Suvendu Adhikari News: চলতি সপ্তাহেই বঙ্গ সফরে এসে রাজনৈতিক পরিবর্তনের ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার আলিপুরদুয়ারে এক জনসভা থেকে মোদী রাজ্যের বর্তমান শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানান। তিনি অভিযোগ করেন, "পশ্চিমবঙ্গের শাসনব্যবস্থা এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে, যেখানে বিচার বিভাগকে প্রায়শই হস্তক্ষেপ করতে হচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্বেগজনক। মোদীর মন্তব্য, “সুস্থ শাসনব্যবস্থায় আদালতের এত ঘন হস্তক্ষেপ প্রয়োজন হয় না। বর্তমান তৃণমূল সরকার রাজ্যবাসীর উন্নয়নের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
এই পরিস্থিতিতে ‘পরিবর্তন’-এর ডাক তুলে বিজেপি আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করছে। এরপরই শনিবার বিজেপি-র রাজ্য বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন ২০২৬ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি জয়ের সম্ভাব্য ভোট সমীকরণ। শুভেন্দুর দাবি, “পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু ভোটারদের ৬৮ শতাংশ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। এই ভোট শতাংশ আরও কিছুটা বাড়লেই বিজেপির পক্ষে ২০২৬ সালে অনায়াসে জয় পাওয়া সম্ভব।”
“বাংলার মাটি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির মাটি, তাই বিজেপি না এলে জয় পূর্ণ হবে না”— এমনই বার্তা দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দেশের নানা প্রান্তে বিজেপির ধারাবাহিক জয়ের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাংলায় পদ্ম না ফুটলে সেই জয়ের পরিপূর্ণতা আসবে না।”এই মন্তব্যের মধ্যেই আজ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আসছেন বঙ্গ সফর। তার আগে ফের একবার শুভেন্দু ২৬- এর নির্বাচনে বিজেপির জয় নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিলেন।
হিন্দু ভোটারদের প্রতি বার্তা
শুভেন্দু আরও বলেন, “যদি হিন্দুরা ৮০ শতাংশ ভোটকেন্দ্রে যায়, তাহলে বাংলার এই রাজনৈতিক ‘জঞ্জাল’ দূর করা সম্ভব। মোদীজির নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় এলে বাংলার প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব হবে। এখন যেটা চলছে তা দুর্নীতি, তোষণ আর সন্ত্রাসের শাসন।” তিনি আরও যোগ করেন, “বাংলায় যে পরিবর্তনের বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে, তাতে ২০২৬ সালে বিজেপির উত্থান অবশ্যম্ভাবী। জনগণ এবার বুঝে গেছে, কে উন্নয়নের কথা বলে আর কে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করে।”
অপারেশন সিঁদুর নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে পুনের আইনি ছাত্রী শর্মিষ্ঠা পানোলিকে কলকাতা পুলিশ গ্রেপ্তার করায় রাজ্য সরকারের তীব্র সমালোচনা করলেন বিজেপি বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিরুদ্ধেই কি ব্যবস্থা নেওয়া হবে? মহুয়া মৈত্র, সায়নী ঘোষ বা ফিরহাদ হাকিমের বিরুদ্ধে এত এফআইআর হলেও তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ হয়নি কেন?”
বিজেপি নেতার অভিযোগ, “মহুয়া মৈত্র মা কালী সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে ২০০টির বেশি এফআইআর হয়েছে, কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অন্যদিকে শর্মিষ্ঠার বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। এটা তুষ্টিকরণের রাজনীতি।”
গ্রেপ্তারের পিছনের ঘটনা
শুক্রবার রাতে ২২ বছর বয়সী আইন ছাত্রী শর্মিষ্ঠা পানোলিকে গুরুগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে কলকাতা পুলিশ। তিনি ইনস্টাগ্রামে অপারেশন সিঁদুর নিয়ে একটি পোস্টে আপত্তিকর ভাষা ব্যবহার করেছিলেন বলে অভিযোগ।
পরবর্তীতে তিনি ইনস্টাগ্রাম ও এক্স (টুইটার)-এ প্রকাশ্যে ক্ষমা চান এবং পোস্টটি মুছে ফেলেন। তবুও তাঁকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় আনা হয় এবং আজ আলিপুর সিজেএম আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতের আবেদন খারিজ করে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয় ১৩ জুন পর্যন্ত।