Advertisment

রোজের আড্ডাই 'কাল' হল ভাদুর, নিজস্ব নিরাপত্তা বলয় সরতেই হামলা

প্রায় সব সময়ই ভাদু শেখকে ঘিরে থাকতো তাঁর নিজস্ব একটি নিরাপত্তা বলয়। ৮-১০ জন যুবকের একটি দল ভাদুকে নিরাপত্তা দিত।

author-image
Joyprakash Das
New Update
bhadu Sheikh murder case cbi probe order by calcutta High Court

ডানদিকে নিহত তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ। বাঁদিকে ভাদু শেখের নিথর দেহ। ছবি: পার্থ পাল।

রোজের আড্ডাই কাল হল ভাদুর। অন্য দিনের মতো সোমবার রাতেও রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে আড্ডা দিতে গিয়েছিলেন বড়শাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ। স্কুটিতে বসে আড্ডায় মত্ত ছিলেন তিনি। ঠিক সেই সময়েই হামলা দুষ্কৃতীদের।

Advertisment

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় সব সময়ই ভাদু শেখকে ঘিরে থাকতো তাঁর নিজস্ব একটি নিরাপত্তা বলয়। ৮-১০ জন যুবকের একটি দল সব সময় তাঁকে ঘিরে থাকতো। সোমবার রাতেও তারা ছিল। তবে গতরাতে ভাদুর মোবাইলে একটি ফোন আসে। কারও সঙ্গে কথা বলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে থাকা যুবকরা সেখান থেকে কিছুটা সরে যায়। মুহূর্তের মধ্যে বাইকে চেপে আসা দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় ভাদুর উপর। পরপর বেশ কয়েকটি বোমা ছোড়া হয় ভাদু শেখকে লক্ষ্য করে। ভাদুর অনুগামীদের লক্ষ্য করেও বোমা ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তৃণমূল নেতা ভাদু শেখ। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।

আরও পড়ুন- ‘রামপুরহাট নিয়ে আপনার মন্তব্য তদন্তে প্রভাব ফেলতে পারে’, ধনকড়কে চিঠি মমতার

স্থানীয় সূত্রে জদানা গিয়েছে, একাধিক অপরাধে অভিযুক্ত ছিলেন ভাদু শেখ। তাঁর শত্রুর সংখ্যাও দিনে দিনে বাড়ছিল। এর আগে কংগ্রেস করতেন ভাদু। রামপুরহাটের বগটুই গ্রামেই আঙুর শেখ নামে এক কংগ্রেস নেতার হয়েই কাজ করতেন তিনি। তবে বছর দশেক আগে ভাদু কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দেন তৃণমূলে। আঙুর শেখের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়। একসময় ভাদুর রোষে পড়েই গ্রাম ছাড়তে বাধ্য হন আঙুর শেখ। বর্তমানে তিনি কোথায় আছেন তা নিশ্চিত করে কেউই কিছু বলতে পারছেন না।

আরও পড়ুন- থমথমে বগটুই, মর্গে পড়ে দাবিহীন ৮ পোড়া দেহ, গ্রামে পুলিশ পিকেট

অন্যদিকে, বীরভূম জেলায় ফি দিন মোট ৬টি টোলপ্লাজা দিয়ে বালি, পাথরের শ'য়ে শ'য়ে গাড়ি যায়। এই গাড়িগুলি থেকে মোটা টাকা রাজস্ব আদায় হয়। রামপুরহাটেও এমনই একটি টোলগেট রয়েছে। এই গেটটি দিয়ে যাওয়া গাড়ি থেকে বকলমে ভাদুই 'রাজস্ব' আদায় করত বলে অভিযোগ। সরকারকে রাজস্ব বাবদ নামমাত্র টাকা দিয়ে লক্ষ-লক্ষ টাকা ভাদু পকেটে পুরত বলে অভিযোগ। এভাবে রোজ বীরভূম জেলার একটি গেট থেকে প্রায় ৬০ লক্ষ টাকা আদায় হয়। নামমাত্র টাকা যায় সরকারি কোষাগারে। বেশিরভাগ টাকাটাই হাত ঘুরে যায় ভাদুর মতোই কিছু নেতার হাতে, উঠছে এমনই অভিযোগ।

আরও পড়ুন- ‘বৃহত্তর ষড়যন্ত্র, রাজ্যকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা’, রামপুরহাট কাণ্ডে বললেন পার্থ

রামপুরহাট টোল গেট দিয়ে যাওয়া বলি, পাথরের গাড়ি থেকে তোলা আদায়ের ভাগ নিয়েই ইদানিং লাগোয়া এলাকাগুলির 'তোলাবাজ'-দের সঙ্গে শত্রুতা বাড়তে থাকে ভাদুর। তার জেরেই এই নৃশংস খুন বলে দাবি স্থানীয় সূত্রের। এছাড়াও আঙুর শেখ বগটুই গ্রাম ছাড়তেই এখানে তৃণমূলের দুটি গোষ্ঠী তৈরি হয়ে যায়। একটি গোষ্ঠীর নেতৃত্বে ছিলেন ভাদু শেখ। এলাকা দখলের রাজনীতিকে কেন্দ্র করে এর আগেও একাধিকবার উত্তপ্ত হয়েছে এই এলাকা। এবার সেই দখলের রাজনীতি ঘিরেই নেতা খুন, পুড়িয়ে খুন।

tmc police
Advertisment