Rash Behari Bose and Toshiko Soma: বাঙালি বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর (Rash Behari Bose) সঙ্গে জাপানের নিবিঢ় যোগ রয়েছে। দশকের পর দশক ধরে প্রশান্ত মহাসাগরের কোলে থাকা এই দ্বীপরাষ্ট্রটি রাসবিহারী বসুকে শুধুই যে নিরাপদ একটি আশ্রয় দিয়েছে তাই নয়, দিয়েছে বীরের সম্মানও। এক কথায় রাসবিহারী বসুর সঙ্গে জাপানের সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত গভীর এবং গুরুত্বপূর্ণ। জাপানে থেকেই ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পক্ষে জনমত তৈরি চেষ্টা করে গিয়েছেন রাসবিহারী বসু। সে দেশেই তিনি তৈরি করেছেন 'ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগ'। যা ভারতবর্ষের বাইরে থাকা ভারতীয়দের সংঘটিত করার জন্য ছিল একটি অভূতপূর্ব প্রয়াস।
জানা গিয়েছে, ১৯১৫ সালে লর্ড হার্ডিঞ্জের ওপর বোমা হামলার পর ব্রিটিশ পুলিশের নজর এড়িয়ে রাসবিহারী বসু জাপানে পালিয়ে যান। সেখানে তিনি প্রভাবশালী প্যান-এশিয়ানিস্ট নেতা তোওয়ামা মিৎসুরু এবং তাঁর সহযোগী সোওমা আইজোর সহায়তায় রাজনৈতিক আশ্রয় পেয়েছিলেন। সোওমা পরিবারের 'নাকামুরায়া' বেকারির ওপর তলায় তিনি আশ্রয় নেন এবং পরবর্তী সময়ে তাঁদের কন্যা তোশিকো সোমার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
জাপানে থাকাকালীন রাসবিহারী বসু 'ভারত মৈত্রী সমিতি' তৈরি করেছিলেন। এই সংগঠনটি ভারতীয় ও জাপানি নাগরিকদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংযোগ স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। রাসবিহারী বসু জাপানি ভাষায় বিভিন্ন বই রচনা করেছিলেন। সেই সব বইয়ের মাধ্যমেও তিনি ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের বার্তা জাপানি সমাজে প্রচার করেন।
আরও পড়ুন- Kolkata News Live Updates:বিরাট বিপাকে মদন মিত্ররা, কড়া পদক্ষেপ করল কলকাতা হাইকোর্ট
১৯৪২ সালে টোকিওতে রাসবিহারী বসুর উদ্যোগেই তৈরি হয়েছিল 'ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স লিগ'। তিনি এই সংগঠনের মাধ্যমে ভারতীয় যুদ্ধবন্দিদের সংগঠিত করে 'ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি' (আজাদ হিন্দ ফৌজ) প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তী সময়ে তাঁরই হাতে তৈরি আজাদ হিন্দ ফৌজের ভার তিনি তুলে দেন সুভাষচন্দ্র বসুর হাতে।
আরও পড়ুন- Abhishek Banerjee:অপারেশন সিঁদুরের গুরুত্ব বোঝাতে জাপানে ভারতীয় সাংসদরা, হঠাৎই কী দেখে মন খারাপ অভিষেকের?
রাসবিহারী বসু জাপানি নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছিলেন। জাপান সরকার তাঁকে 'সেকেন্ড অর্ডার অব দ্য মেরিট অব দি রাইজিং সান' সম্মানে ভূষিত করেছিল। তিনি জাপানি সমাজে ভারতীয় সংস্কৃতি ও স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। রাসবিহারী বসুর জাপানে অবস্থান শুধু রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণের ঘটনাই নয়, এটি ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের আন্তর্জাতিকীকরণ এবং ভারত-জাপান সম্পর্কের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্তও বটে। রাসবিহারী বসুর জীবন ও কাজ আজও দুই দেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।