Sukanta Majumder: গতকাল রাতভর লালবাজারের লক আপে কাটিয়ে দীর্ঘ ১৪ ঘণ্টা পর অবশেষে মুক্তি পেলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ ৩২ জন। বাইরে বেরোতেই ফুলের মালা পরিয়ে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান বিজেপি কর্মী সমর্থকরা। এদিন ফের রাজ্যে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে সুকান্ত বলেন, "রাজ্যে গনতন্ত্র বলে কিছু নেই। গনতন্ত্রের বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। কসবা গণধর্ষণের ঘটনা কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বাংলা জুড়ে লাগাতার মা-বোনদের উপর চলছে নির্যাতন। আট মাসের ব্যবধানে আরজি কর ও কসবা কান্ড চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে প্রশাসনের ব্যর্থতাকে। গতকালের প্রতিবাদ মিছিল থেকে কেন গ্রেফতারি, তার কোন সদুত্তর দিতে পারেনি পুলিশ। আমরা আমাদের দাবিতে অনড় ছিলাম। পুলিশকে আমাদের দাবির সামনে আরও একবার মাথানত করতে হল।' পাশাপাশি জামিন প্রত্যাখ্যান আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
উল্লেখ্য, কসবা কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমে গতকাল আটক হন বিজেপি রাজ্যে সভাপতি সুকান্ত মজুমদার সহ একাধিক বিজেপি নেতা কর্মীরা। এরই প্রতিবাদে লালবাজারের সামনে রাতভর চলে অবস্থান বিক্ষোভ। তাতে সামিল হন কলকাতা পুরসভা বিজেপি কাউন্সিলরা। বিক্ষোভের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে জেলায় জেলায়। বালুরঘাট, বর্ধমান থেকে বাঁকুড়া, হাওড়া সর্বত্র একই ছবি ধরা পড়ে। বারেবারে প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে গ্রেফতারির প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, "এই মাসে প্রায় চার বার রাস্তা থেকে তুলে লাল বাজারে রাখছে তারপর বেল বন্ডে সই করিয়ে ছাড়ছে। আমি আজ সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমি বেল বন্ডে সই করব না। তাতে যদি আমাকে রাতভর লকআপে থাকতে হয় থাকব। বাংলার মেয়েদের প্রতি যে অন্যায় অবিচার, ইজ্জত লুট হচ্ছে হচ্ছে তার বিরুদ্ধে একটা জোরালো প্রতিবাদ হওয়া দরকার। বাংলার মেয়েদের সম্মান নিয়ে এভাবে ছিনিমিনি খেলা যাবে না। তাতে রাতভর জেলে থাকতে হলেও আমি থাকব"।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আরও বলেন, "প্রতিবাদ করার জন্য আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এর পরে, পুলিশ আমাকে বলেছিল যে আমি জামিনে স্বাক্ষর করলে তারা আমাকে মুক্তি দেবে, কিন্তু আমি স্বাক্ষর করতে অস্বীকার জানাই। যখন সরকারের পুলিশ ঘুমিয়ে থাকে, তখন কাউকে না কাউকে জাগতেই হবে। বিজেপি এটা করছে। বাংলার জন্য যদি আমাকে হাজার বার গ্রেপ্তার হতে হয়, আমি তার জন্য প্রস্তুত।"
কসবায় নামী আইন কলেজে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় তদন্তে গতি আনতে পাঁচ সদস্যের বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করল কলকাতা পুলিশ। এই SIT-র নেতৃত্বে রয়েছেন এসএসডি-র সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রদীপ ঘোষাল। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রমাণ সংগ্রহে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে তদন্তকারী দলকে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মধ্যে একজন কলেজের নিরাপত্তারক্ষী। বাকি তিন জন ঘটনায় জড়িত। ইতিমধ্যে কসবা কাণ্ডে সামনে এসেছে CCTV ফুটেজ ও মেডিকেল রিপোর্ট। গতকালই কসবায় ল'কলেজে ঘটনার পুনঃনির্মাণ করে পুলিশ।