Advertisment

'সেতুটা যেন খড়কুটোর মতো ভেসে গেল', ভাইপো-ভাগ্নেদের নিয়ে সিকিমে অতান্তরে বাঙালি যুবক!

ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে সিকিমে বহু মানুষের মৃত্যুর খবর পর্যন্ত মিলেছে, একশোরও বেশি মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

author-image
Joyprakash Das
New Update
tourists are stuck in various parts of Sikkim administration is having trouble rescuing them

মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে তছনছ সিকিমের বিস্তীর্ণ প্রান্ত।

একই পরিবারের ৫ জন সদস্য রবিবার গিয়েছিলেন সিকিমের আপার ইয়াং ইয়াং-এ। প্রথমবারের ভ্রমণে ভাবনা ছিল সেখানে কাজ করবেন, পাশাপাশি ১৫ দিন সেখানে থেকে ঘোরাঘুরিও করবেন। কিন্তু বাধ সাধল প্রাকৃতিক দুর্যোগ। রথ-দেখা আর কলা-বেচার পরিকল্পনা মাথায় উঠেছে। লাটে উঠেছে ঘোরাঘুরি। বাড়ি ফিরবেন কীভাবে সেই দুশ্চিন্তায় ঘুম উড়েছে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির বারোগড়িয়া অঞ্চলের দামবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা শ্রীকান্ত রায়ের।

Advertisment

সিকিমে গিয়ে বেজায় পাঁপড়ে পড়েছেন ধূপগুড়ির শ্রীকান্ত রায়। আটকে তো পড়েছেনই এখন খাওয়া-দাওয়া নিয়েও যারপরনাই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সিকিমের আপার ইয়াং ইয়াং থেকে মোবাইল ফোনে শ্রীকান্ত রায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'সেদিন মেঘফাটা বৃষ্টি, জলের তোড়ে রাস্তার একের পর এক সেতু ভেঙে যাওয়ায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম। এখন কোনওরকমে শিলিগুড়ি ফিরতে পারলেই হল। বলছে দার্জিলিং হয়ে ফিরতে হবে। আসার সময় শেয়ার গাড়িতে মাত্র ২ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। এখন ওই একই গাড়ি বলছে ১৫ হাজার টাকা লাগবে। কোথায় পাব এত টাকা? ১০ জন হলে ১৫০০ টাকা করে হত। কিন্তু লোক কোথা থেকে জোগাড় করব? অন্য সময় হলে ৪ হাজার টাকা লাগতো।'

আরও পড়ুন- প্রকৃতির রোষে তছনছ সিকিম, আটকে পড়া পর্যটকদের উদ্ধারে যুগান্তকারী ভাবনা প্রশাসনের!

এর আগে কখনও সিকিমে যাননি শ্রীকান্ত। এবার তাঁর সঙ্গে গিয়েছে ১৮ বছরের ভাই বাপি রায়, ৩৫ বছরের ভাইপো কমল রায় ও বছর ১৭-এর দুই ভাগ্নে। শ্রীকান্ত বলেন, 'আমরা পরিকল্পনা করে এসেছিলাম এখানে কাজ করব, একই সঙ্গে ১৫ দিন ঘুরব। রবিবার এসেছি। আসার সময় থেকে বৃষ্টি হচ্ছিল। তারপর এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর বাড়ি ফিরে যাওয়া ছাড়া কিছু ভাবছি না। কোনওরকমে আলুসিদ্ধ ভাত জুটে যাচ্ছে। কোনও সবজিও নেই।'

আরও পড়ুন- ‘অভিষেকের ভয়ে পালাচ্ছেন রাজ্যপাল’, মন্ত্রীর গলায় একথা শুনেই সটান জবাব বোসেরও!

পেশায় প্রাইভেট টিউশন পড়ান বছর ২৯-এর শ্রীকান্ত। বাড়ি থেকে প্রায় ২৩০ কিলোমিটার দূরে রয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, 'আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি কীভাবে বাড়ি ফিরব তা ভেবে। যেখানে-সেখানে ধ্বস নামতে পারে। ধ্বস নামলে কী হবে? সেই আতঙ্ক আছে। বাড়িতে স্ত্রী, ছোট ছেলে, বাবা-মা আছেন। এই পরিস্থিতিতে আছি স্ত্রীকে এখনও জানাইনি।' তিনি আরও জানান, তাঁর সঙ্গে তাঁর বাবার কথা হয়েছে। তবে ভাই-ভাইপো-ভাগ্নেদের নিয়ে কীভাবে বাড়ি ফিরবেন তা ভেবেই পাচ্ছেন না যুবক।

Jalpaiguri West Bengal Flood Situation Sikim
Advertisment