/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/13/cats-2025-08-13-18-09-05.jpg)
সিঙ্গুরের সভায় শুভেন্দু অধিকারী
Suvendu Adhikari: সিঙ্গুর নিয়ে ফের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তীব্র আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার সিঙ্গুরের রতনপুর মোড়ে ন্যায্য় মূল্যে আলুর দাম না পাওয়ার অভিযোগে কিষান মোর্চার ডাকে আয়োজিত এক সভায় তিনি অভিযোগ করেন, “সিঙ্গুরের সর্বনাশ করেছেন মমতা। টাটার কারখানা ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে দিতে হয়েছে। শিল্প হয়নি, কৃষিও হয়নি, মাছ চাষও হয়নি। জমির চরিত্রই বদলে গেছে।”
শুভেন্দুর দাবি, গায়ের জোরে সিঙ্গুরে কিছু করতে ব্যর্থ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি টাটাদের ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “মাত্র ৭৬৬ কোটিতে ফয়সালা করে দয়া করেছিলেন রতন টাটা। আমি হলে দু হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাইতাম।”
স্বাধীনতা দিবসের মুখে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে জঙ্গি হামলার হুমকি, হুলস্থূল ফেলা কান্ডে তুমুল আতঙ্ক
শুভেন্দু অভিযোগ করেন, "শুধু কারখানা নয়, সিঙ্গুরের জমিও নষ্ট হয়েছে। তিনি আরও বলেন, “শুধু রোহিঙ্গাদের তাড়ালেই হবে না, তৃণমূল কংগ্রেসকেও বাংলা থেকে তাড়াতে হবে। নির্বাচন কমিশন রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলমানদের তাড়াবে, কিন্তু আপনাদের তাড়াতে হবে তৃণমূলকে।” হুঙ্কার বিরোধী দলনেতার।
বিজেপি নেতা অভিযোগ করেন, কৃষকরা ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এলে নারী সুরক্ষার পাশাপাশি কৃষকদের অধিকারকে গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন বিরোধী দলনেতা।
তাঁর দাবি, বিজেপি ইতিমধ্যেই অন্যান্য রাজ্যে সংকল্পপত্রে যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা ইতিমধ্যেই তারা পূরণ করেছে। শুভেন্দু অভিযোগ করেন, রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের দুটি মূল লক্ষ্য—মুসলিম ভোটব্যাংক ধরে রাখা ও রোহিঙ্গাদের ঢোকানো, আর ভোটের আগে সামান্য ভাতা বিতরণ করে মানুষকে প্রভাবিত করা।
তিনি অভিযোগ করেন, রাজ্য সরকার কৃষকদের ন্যায্য দাম দিচ্ছে না। রাজ্যের ৩৩ লক্ষ হিন্দু কৃষক পরিবার পিএম কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্রেফ রাজ্য সরকার তালিকা না দেওয়ার কারণে, তাদের অধিকাংশই হিন্দু বলে তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে তোপ শুভেন্দুর।
১৭ বছর আগে ২০০৮-এর আগস্ট মাসেই কৃষি জমি রক্ষার দাবিতে সিঙ্গুরে ধরনামঞ্চ করেছিলেন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী তথা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। আর এ যেন ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি! এদিন আলুচাষীদের প্রতি মমতা সরকারের বঞ্চনার প্রতিবাদে এক্সপ্রেস ওয়ের কাছেই সিঙ্গুর রতনপুর এলাকায় অবস্থান বিক্ষোভ করলো রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির কিষান সেল। উপস্থিত বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এখানকার কৃষকদের অন্নদাতা, ভগবান বলে সম্বোধন করে রাজ্য সরকার চাষীদের বিশেষ করে আলুচাষীদের সর্বনাশ করছে বলে দাবি তুললেন।
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে নিজের দাবির সপক্ষে তিনি একটা সার্কুলারের কপি দেখিয়ে বলেন,"চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে, ১৫ টাকা কিলো দরে আলুচাষীদের কাছ থেকে ২ কোটি ২০ লক্ষ বস্তা আলু কিনবে বলে সার্কুলার জারি করেছিল। এগ্রিকালচার মার্কেটিং ডিপার্টমেন্ট থেকে এই সার্কুলার জারি করা হয়। কে করে?এখানকার ডাকাত বেচারাম মান্না (সিঙ্গুরের বিধায়ক ও রাজ্যের কৃষি বিপনন মন্ত্রী)। সাবসিডি দিয়ে কিনবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। লোক দেখানো কয়েক হাজার বস্তা কিনে বন্ধ করে দিয়েছে। "
উল্লেখ্য এদিনের সভার কাউন্টার করার জন্য আগামীকাল বৃহস্পতিবার একই স্থানে তৃণমূল কংগ্রেস এর পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সভা হবে। যেখানে বেচারাম মান্না ও কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় থাকবেন। খবরটি গোচরে ছিল শুভেন্দুর। তাই তিনি সভাস্থল থেকেই আলুচাষীদের উদ্দেশ্যে বলেন, 'আগামীকাল বিজেপির পতাকা না রেখে আলুচাষীরা জিজ্ঞেস করবেন তো। কেন আলু কেনা বন্ধ করে দিল? আমি এই কপিটা দিয়ে যাবো এখানকার নেতা সঞ্জয় পান্ডেকে।
নাগরিকত্ব পাওয়ার আগেই ভোটার তালিকায় সনিয়া গান্ধীর নাম? রাহুলের 'পরমাণু বোমা'র পালটা 'মিসাইল' ছুঁড়ল বিজেপি
শুভেন্দু আরও বলেন, 'রতনপুরে ১২ টাকা কিলো আলু বিক্রি হচ্ছে। কৃষক পাচ্ছে সাড়ে ৮ টাকা। কোল্ড স্টোরেজ খরচ বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে কৃষক লস করছে প্রতি কেজিতে মিনিমাম ৩ টাকা। এর জন্য দায়ী চোর মমতা ও তার সরকার। এই সরকার কে আপনারা উৎখাত করবেন না? রাজ্যে আলু লাগে প্রায় ৬০ লক্ষ মেট্রিক টন। উৎপাদন হয় গোটা রাজ্য মিলিয়ে প্রায় ১.৪ কোটি মেট্রিক টন। দাম ওঠার পর উদ্বৃত্ত আলু চাষীরা পাঠান বাইরের রাজ্যে। দু' দুবার পুলিশ দিয়ে বর্ডার আটকে দিয়েছে। বাজার দখল করে নিয়েছে পাঞ্জাব আর উত্তরপ্রদেশে। কাজেই আলুচাষীরা যতই আলু প্রোডাকশন করুন বাইরের রাজ্য আর নেবে না। পার্মানেন্ট লি সর্বনাশ করেছে এই সরকার। তাই অবিলম্বে এই সরকার কে ২০২৬ এ তাড়াতে হবে। রোহিঙ্গা আর বাংলাদেশীদের ইলেকশন কমিশন তাড়াবে আপনাদের কাজ হলো এই সরকার টাকে তাড়ানো। এদিন সিঙ্গুর এ আসার সময় ডানকুনি টোলপ্লাজার কাছে কিছু মানুষ বিরোধী দলনেতাকে উদ্দেশ্য করে কালো পতাকা দেখায়। শুভেন্দু নিজেই সেকথা উল্লেখ করে জানান, ওসব দেখিয়ে কোনো লাভ নেই। দম থাকলে সামনে সামনে এসে দেখাবে।