৫৮ বছরে এসে মিলল জমির পাট্টা, সহায় সম্বলহীন সনাতনের লড়াইটা অবাক করার মতোই!

land patta: পূর্ব বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলি জেলার মোট ৭৯ জনের হাতে জমির পাট্টা তুলে দিয়েছেন। তাঁদেরই একজন এই সনাতন।

land patta: পূর্ব বর্ধমানের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলি জেলার মোট ৭৯ জনের হাতে জমির পাট্টা তুলে দিয়েছেন। তাঁদেরই একজন এই সনাতন।

author-image
Uttam Dutta
New Update
Sanatan Hembram land patta at 58  ,Third gender beneficiary land rights  ,Rural third gender NE empowerment,  Land grant for marginalised transgender individual  ,NEET aspirant turned landowner story  ,Government land patta third gender  ,Land ownership third gender West Bengal  ,Marginalised third gender agricultural land patta,সনাতন হেমব্রম জমি পাট্টা পেয়েছেন  ,৫৮ বছর বয়সে কৃষি জমি,  তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার  ,সামাজিক প্রান্তের মানুষ ভূমি অধিকার,  পাণ্ডুয়া তৃতীয় লিঙ্গ জমির স্বপ্ন,  সরকারের কৃপায় তৃতীয় লিঙ্গ ভূমি দান  ,হুগলি তৃতীয় লিঙ্গ পাট্টা  ,ভায়রা গ্রামের তৃতীয় লিঙ্গ কৃষক

land patta: জমির পাট্টার কাগজ হাতে নিচ্ছেন সনাতন হেমব্রম।

সনাতন হেমব্রম। হুগলি জেলার পাণ্ডুয়া থানার ভায়রা গ্রামের বাসিন্দা। আজীবন কেটে গেছে অনাদরে অবহেলায়। নিজের বলতে কিছু আত্মীয় যারা থেকেও নেই। জীবনের অর্ধেকটা কেটে যাওয়ার পর শেষমেশ ৫৮ বছর বয়সে এসে ০.১৪ একর কৃষি জমি পাট্টা পেলেন তিনি।

Advertisment

বর্ধমানে মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় প্রশাসনিক বৈঠক এবং বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা প্রদান অনুষ্ঠান হয়। ওই মঞ্চ থেকে দূর সম্প্রচার যোগাযোগ মাধ্যমে অন্যান্য জেলার পাশাপাশি হুগলি জেলাতেও জমির পাট্টা বিলির অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। 

হুগলি জেলায় মোট ১৯১ জনকে বাস্তু এবং কৃষি উভয় ক্ষেত্রেই জমির পাট্টা দেওয়া হয় সমাজের প্রান্তিক মানুষদের। চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনে আয়োজিত হয় ওই অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য্য, জেলা পরিষদের সভাধিপতি রঞ্জন ধাড়া, মন্ত্রী বেচারাম মান্না, সদর মহকুমা শাসক স্মিতা সান্যালরা। ওই অনুষ্ঠান থেকেই সদর মহকুমার ৭৯ জনকে জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হয়। 

Advertisment

আরও পড়ুন- West Bengal News Live updates:মুখ্যমন্ত্রীর সভায় প্ল্যাকার্ড হাতে চাকরি-বিক্ষোভ, 'অশনি সংকেত, ভয় কাটছে', বললেন শুভেন্দু

পাট্টা পাওয়া ৭৯ জনেরই একজন সনাতন হেমব্রম। তিনি তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ।
মাত্র ১৫ বছর বয়সে ঘর ছেড়েছিলেন সনাতন। কারণ, আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে পাড়া-প্রতিবেশী সবার কাছেই তাঁর আচার আচরণ ছিল নাকি 'অস্বস্তিজনক' এবং 'অপ্রীতিকর'। তাই কেউ নাকি তাঁকে সহ্য করতে পারত না। সনাতনও আর যেন সমাজের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না। সনাতনের কথায়, "বাবা রূপাই হেমব্রম ছিলেন গরিব দিনমজুর। বাড়িতে আমি ছাড়া আরও দু'জন দাদা আছে। আমি পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি, আর পড়তে পারিনি।"

আরও পড়ুন- Success Story: ধনুকভাঙা পণেই দারুণ বিজয়! হতদরিদ্র পরিবারের রমেনের 'সোনার কীর্তি'কে কুর্ণিশ

তাঁর কথায়, "মাত্র ১৪/১৫ বছর বয়সে আমি ঘর ছাড়ি। চলে যাই মেদিনীপুর। সেখানে সমগোত্রীয়দের সঙ্গে থাকতাম। কাজ ছিল নবজাতকদের নাচানো। কিন্তু বছর সাতেক আগে খবর পেলাম মা খুব অসুস্থ। চলে এলাম নিজের গ্রাম ভায়রাতে। দাদারা কেউ দেখতো না। তাই আমিই চলে এলাম। কয়েক বছরের মধ্যে বাবা-মা দু'জনেই চলে গেলেন।" 

আরও পড়ুন-Vaishno Devi landslide:বৈষ্ণোদেবী মন্দিরের পথে ভয়াবহ ভূমিধ্বসে মৃত ৩০, নাগাড়ে বৃষ্টিতে বিরাট ক্ষতি জম্মু কাশ্মীর, হিমাচলেও

তিনি বলেন, "আমি আর ফিরে যেতে পারিনি। আমি রয়েই গেলাম। মায়ের আনুকূল্যে পাওয়া ২ কুঠুরি সরকারি বাড়িতেই রয়ে গিয়েছি। বাবার জমিতে চাষ করতে লাগলাম। আলু, ধান চাষ করি। ওতেই আমার চলে যায়। একা মানুষ। কিন্তু একটা সংশয় ছিল, জমিটা তো সরকারের.... কখন নিয়ে নেবে? তবে আজ আর সেই চিন্তা নেই। এটাই একটা তৃপ্তি, মানসিক শান্তি। যাক জমিটা আর কেউ কাড়তে পারবে না।"

Land Bengali News Today Hooghly