/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/05/COVER-PHOTO6.jpg)
চাহিদা বেড়েছে যাওয়ায় মাটির জগ, বোতল তৈরিতে ব্যস্ততাও বহু গুণে বেড়েছে। এক্সপ্রস ফটো: শশী ঘোষ।
চলতি মরশুমের অস্বাভাবিক গরম নিয়ে চিন্তিত পরিবেশ বিজ্ঞানী থেকে সাধারণ মানুষ। বৃক্ষ নিধনের জের হারে হারে টের পাচ্ছে সকলেই। এদিকে ক্রমশ বেড়েছে প্লাস্টিকের দ্রব্য ব্যবহার। এরই মধ্যে কিছুটা খুশির খবর, মাটির পাত্রের ব্যবহারও বেড়েছে অনেকটাই। মাটির কলসি, জগ, মটকার সঙ্গে মাটির জলের বোতলের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ। উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের চালতাবেড়িয়াতে কয়েক হাজার পরিবার মাটির পাত্র তৈরিতে বছরভর ব্যস্ত থাকেন। চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় গরমে তাঁদের ব্যস্ততাও আরও বেড়ে গিয়েছে।
একদল মাটি থেকে কাঁকড় পরিস্কার করে চলেছেন অনবরত। মাখা মাটি দিয়ে মাত্র দেড়-দু মিনিটেই তৈরি হয়ে যাচ্ছে জগ। তারপর তা রোদে দেওয়া হচ্ছে শোকানোর জন্য। আগুন পুড়িয়ে তা ব্যবহারযোগ্য করা হচ্ছে। তারপর চিত্রশিল্পীদের হাতের ছোঁয়ায় সেই বোতল থেকে মাটির পাত্র আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। এখান থেকে শুধু স্থানীয়ভাবে নয়, কন্টেনারে করে উৎপাদিত মাটির এসব সামগ্রী পৌঁছে যাচ্ছে দেশের নানা প্রান্তে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/05/INLINE-PHOTO-16.jpg)
করোনা আবহ থেকে মানুষের সচেতনতা কিছুটা হলেও বেড়েছে। ফ্রিজের অতিমাত্রায় ঠান্ডা জল যেন অনেকের কাছেই আতঙ্কের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার পরিণতিতে মাটির পাত্রের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। এবছরে অত্যাধিক গরম পড়তেই মাটির বোতল, জগ, কলসি বিক্রিও বেড়েছে।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/05/INLINE-PHOTO-27.jpg)
চালতাবেড়িয়ায় বারাসাত-বনঁগা যশোর রোডের পাশেই রয়েছে গোবিন্দ পালের মাটির পাত্রের দোকান। সেখানে রঙবেরঙের হরেকরকমের মাটির বোতল, জগ সাজানো রয়েছে। গোবিন্দ পাল বলেন, "এবছর গরমে মাটির বোতলের চাহিদা বেশ ভালই। বিশেষ করে একবার ব্যবহার করলে ফের ব্যবহার করছে। তা শুনে আরও পাঁচজন আসছেন। চাহিদার সঙ্গে উৎপাদন বাড়ছে। মাটির মটকা, কলসিরও চাহিদা আছে।" তাঁর কথায়, করোনার পর চাহিদা বেড়েছে। ফ্রিজের জল খেলে ভয় লাগত। তখন থেকেই মাটির জালা, বোতল বিক্রি বেড়েছে।
আরও পড়ুন- এগাঁয়ে হাত বাড়ালেই মেঘ ছোঁয়া যায়! চোখ খুললেই দেখা মেলে সুন্দরী কাঞ্চনজঙ্ঘার
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/05/INLINE-PHOTO-37.jpg)
চালতাবেড়িয়ায় মাটির জিনিস তৈরির কারখানা রয়েছে সবুজ পালদের পরিবারের। এখানে ১৪ জন কাজ করেন। বর্ষার পর থেকে কালীপুজোর সামগ্রী তৈরি হয়। এখন গরমের সময়ে মাটির জগ, বোতল তৈরির কাজে ব্যস্ত মৃতশিল্পীরা। সবুজ বলেন, "যত গরম পড়বে ততই চাহিদা বাড়বে। ফ্রিজের জল অনেকে খেতে চাইছেন না। প্লাস্টিকের বোতলের ব্যবহারও কমছে। মাটির জল ফ্রিজের থেকে ভাল, এই জলে স্বাদ রয়েছে। ১০ বছর ধরে জলের বোতল তৈরি করছি আমরা। ইদানিং চাহিদা বেড়েছে। মাটির বোতলে জল খেলে অন্য পাত্রে কেউ আর জল খেতে চাইবেন না। দিনে গড়ে ৩০০ মাটির বোতল তৈরি হয়। সব বিক্রি হয়ে যায়।"
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/05/INLINE-PHOTO-46.jpg)
চিত্রশিল্পী স্বপন চক্রবর্তী দীর্ঘ বছর ধরে মাটির বোতলে নানা ধরনের ছবি আঁকিবুকি করছেন। একনাগাড়ে কাজ করে চলেছেন ষাটোর্দ্ধ স্বপনবাবু। এই শিল্পী বলেন, "এখন কাজের চাপ প্রচুর। চাহিদা ব্যাপক। বাইরে বাইরে লটে লটে মাটির যাচ্ছে। গড়ে ৫০০ বা তার বেশি বোতল এখানে তৈরি হয়। মাটির পাত্রে জল অনেক্ষণ ঠান্ডা থাকে। আগে তো মাটির হাড়িতে কাঠে রান্না হত। তাঁরও স্বাদ আলাদা ছিল।"