Suvendu On Digha Jagannath Mandir: অক্ষয় তৃতীয়ার পুণ্য দিনে রাজ্যের সৈকতনগরী দিঘায় জগন্নাথ দেবের মন্দিরের উদ্বোধন। দিঘায় এখন সাজো সাজো রব। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। এর মাঝেই রাজ্য সরকারকে বেনজির আক্রমণ বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর।
রবিবার সাংবাদিক সম্মেলনে ফের একবার সরকারি টাকায় মন্দির নির্মাণ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতা বলেন,"সরকারি টাকায় মন্দির নির্মাণ করা যায় না। অফিসিয়ালি সকল নথিতে লেখা কালচারাল সেন্টার। আমন্ত্রণ পত্রে লেখা হয়েছে জগন্নাথ ধাম। প্রভু জগন্নাথও বিষয়টাকে ভালভাবে নিচ্ছেন না। তৃণমূল চাইলেও দীঘায় পুরী ধামের বিকল্প করতে পারবে না। একই সঙ্গে হুঙ্কার ছুঁড়ে শুভেন্দু বলেন, "পুরীর মন্দিরে সতাতনী ছাড়া কারুর প্রবেশ নিষিদ্ধ। বুধবার যদি হিন্দু ছাড়া অন্য কেউ জগন্নাথ মন্দিরে ঢোকে, আমি তার ছবি মার্ক করে আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়ব"।
উদ্বোধনের আগেই বিতর্ক মাথা চাড়া দিল দীঘার জগন্নাথ মন্দিরকে ঘিরে। শুভেন্দু এর আগে মমতাকে নিশানা করে বলেন, ‘জগন্নাথ ধাম সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র তৈরি করতে যত খরচ হয়েছে, উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ঠিক তত টাকাই খরচ করা হচ্ছে এবং উদ্বোধন অনুষ্ঠানের জন্য যাঁকে দরপত্র দেওয়া হয়েছে, তিনি মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলেও দাবি শুভেন্দুর। ১৯ তারিখ দরপত্র খোলার আগেই উদ্বোধনের যাবতীয় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে বলেও অভিযোগ।
আজ রবিবার ফের একবার দীঘার জগন্নাথ মন্দিরকে নিয়ে রাজ্যকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি বিরোধী দলনেতা। তিনি অভিযোগ করেন রাজ্যের তরফে পাঠানো আমন্ত্রণ পত্রে স্রেফ 'জগন্নাথ ধামে'র উল্লেখ রয়েছে। শুভেন্দু রাজ্যের কাছে 'জগন্নাথ ধাম মন্দির' লিখে আমন্ত্রণ পাঠানোর চ্যালেঞ্জও ছুঁড়েছেন।
পাশাপাশি পহেলগাঁও কাণ্ড নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিরোধী দলনেতা বলেন, "পহেলগাঁও হামলার বদলা দেশের সরকারকে নিতেও হবে। সকল ভারতবাসী হিসাবে আমাদের দাবি, পুলওয়ামা কাণ্ডে যেভাবে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক ঠিক একই ভাবে আরও একটা স্ট্রাইক চাইছে দেশবাসী। দেশবাসীকে একত্রিত থাকতে হবে। সব দল সরকারের পাশে আছে। পাক প্রধানমন্ত্রীর গতকালের বক্তব্য প্রমাণ করেছে ওরা ভয় পেয়ে গেছে। গোটা বিশ্ব এই ইস্যুতে ভারতের পাশে। ইরানও ভারতকে সমর্থন জানিয়েছে"।
শীর্ষ আদালতের নির্দেশে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং শিক্ষা কর্মচারী মিলিয়ে প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি চাকরিহারা শিক্ষকদের নতুন প্যানেল তৈরি না হওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। অর্থাৎ চলতি বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত যোগ্য শিক্ষকরা স্কুলে যাবেন এবং মাইনেও পাবেন। তবে শিক্ষা-কর্মীদের কাজ চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি শীর্ষ আদালত। সেই কারণেই এবার গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসে মাসে ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, গ্রুপ সি কর্মীরা প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ ডি কর্মীরা প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে পাবেন। সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী ২০১৬ সালে ২২ লক্ষ পরীক্ষার্থীকেও ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত বিতান অধিকারীর স্ত্রী'কে যেভাবে তৃণমূলের নেতাদের নিশানায় পড়তে হয়েছে তার তীব্র নিন্দা করে বিরোধী দলনেতা বলেন, " যেভাবে বিতান অধিকারীর স্ত্রীকে আক্রমণ করা হয়েছে সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। মাননীয়ার মদতে তার চাকর-বাকরা যেভাবে পরিবারকে আক্রমণ করেছে তা মানা যায় না"।
বাংলায় বেহাল শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, "বাংলায় কোন শিক্ষা ব্যবস্থাই নেই। যাদের টাকা পয়সা আছে তারা সকলে ইংরাজি মাধ্যমে ছেলেমেয়েদের পড়াচ্ছেন। মমতা সরকারের আমলে আট হাজার স্কুল বন্ধ, পঠন পাঠন, শিক্ষার পরিবেশ, শিক্ষক শব্দের মর্যাদা, মূল্যবোধ কোনটাই এরাজ্যে নেই"। মুর্শিদাবাদে সামশেরগঞ্জ, ধুলিয়ানে হিংসার ঘটনায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ৯টা মন্দির। অক্ষয় তৃতীয়ার দিন শুদ্ধিকরণের মাধ্যমে সেই সকল মন্দিরের পূর্ণনির্মাণের কাজ শুরু হবে বলেও জানান শুভেন্দু অধিকারী। হাইকোর্ট অনুমতি দিলে কাঁথির অনুষ্ঠানে থাকবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি। বাংলার ভ্রমণপ্রিয় পর্যটকদের উদ্দেশ্যে শুভেন্দুর বার্তা, "যেখানে হিন্দু জন সংখ্যা বেশি সেখানে বেড়াতে যান"। বিরোধী দলনেতা বলেন, "বেড়াতে গেলে হিমাচল, অন্ধ্র, উড়িষ্যা, মহারাষ্ট্র, বেনারস, অযোধ্যা ধামে যান"। বেড়াতে গেলেও নিজেকে বাঁচিয়ে বেড়াতে যাওয়ার পরামর্শ বিরোধী দলনেতার।