Lok Sabha polls 2024: ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সাংসদদের প্রার্থী করেছিল বিজেপি। জগন্নাথ সরকার, নীতীশ প্রামানিক, লকেট চট্টোপাধ্যায়, বাবুল সুপ্রিয়কে ওই নির্বাচনে প্রার্থী করেছিল গেরুয়া শিবির। এমনকী দলের সর্বভারতীয় সহসভাপতি মুকুল রায়কেও বিধানসভা ভোটে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। জয়ের পর বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেছিলেন জগন্নাথ সরকার, নীতীশ প্রামানিকরা। কড়া সমালোচনা করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার রাজ্যের মন্ত্রী, রাজ্যসভার সাংসদ ও একাধিক বিধায়ককে প্রার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন তিন জন বিজেপি সহ মোট ১০ জন বিধায়ক। তার মধ্যে ২ জন মন্ত্রী। আবার একজন রাজ্যসভার সাংসদ। রাজনৈতিক মহলের মতে, মূলত পরিচিত মুখ ও গোষ্ঠীকলহ এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ঘাসফুল শিবির।
উত্তরবঙ্গের ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন নির্মলচন্দ্র রায়। এবার তাঁকে তৃণমূল প্রার্থী করল জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্র থেকে। প্রকাশচিক বড়াইক রাজ্যসভার সাংসদ। তাঁকে প্রার্থী করা হয়েছে আলিপুরদুয়ার থেকে। সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বাসুনিয়াকে কোচবিহার কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। বালুরঘাটের তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। রায়গঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী হয়েছেন দলবদল করা বিজেপি বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যানী। রাণাঘাট কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছে সদ্য বিজেপি থেকে আসা বিধায়ক মুকুটমনি অধিকারীকে। বণগাঁ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাসও বিজেপির বিধায়ক। তিনি ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পরই তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে যান। হাড়োয়ার দলীয় বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলামকে বসিরহাট কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে ঘাসফুল শিবির। উত্তর ২৪ পরগণার ব্যারাকপুর কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী করেছে পার্থ ভৌমিককে। তিনিও রাজ্যের মন্ত্রী। বাঁকুড়া কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তালডাংড়ার বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী। অভিনেত্রী জুন মালিয়াকে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। তিনিও দলীয় বিধায়ক। পটাশপুরের তৃণমূল বিধায়ক উত্তম বারিক এবার কাঁথির প্রার্থী।
দু'জন রাজ্যের মন্ত্রীকে পার্থী করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যসভার সাংসদ একজন ও একাধিক বিধায়ক প্রার্থী হয়েছেন আসন্ন লোকসভা ভোটে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও সাংসদদের প্রার্থী করে সমালোচনায় জেরবার হতে হয়েছিল বিজেপিকে। আবার বিধায়ক নির্বাচিত হয়ে পদত্যাগ করায় ফের নির্বাচন করতে হয়েছে ওই কেন্দ্রগুলিতে। উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রচারে প্রশ্ন তুলেছিল কেন এই অকাল ভোট? এবার যা পরিস্থিতি তৃণমূলের মন্ত্রী, বিধায়করা সাংসদ নির্বাচিত হলে একাধিক আসনে ফের নির্বাচন করতে হবে। মিনি বিধানসভা ভোট হবে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, দীর্ঘ দিন ধরে বিধায়ক ও মন্ত্রী থাকার ফলে এঁদের পরিচিতি মহল রয়েছে। এই একই নীতি নিয়ে এরাজ্য শুধু নয়, ভিন রাজ্যেও বিজেপি এই নীতি নিয়ে প্রার্থী করে থাকে। তাছাড়া একএকটি লোকসভা কেন্দ্রে একাধিক প্রার্থী হওয়ার দাবিদার থাকেই। সেক্ষেত্রে একজন স্থানীয় নেতাকে প্রার্থী করলে আরেক গোষ্ঠী ক্ষিপ্ত হতে পারে। গোষ্ঠীকলহের প্রবল সম্ভাবনা থেকেই যায়। এক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা নেই। তাই দলীয় বিধায়কদের ওপরই ভরসা রাখল তৃণমূল কংগ্রেস।