ভেঙে পড়ল ময়ূরাক্ষী নদীর উপর তিলপাড়া সেতুর ওয়াটার ডিভাইডার। বড়সড়ো এই বিপত্তির জেরে সমস্ত রকম যানচলাচল বন্ধ করে দিল প্রশাসন। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম এই সেতু। সিউড়িতে ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর প্রায় ৭৪ বছরের পুরনো এই জলাধার সেতুটি। দীর্ঘ ২৫ বছর সেতুটি সংস্কার হয়নি বলে আগেই অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। এমনকি, সংস্কারের নামে ৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে বিরোধীরা৷
বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার আমনদীপ সিং বলেন, "বড় গাড়ি আগেই বন্ধ করে দিয়েছিলাম৷ এবার ছোট গাড়িও আর যেতে দিচ্ছি না৷ সমস্ত রকম যানচলাচল বন্ধ করে দিয়েছি৷"
সেচের কাজের জন্য ১৯৫১ সালে বীরভূমের সিউড়িতে ময়ূরাক্ষী নদীর উপর তিলপাড়া জলাধার তৈরি হয়েছিল৷ পরে জলাধারের উপর চলাচলের সেতু নির্মিত হয়৷ এই সেতুটি ১৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর রয়েছে। যা মূলত উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম৷ ১৯৭৮ সালে ও ২০০০ সালের বন্যায় জলাধার সহ সেতুটি ভালো রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল৷
আরও পড়ুন-বাঙালি হেনস্থা ইস্যুতে আবারও BJP-কে তুলোধোনা মমতার, NRC নিয়ে তুললেন মারাত্মক অভিযোগ
গত কয়েক দিন ধরে লাগাতার বৃষ্টি হচ্ছে৷ যার জেরে পুকুর, নদী-নালা সব ভরপুর৷ অতি জলের চাপে তিলপাড়া জলাধারে ফাটল দেখা দিয়েছিল৷ তড়িঘড়ি ভাড়ি যানচলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের তরফে৷ এমনকি, সব গেট খুলে দিয়ে জলাধারটি জল শূন্য করা হয়েছে। এদিন, দেখা যায় জলাধারের যে ওয়াটার ডিভাইডার রয়েছে সেগুলো ভেঙে গিয়েছে। যে কোন সময় বড়সড় দূর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে৷ তাই সেতু দিয়ে সমস্ত রকম যানচলাচল নিষিদ্ধ করে দেওয়া হল৷ মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
তবে অভিযোগ, দীর্ঘদিন ২৫ বছর ধরে তেমন ভাবে সেতুটি সংস্কারই হয়নি৷ এক সময় জলাধারের কাছে প্রচুর বালি জমে গিয়েছিল৷ সেই বালি উত্তোলন করা জন্য টেণ্ডার হয়েছিল। তাতে কমপক্ষে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল৷
আরও পড়ুন- জাল টেনে তুলতেই চোখ ছানাবড়া জেলেদের! দামোদরের পাড়ে হুলস্থূল ব্যাপার
সেই টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সরব বিজেপি৷ জেলা শাসকের দপ্তর ঘেরাও করতে গিয়ে ৮ বিজেপি কর্মীকে গ্রেপ্তারও হতে হয়েছে। এই সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আরও গুরুত্বপূর্ণ যে অভিযোগ, তা হল দেউচা-পাচামি থেকে বড় বড় ওভার লোড লরি, ডাম্পার সেতু দিয়ে চলাচল করে৷ নজর নেই প্রশাসনের। দিনে কমপক্ষে হাজারো লরি, ডাম্পার চলাচল করে সেতু দিয়ে৷ এই মুহুর্তে সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ থাকায় সাঁইথিয়া সেতু হয়ে ঘুর পথে বড় গাড়ি যাতায়াত করছে৷ তিলপাড়া জলাধার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় চরম বিপাকে সাধারণ মানুষজন৷
জলাধার বিশেষজ্ঞ জুলফিকার আহমেদ ও সেচ দপ্তরের ইঞ্জিনিয়াররা ইতিমধ্যে জলাধার ও সেতু নিরীক্ষণের কাজ শুরু করেছেন৷