Jawhar Sircar Resigns: আরজি কর কাণ্ড থেকে শুরু করে একের পর এক দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে এবার তৃণমূলের সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা জহর সরকারের। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাসংদ ছিলেন কেন্দ্রের একদা শীর্ষস্থানীয় এই আমলা। চিকিৎসক ধর্ষণ-খুন কাণ্ড নিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্যের শাসকদল যারপরনাই অস্বস্তিতে রয়েছে। ঠিক এই আবহে জহর সরকারের মতো বর্ষীয়ান সাংসদের দলত্যাগ-ইস্তফা জোড়াফুলকে আরও বড় অস্বস্তিতে ফেলেছে। জহর সরকারের এই সিদ্ধান্তে তৃণমূলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। মুখ খুলেছেন কুণাল ঘোষ, সৌগত রায়দের মতো নেতারা।
কুণাল ঘোষ মনে করেন, জহর সরকার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাঁর সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনও সমালোচনার পথে হাঁটেননি এই তৃণমূল নেতা। বরং আরজি কর কাণ্ডের জেরে উদ্ভূত পরিস্থিতির আবহে দলে শুদ্ধিকরণ, সংশোধনের কথা শোনা গেল কুণাল ঘোষের মুখে।
কী বললেন কুণাল ঘোষ?
"জহর সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছি না। উনি যে উদ্বেগগুলি প্রকাশ করেছেন বা ওঁর যে পর্যবেক্ষণ রয়েছে তার কিছু বিষয়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করছি না। জহরদা তাঁর মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেই স্বাধীনতা ওঁর আছে। যে ঘটনাই ঘটুক আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দলের মঞ্চ থেকে এই লড়াইটা চালাচ্ছি। কোথাও কোনও ভুল-ত্রুটি হলে ও তার সংশোধনের প্রয়োজন হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদক্ষেপে তা হবে।"
তিনি আরও বলেন, "সাধারণ মানুষের একাংশের মধ্যে যে বিরক্তি, উষ্মা বা প্রশ্ন তৈরি হয়েছে এগুলো দলের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে ন্যায় বিচারের দাবি জানাচ্ছি। যেখানে যে সংশোধন প্রয়োজন, সেটা দলের মধ্যে থেকেই দলকে বোঝাবার চেষ্টা করছি।"
এদিকে, জহর সরকারের রাজ্যসভার সাংসদ পদে ইস্তফার বিষয়টিকে একেবারেই মেনে নিতে পারেননি বর্ষীয়ান তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। বরং জহর সরকারকে 'ব্যক্তিকেন্দ্রিক' বলেও কটাক্ষ ছুঁড়ে দিয়েছেন প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ।
আরও পড়ুন- RG Kar Case-TMC:'রাজ্যকে বাঁচাতে কিছু একটা করুন', মমতাকে চিঠি দিয়ে সাংসদ পদ ছাড়লেন জহর সরকার
জহর সরকারের ইস্তফা ইস্যুতে কী বললেন সৌগত রায়?
একটি সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, "দলের প্রতি কোনও কমিটমেন্ট নেই। পাবলিকের সঙ্গেও কোনও যোগাযোগ নেই। উনি কোনওদিন মিছিলে হাঁটেননি। আমাদের নেত্রী ভালো কাজ করবেন বলে অনেক ক্ষেত্র থেকেই অনেককে নিয়ে আসেন। এদের কেউ কেউ ব্যক্তিকেন্দ্রিক, শুধু নিজেরটা ভাবেন। কোনও বিরুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলেই পালিয়ে যেতে চান, আর দলকে অস্বস্তিতে ফেলতে চান।"
আরও পড়ুন- Avik Dey: মাথায় ছিল সন্দীপের 'হাত', বর্ধমান মেডিক্যালে অভীকের 'কীর্তি' জানলে চমকে যাবেন!
উল্লেখ্য, আরজি কর কাণ্ড থেকে শুরু করে একের পর এক দুর্নীতির প্রতিবাদ জানিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ পদ থেকে ইস্তফার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন জহর সরকার। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে তিনি তাঁর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই নয় রাজনীতি থেকেও তিনি সরে আসতে চান বলে জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন- Eastern Rail: যাত্রীদের সুবিধার্থে অভূতপূর্ব তৎপরতা রেলের! যুগান্তকারী উদ্যোগ দুরন্ত চর্চায়
চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জহর সরকার লিখেছেন, "গত এক মাস ধরে আরজি কর হাসপাতালে বিভিন্ন ঘটনার বিরুদ্ধে সবার প্রতিক্রিয়া আমি দেখেছি। আপনি কেন সেই পুরনো মমতা ব্যানার্জির মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে সরাসরি জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলছেন না। এখন সরকার যেসব শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করছে তা এককথায় অতি সামান্য। বড্ড দেরি হয়ে গেছে। মানুষ অরাজনৈতিক এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। রাজনৈতিক তকমা লাগিয়ে দিয়ে আন্দোলনকে প্রতিরোধ করা ঠিক কাজ হবে না।"