ED Officials attacked at Sandrshkhali: গত শুক্রবার সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন ইডি অফিসাররা। মাথা ফেটেছিল ৩জন ইডি আধিকারিকদের। হামলাকারীদের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। রীতিমতো দৌড় করানো হয়েছিল ইডি আধিকারিকদের। ওই ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল বিভিন্ন মহল থেকে। যদিও তৃণমূলের তরফে ওই ঘটনার দায় চাপানো হয়েছে ইডি-র ঘাড়েই।
এখনও খোঁজ মেলেনি ইডি আধিকারিক হামলায় অভিযুক্ত সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের। তিনি কি এখন বাংলাদেশে? না এখানেই আত্মগোপন করে আছেন? তাঁকে হন্যে হয়ে খুঁজছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এদিকে সন্দেশখালির ভাইয়ের উত্থান নিয়ে নানা কাহিনী সামনে এসেছে। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর বিস্তার লাভ করেছে ভাইয়ের সাম্রাজ্য। কিন্তু বামফ্রন্ট আমলে কিভাবে উত্থানের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় দুই বর্ষীয়ান প্রবীণ সিপিএম নেতা সেই কাহিনী শুনিয়েছেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে।
আরও পড়ুন- সন্দেশখালির ফেরার ‘ভাই’ শাহজাহানের সাঁড়াশি চাপ! দল ও প্রশাসনের কী পদক্ষেপ?
সিপিএমের কোনও পদে ছিলেন না শাহজাহান শেখ। দলের মিটিং, মিছিলে সামনের সারিতে যাতে শাহজাহান না থাকে সে ব্যাপারেও খেয়াল রাখত সিপিএম নেতৃত্ব। তবু সিপিএমের একাংশের হাত ছিল সাহজাহানের মাথায়। তাই পুলিশি ঝামেলায় পড়তে হয়নি শাহজাহানকে। এমনই অভিমত দলের একাংশের। নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে তৃণমূল জমানায় সাম্রাজ্য বিস্তার করতে পেরেছেন অনায়াসে।
ওই প্রবীণ বামনেতার কথায়, 'মোসলেম শেখের জলকরে কাজ করত শাহজাহান। সেখানে এমন পরিস্থিতি তৈরি করে শাহজাহান, যার ফলে ১৫-২০ বিঘে জমি তাঁকে দেওয়া হয়। সেই ব্যাবসার সূত্রপাত। এলাকায় হিন্দুস্থান কম্পানি একটি হ্যাচারি করেছিল। শেষমেশ তাঁরাও তার ভয়ে জিনিসপত্র রেখে পালিয়ে যায়। সেখানেও ফায়দা লুটেছে।'
সিপিএমের ওই বর্ষীয়াণ নেতা বলেন, 'পুলিশ সেই সময় নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে শাহজাহান শেখকে খুঁজতে থাকে। তখন বাঁচাতে সিপিএমের জেলা থেকে রাজ্য নেতৃত্বকে ধরাধরি শরু করেছিল শাহজাহান। শেষমেশ জোনাল কমিটির সম্পাদক সুবোধ দের দ্বারস্থ হয়েছিল সে। দলীয় সদস্য ও পঞ্চায়েত মেম্বার মোসলেম শেখের ঘনিষ্ঠ ছিল শাহজাহান।'
আরও পড়ুন- বয়সসীমা বিতর্কে আরও ইন্ধন মমতার, গঙ্গাসাগর থেকে তৃণমূল ‘সেনাপতি’কে বড় বার্তা
সিপিমের ওই নেতার দাবি, 'নিজেকে পুলিশি হয়রানি থেকে বাঁচতে সুবোধ দের হাত ধরে শাহজাহান বলেছিল, আমাকে ক্ষমা করে দেওয়া হোক। আমি আর অপরাধ করব না। তাই পুলিশি হয়রানি থেকে রক্ষা পেয়েছিল শাহজাহান। এমনকী সে ২০০৮-এ গ্রাম পঞ্চায়েতের টিকিট চেয়েছিল। পার্টি দেয়নি। তারপর শাহজাহান তৃণমূল শিবির গা ভাসিয়ে দেয়। এই এলাকায় বহু গ্রাম পঞ্চায়েত আসনে বামেরা সেবার হেরে গিয়েছিল।'
সন্দেশখালির সিপিএম নেতার দাবি, 'শাহজাহান সিপিএমের সদস্য কখনও ছিল না বা মিছিলের সামনের সারিতে ছিল না। কিন্তু পার্টির একাংশের প্রচ্ছন্ন সমর্থন যে ছিল তা স্বীকার করেছেন ওই বর্ষীয়াণ নেতা। ওই নেতার দাবি, যেখানে এখন শাহজাহানের বাজার তা ছিল রাম মণ্ডলের পরিবারের।' তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার রাম মণ্ডলের পরিবারকে ৩ বিঘের পাট্টা দিয়েছিল বলেই তাঁর দাবি। এভাবে খড়ের চালার বাড়িতে থাকা, ট্রাক্টরের হেল্পার শাহজাহান শেখ এখন সন্দেশখালির 'ভাই'। একেবারে ইতিহাস।
আরও পড়ুন- তৃণমূলের কুণাল ঘোষ কেমন? এজলাসে বসে বললেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়