ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির একটা বড় অংশের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে উত্তরবঙ্গ। বাংলার এই প্রান্তে একগুচ্ছ এমন নজরকাড়া-অপূর্ব পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে, যেখানে একবার গেলে মনে হবে ফিরে যাই বারবার। বিশ্বের যে কোনও নামজাদা ট্যুরিস্ট স্পটকেও বলে-বলে ১০ গোল দিতে পারে উত্তরবঙ্গের পাহাড়-কোলে ঘুমিয়ে থাকা এমনই অনেক জায়গা। এই প্রতিবেদনেও তেমনই অসাধারণ একটি বেড়ানোর জায়গার হদিশ মিলবে। ব্যস্ত জীবন থেকে দিন কয়েকের জন্য প্রাণভরে স্বস্তি নিতে উত্তরবঙ্গ ঘেঁষা পড়শি রাজ্য সিকিমের এই অনিন্দ্যসুন্দর এই তল্লাটের জুড়ি মেলা ভার।
Advertisment
উত্তরবঙ্গ লাগোয়া পূর্ব সিকিমের এমনই একটি অফবিট ট্যুরিস্ট স্পট হল রোলেপ। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং ছেড়ে এই অফবিট স্পটে দিন দিন ভিড় বাড়ছে পর্যটকদের। চারদিকে পাহাড়ঘেরা সবুজে সবুজ এই ছোট্ট জনপদ এককথায় অসাধারণ। রোলেপ গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে চলেছে খরস্রোতা রংপোখোলা নদী। পাহাড়ি আঁকা-বাঁকা পথ বেয়ে তড়তড়িয়ে বয়ে চলা নদীর শোভা ভাষায় ব্যক্ত করা কঠিন। আলো-আঁধারি মায়াবী পরিবেশে নদীর ধারে বসেই কেটে যায় সারা বেলা।
এই রংপোখোলা নদীকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে রোলেপ পর্যটন কেন্দ্র। এখানকার সুদৃশ ঝুলন্ত সেতু দেখতেই পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। যাঁরা গিয়েছেন তাঁরা বলছেন, দিন কয়েক সব ভুলে প্রাণের স্বস্তি পেতে হলে পূর্ব সিকিমের এই প্রান্ত একেবারে পারফেক্ট চয়েজ। এখানকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ হল বুদ্ধ জলপ্রপাত। নদীর পাড় ধরে হেঁটে গেলেই সুউচ্চ পাহাড়ের উপর থেকে ঝরে পড়তে দেখা যাবে জলরাশি। ঝর্নার পাড়ে বসেই মন্ত্রমুগ্ধ করা পরিবেশ আপনাকে আরও যেন সতেজ করে তুলবেই। চারিদিকের পরিবেশের মায়াবী ভাবনায় রূপকথার দেশে পাড়ি দেওয়ার স্বাদ হবে।
মোটের উপর দিন কয়েকের সফর জীবনভর স্মৃতির পাতায় সোনালী অক্ষরে লেখা হয়ে রয়ে যাবে। বছরের যে কোনও সময়ে মন চাইলেই চলে যেতে পারেন রোলেপে। এখানর চিত্তাকর্ষক প্রাকৃতিক শোভা মনের গ্লানি এক পলকেই ঘুঁচিয়ে দিতে পারে।
কীভাবে যাবেন রোলেপ?
কলকাতার দিক থেকে রেলপথে গেলে আপনাকে নেমে পড়তে হবে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে। সেখান থেকে গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারেন পাহাড় কোলে ঘুমিয়ে থাকা পূর্ব সিকিমের ছোট্ট জনপদ রোলেপ গ্রামে।
থাকার জন্য পাহাড়ের কোলে মনভোলানো পরিবেশে একাধিক হোম স্টে পেয়ে যাবেন। সেখানে থাকা-খাওয়া বাবদ খরচ ধরে নেওয়া হয়। বেশ কিছু হোম স্টে-তে পেয়ে যাবেন ওয়াই-ফাইয়ের সুবিধাও। খাওয়া-দাওয়া মিলিয়ে হোম স্টে-গুলিতে খরচ ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকার কাছাকাছি।