Sukanta Majumder On Maheshtala Incident:গতকাল হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দক্ষিণ ২৪ পরগনার মহেশতলার রবীন্দ্রনগর থানা এলাকা। দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা অঞ্চল। স্থানীয় সূত্রে খবর, একটি দোকান বসাকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশকে সেই সংঘর্ষ থামাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছে। পরিস্থিতি এক সময় এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে, পুলিশের উপস্থিতিতেই উন্মত্ত জনতা শুরু করে ইটবৃষ্টি। সংঘর্ষের জেরে আহত হয়েছেন অন্তত ৩০-৩৫ জন পুলিশকর্মী। একাধিক পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে, এমনকি কয়েকটি গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনাও ঘটেছে।
এই ঘটনার পরই মমতা সরকারের বিরুদ্ধে গর্জে উঠে হিন্দু সমাজকে ঐক্যবদ্ধ থাকার ডাক রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদারের। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ সুকান্ত মজুমদার লিখেছেন, "হিন্দুদের এখনই জেগে উঠতে হবে"। পাশাপাশি সংঘর্ষের ঘটনায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, “বাংলার হিন্দুদের এখনই ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। দেরি হলে শুধু জমি নয়, অস্তিত্ব হারানোর আশঙ্কা আছে। তোষণের রাজনীতি আর বরদাস্ত করা যাবে না।” সুকান্ত আরও বলেন, “মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় হিন্দুদের কী পরিস্থিতি, তা বোঝার জন্য এই ঘটনাগুলিই যথেষ্ট। প্রশাসন কার্যত নিস্ক্রিয়। পুলিশ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।” এদিকে আজ ১২ টায় ঘটনাস্থলে যাবে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
এদিকে গতকাল মহেশতলা কাণ্ডের জেরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আজ বৃহস্পতিবার বিধানসভা অচল করার ডাক দিয়েছেন। গতকাল সন্ধ্যায় ভবানীভবনের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন—“মহেশতলায় চরম নৈরাজ্যের ছবি ধরা পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এসি ঘরে বসে আছেন, রাজ্যের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পুলিশের ৩০- ৩৫ জন সদস্য আহত, ১২টি গাড়ি জ্বালানো হয়েছে”। শুভেন্দু আরও দাবি করেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হোক। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার বিরোধী দলনেতার সঙ্গে দেখা করতে অস্বীকার করায় তিনি ক্ষোভও প্রকাশ করেন।
সংঘর্ষ চলাকালীন রবীন্দ্রনগর থানার সামনে থাকা একাধিক বাইক ও পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে চলে ইটবৃষ্টি। জখম হন একাধিক পুলিশ অফিসার। ঘটনায় আতঙ্কিত এক মহিলা পুলিশ কনস্টেবল বলেন, “ওরা পাগলের মতো ইট ছুঁড়ছে। আমাদের মাত্র কয়েকজন পুলিশকর্মী, আমরা কিভাবে এত লোক সামলাব?” এদিন ঘটনার পর এক পুলিশ অফিসারের নাক ফেটে রক্ত ঝরতে দেখা যায়। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। থানা চত্বরে পুলিশের ব্যারিকেডও ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এখনও পর্যন্ত গতকালের ঘটনায় মোট ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।