ঘটা করে তৃণমূলে এসেছিলেন শুভ্রাংশু রায়কে সঙ্গে নিয়ে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের পর তৃণমূল ভবনে গিয়ে বিজেপি থেকে জোড়া ফুলের পতাকা হাতে নিয়েছিলেন। সেদিনের তৃণমূল-যোগ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মুকুল রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের জন্য শুভেন্দু অধিকারী আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু দিল্লি যেতেই মুকুলের দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন ফের বলেছেন মুকুল রায় তো বিজেপি বিধায়ক।
শুভ্রাংশু রায় সহ তামাম তৃণমূল নেতৃত্ব মুকুলের অসুস্থতা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন। দিল্লি পৌঁছাতেই কেন মুকুল রায় বিজেপি বিজেপি বলে লম্ফলম্ফ শুরু করে দিয়েছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব? এই নিয়েই এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তবে রাজনৈতিক মহল, নানা রহস্য খুঁজে বেরাচ্ছে। মুকুলের স্বেচ্ছায় বিজেপি শিবিরে ভিরে যাওয়া নিয়ে বিরোধীরা ফের সেটিং তত্ব দেখতে পাচ্ছে। যদিও প্রকাশ্যে মুকুল রায় যা বলছেন তাতে বিজেপির বিশ্বস্ত সৈনিক হিসাবেই নিজেকে তুলে ধরতে তৎপর হয়েছেন। এর পিছনে নানা কারণ দেখছে রাজনৈতিক মহল। অবশ্য ইতিমধ্যে, মুকুল দিল্লি গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসকে অস্বস্তিতে ফেলার মতো মন্তব্য করে চলেছেন।
আরও পড়ুন- ‘মুকুল বিজেপি বিধায়ক’, ‘চাণক্য’ দিল্লি যেতেই বললেন মমতা
আরও পড়ুন- ভোল বদলে বাংলায় ফের ‘পরিবর্তনে’র ডাক মুকুলের, তৃণমূল যোগে শোনালেন ‘চাপ’ গল্প
রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূল ভবনে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দিলেও খাতায় কলমে বিজেপিতেই থেকে গিয়েছেন। দলবদল করলেও বিধানসভায় বিজেপি, বাইরে তৃণমূল। এই ধরনের বিধায়করা বিজেপির সুরে কথা বললেও দায় ঝেড়ে ফেলতে তৃণমূল যে বিন্দুমাত্র সময় নেবে না তা-ও কিন্তু মুকুল ইস্যুতে ইঙ্গিত মিলেছে। তবে মুকুলের দিল্লি যাওয়ার উদ্দেশ্য় নিয়ে এখনও নির্দিষ্ট কারণে পৌঁছাতে পারেনি রাজনৈতিক মহল। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, সম্ভবত ভবিষ্যতেও এর প্রকৃত কারণ অনুসন্ধান করা গবেষণার বিষয় হতে পারে। তবে এই মুহূর্তে দিল্লি থেকে মুকুল বান নিয়ে সংশয়ে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৃণমূলে যোগদানের পর মুকুল বিজেপিতেই আছে একথা আগেও বলেছেন তৃণমূল নেত্রী। রাজনৈতিক মহলের মতে, কৌশলগত কারণেই সেই মন্তব্য করছেন মমতা। সূত্রের খবর, তৃণমূলে যোগদানের পর মুকুল বিজেপিতেই আছে, তৃণমূল নেত্রীর সেই মন্তব্য যে তাঁর হজম হয়নি তা ঘনিষ্ট মহলে বলেছিলেন কৃষ্ণনগরের বিধায়ক। এমনকী বিধানসভার প্যাক কমিটি থেকেও বারে বারে পদত্যাগ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন মুকুল রায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, এখন দিল্লিতে বসে কতবার তৃণমূল কংগ্রেসের পতন বা ধংসের কথা বলবেন, তাই তিনি ঘাসফুলে যোগদান করলেও এই ইস্য়ুকে বিশেষ পাত্তা দেবে না বলেই ঠিক করে নিয়েছে মমতার দল। তাই মুকুল রায় তৃণমূলে আনুষ্ঠানিক যোগ দিলেও বিজেপির বিধায়কই থেকে গেলেন।