Mamata Writes Modi On Satyajit Ray house demolition: রবীন্দ্রনাথের পর এবার 'টার্গেটে' সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি! ইউনূসের ভূমিকা কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ চাইল মমতা।
বাংলাদেশের ময়মনসিংহে কিংবদন্তি চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক ভিটে ভাঙার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার (১৫ জুলাই, ২০২৫) তিনি বাংলাদেশ সরকারের কাছে সত্যজিৎ রায়ের স্মৃতি বিজরিত ওই বাড়িটির সংরক্ষণের দাবি জানান।
মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঢাকায় সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়িটি বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে ভেঙে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এ বিষয়ে তিনি অবিলম্বে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। এর আগে বাংলাদেশের সিরাজগঞ্জে বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত কাছারি বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনার কড়া নিন্দা জানিয়েছিল ভারত।
মমতা এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্টে লিখেছেন, ময়মনসিংহ জেলায় হরিকিশোর রায় চৌধুরী রোডে অবস্থিত শতাব্দী প্রাচীন এই বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি। এই বাড়িতেই থাকতেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক উপেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীর। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে মমতা বলেন, ঐতিহাসিক সম্পত্তিটি ভেঙে ফেলার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "এই খবরটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। রায় পরিবার বাঙালি সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান ধারক ও বাহক। উপেন্দ্র কিশোর বাংলার নবজাগরণের এক অন্যতম স্তম্ভ। তাই, আমি বিশ্বাস করি এই বাড়িটি বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাসের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত,"। এবিষয়ে তিনি কেন্দ্রের হস্তক্ষেপেরও দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশের মহম্মদ ইউনূস সরকার এবং সে দেশের সকল শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে এই ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি সংরক্ষণের জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানান।
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বাড়িটি ১০০ বছরের বেশি আগে নির্মিত হয়েছিল। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর সম্পত্তিটি সরকারি মালিকানায় চলে আসে। বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ জানিয়েছে, প্রায় একশো বছর আগের তৈরি ওই ভবনটি ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর সরকারি সম্পত্তিতে পরিণত হয়। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, বাড়িটি গত ১০ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে এবং সেখানে একটি "শিশু অ্যাকাডেমি" নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
ঢাকার তরফে এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, "বাড়িটি ১০ বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। বর্তমানে শিশু অ্যাকাডেমির একটি ভাড়া করা জায়গা থেকে পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়ে ভেঙে ফেলার কাজ চলছে।
ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি ভবন কেন ভেঙে ফেলা হচ্ছে জানতে চাইলে, কর্মকর্তা বলেন,শিশুদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে এই বাড়িটি ভেঙ্গে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে"।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিবাদের পর সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক সম্পত্তি মেরামত ও পুনর্নির্মাণে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে ভারত। এক বিবৃতিতে বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, “বাংলা সাংস্কৃতিক নবজাগরণের প্রতীক এই ভবনের ঐতিহাসিক মর্যাদা বিবেচনা করে, এই ভবনের ভেঙে ফেলার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হোক। ভারত ও বাংলাদেশের অভিন্ন সংস্কৃতির প্রতীক হিসেবে এই ভবনের মেরামত ও পুনর্গঠনের বিকল্প ভাবনা ভাবা হবে তা দু'দেশের পক্ষেই ভালো। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, ভারত সরকার এই উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে সবরকল সহযোগিতা প্রদান করতে প্রস্তুত।