্গে নিয়েই তাঁর বড় হয়ে ওঠা। চোখের সামনে গঙ্গা-বক্ষে তলিয়ে যেতে দেখেছেন নিজেদের জমিও। এলাকায় ভাঙন পরিস্থিতি রুদ্ররূপ নিলে তাঁদেরও প্রাণভয়ে থাকতে হতো। নিতান্ত একটি গরিব পরিবারে বেড়ে ওঠা রমেন মণ্ডলের। পদে পদে অভাব-অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। এভাবেই তাঁর পথ চলা। তবে অদম্য জেদ তার অফুরন্ত ইচ্ছাশক্তিতেই শেষমেষ এসেছে প্রশ্নাতীত সাফল্য। সর্বভারতীয় পরীক্ষা NEET-এ উত্তীর্ণ হয়ে সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে MBBS পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। আগামী দিনে একজন প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক হয়ে গ্রামে ফিরে গরিবের পাশে দাঁড়াতে চান তিনি। গ্রামে একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখেন রমেন। যেখানে গরিবদের নিখরচায় তিনি চিকিৎসা পরিষেবা দেবেন।
মুর্শিদাবাদের ফারাক্কার গঙ্গা নদীর পাড়ের গ্রাম হোসেনপুর। এই গ্রামেই জন্ম রমেন মণ্ডলের। তাঁর বাবা পেশায় কৃষক, মা গৃহবধূ। পরিবারে এক দাদা এক বোন ছাড়াও কাকা-কাকিমা, ঠাকুরদা, ঠাকুমারা রয়েছেন। আদ্যোপান্ত একটি গরিব পরিবার থেকে উঠে এসেছেন এই রমেন মণ্ডল।
নদীর পাড়ে পাঠকাঠি ও মাটি দিয়ে তৈরি বাড়িতেই তাঁর বেড়ে ওঠা। ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ার প্রতি তাঁর আগ্রহটা ছিল অসীম। বরাবর ক্লাসে ভালো রেজাল্ট করতেন রমেন। বড় হওয়ার ইচ্ছেটা একেবারে ছোট থেকেই মনে গেঁথে গিয়েছিল তাঁর। প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডি পেরনোর পর মাধ্যমিক তারপর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করার পর সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকই হবেন।
সেই মতো ২০২৪ সালে NEET-এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দিয়েছিলেন। কলকাতার বানতলার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনি NEET-এর প্রস্তুতির জন্য ভর্তি হন। এরপর চলতি বছরের ৪ মে তিনি সর্বভারতীয় NEET পরীক্ষায় বসেছিলেন। সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর এবার পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে MBBS পড়ার সুযোগ পেয়েছে তিনি।
/filters:format(webp)/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/27/errosion-2025-08-27-11-51-31.jpg)
একজন প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক হয়ে গ্রামে ফিরে এসে সেখানেই গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে চান রমেন। নিজের গ্রামেই তিনি গড়ে তুলতে চান একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সেখানেই বিনে পয়সায় গরিব রোগীদের পরিষেবা দিতে চান তিনি।
এই প্রসঙ্গে রমেন মণ্ডল বলেন, "আমাদের গঙ্গার পাড়ে বাড়ি। নদী ভাঙনের আতঙ্ক সবসময় তাড়া করে বেড়ায়। ইতিমধ্যেই আমাদের হুসেনপুর গ্রামের বহু জমি নদী গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। পাটকাঠি দিয়ে তৈরি বাড়িতে কোনওমতে আমরাও আতঙ্কে বাস করছি। আমাদেরও বেশ কিছুটা জমি নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে। ভবিষ্যতে গ্রামে ফিরে গরিব মানুষের চিকিৎসা করার ইচ্ছা আছে। গরিবদের পাশে দাঁড়াতে চাই। ভবিষ্যতে আমাদের গ্রামে একটা স্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরি করার ইচ্ছা আছে।"