Mushroom Farming: ১০০ দিনের কাজের টাকায় কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার শিকার রাজ্য। এমন পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে গ্রামীণ মহিলাদের স্বনির্ভর করতে একাধিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের তরফে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সিএডিসি প্রজেক্টের মাধ্যমে গ্রামীণ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের মাশরুম তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া চলছে। যাকে কেন্দ্র করে স্বনির্ভর হচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হাজার হাজার গ্রামীণ মহিলা।
ইতিমধ্যে জেলার প্রায় ছয় থেকে সাত হাজার গ্রামীণ মহিলা এই প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বনির্ভরতার মুখ দেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট সময়ে মাশরুম তৈরি করে আয়ের উৎস দেখছেন তারা। কোনও আচার অনুষ্ঠান কিংবা হোটেল-রেস্তোরাঁয় নিরামিষ খাদ্য তালিকায় মাশরুম হল অন্যতম উপকরণ। মাশরুম দিয়ে নানা ধরনের সুস্বাদু এমনকি পুষ্টি সম্পন্ন পদ রান্না করা হয়। তাই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য জুড়ে মাশরুমের চাহিদা ব্যাপক পরিমাণে রয়েছে বলা চলে। এমনকি রাজ্যের বাইরেও রপ্তানি করা হয় মাশরুম। ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সিএডিসি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে বহু গ্রামের মহিলা স্বনির্ভর হয়েছেন।
মূলত গ্রাম বাংলার মহিলারা বাড়িতেই খড় এবং মাশরুমের বীজ দিয়ে অল্প খরচে তৈরি করছেন এই মাশরুম। অক্টোবর মাস থেকে শুরু করা হয় মাশরুমের বেড তৈরির কাজ। চলে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। প্রথমে খড় কেটে চুন জলে ডুবিয়ে রাখা হয় সারা রাত। এরপর খড় তুলে রোদে শুকনো করার পর তা বেডে লাগানো হয়। সেখানেই মাশরুমের বীজ দিয়ে তৈরি করা হয় মাশরুম। চাল কিংবা গম দিয়ে এই মাশরুম তৈরি হয়। এক একটি বেড তৈরির জন্য খরচ হয় ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। এক একটি বেডে মাশরুম উৎপাদন হয় এক থেকে দেড় কেজি। এক একটি বেডে ৩৫ টাকা খরচ করে ইনকাম হয় ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
আরও পড়ুন- West Bengal News Highlights: বাংলাদেশের উপদূতাবাসে 'হামলা', ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে জরুরি তলব ইউনুস সরকারের
ইতিমধ্যে তমলুক, শহীদ মাতঙ্গিনী, রামনগর, মহিষাদল সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একাধিক ব্লকে এই প্রশিক্ষণে বিশেষ সাড়া মিলেছে। ফলে এক প্রকার এই মাশরুম থেকে এক একজন মহিলা গড়ে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা ইনকাম করেন মরসুমে। গত চার বছর আগে সিএডিসি প্রকল্পের মাধ্যমে মাশরুম চাষের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন রিঙ্কু জানা। তা থেকে আজ স্বনির্ভর হয়েছেন তিনি। রিঙ্কু বলেন, “আমি চার বছর আগে তমলুকে এই প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। গত বছর আমি একশটি বেড তৈরি করেছিলাম। এ বছর আমার দেড়শটি বেড তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে। এক একটি বেড তৈরি করতে ৩৫ টাকা খরচ পড়ে। একটি বেডে যা মাশরুম উৎপাদন হয় তাতে ৩০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। নিজের স্বনির্ভর হতে পেরে ভালই লাগছে।”
আরও পড়ুন- West Bengal Potato Traders Strike: রাজ্যের ক্রমাগত চাপেই কাজ, ধর্মঘট তুলে নিল প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি
তমলুকের সিএডিসি প্রজেক্টের ডেপুটি প্রজেক্ট অফিসার উত্তম কুমার লাহা বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে ৬ থেকে ৭ হাজার গ্রামীণ মহিলাকে এই প্রশিক্ষণ দিয়েছি। ১০০ দিনের কাজ না থাকায় সেই পরিমাণ অর্থ গ্রামীণ মহিলারা এই মাশরুম চাষ করে ইনকাম করতে পারছেন। এক একজন মহিলা মাসে ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা রোজগার করতে পারবেন। খুবই স্বল্প মূল্যে মাশরুম তৈরি করে তা বাজারে ভালো দামে বিক্রি করা যায়। বর্তমানে এই মাশরুমের চাহিদাও রয়েছে বিশেষ।”
আরও পড়ুন- Kolkata Metro: 'বেয়াড়া' যাত্রীদের 'শবক' শেখাতে কড়া পদক্ষেপ কলকাতা মেট্রোর