Purba Bardhaman News: বাড়িতে ঢুকে ব্যবসায়ীকে বেধড়ক মার, স্ত্রীকে ধর্ষণের হুমকি, কাঠগড়ায় তৃণমূল নেতা

Khandaghosh Incident: এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিরোধীরা এই ঘটনা নিয়ে তুলোধনা করেছে শাসকদল তৃণমূলকে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।

Khandaghosh Incident: এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিরোধীরা এই ঘটনা নিয়ে তুলোধনা করেছে শাসকদল তৃণমূলকে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।

author-image
Pradip Kumar Chattopadhyay
New Update
Tmc leader accused of beating businessman in East Burdwans Khandaghosh,পূর্ব বর্ধমান,খণ্ডঘোষ, ব্যবসায়ীকে মারধর তৃণমূল নেতার

Khandaghosh Incident: পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

Trinamool leader accused of beating businessman in East Burdwan's Khandaghosh: গভীর রাতে পাঁচিল টপকে বাড়িতে ঢুকে এক ব্যবসায়ীকে ব্যাপক মারধর করে জখম করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল নেতা ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের এই ঘটনা. চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। মারধরের হাত থেকে রেহাই পাননি ব্যবসায়ীর স্ত্রীও। ঘটনার বিহিত চেয়ে জেলার পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন আক্রান্ত ব্যবসায়ী। পরে তিনি খণ্ডঘোষ থানাতেও FIR রুজু করেছেন। এহেন ঘটনা জানতে পেরেই তৃণমূলকে বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে বিরোধীরা রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব। 

Advertisment

আক্রান্ত ব্যবসায়ীর নাম সুবীর মণ্ডল। খণ্ডঘোষের বেরুগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত সুলতানপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী।গত ১৭ এপ্রিল সুবীর মণ্ডল জেলার পুলিশ সুপারের দফতরে লিখিত অভিযোগ পত্র জমা করেছেন। তাঁর আনা অভিযোগ বেশ ভয়ংকর। পুলিশ সুপারকে সুবীর মণ্ডল তাঁর অভিযোগপত্রে লিখেছেন, “গত ১১ এপ্রিল রাত ১০টা নাগাদ সেখ সাহাদ আলি ওরফে লকাই-এর নেতৃত্বে ১২-১৩ জন তাঁর বাড়ির সামনে জড়ো হয়। তাদের মধ্যে মিলন মালিক ও সাবির মিদ্দে পাঁচিল টপকে প্রথমে তাঁর বাড়ির ভিতরে ঢুকে বাড়ির মূল দরজা খুলে দেয়। এরপর লকাইয়ের নেতৃত্বে সাবির মিদ্দে,মিলন মালিক,অরুপ  সিং সেখ আনিসুল,আসগর মিদ্দে সহ আরও ৫-৭ জন লাঠি হাতে তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়ে।" 

সুবীর মণ্ডলের আরও অভিযোগ, “বাঁশ ও লাঠি হাতে নিয়ে তাঁর বাড়িতে ঢুকে পড়ার পর লকাই ও তার দলবল সোজা তাঁর ঘরে ঢুকে পড়ে। নির্মমভাবে মারতে মারতে তারা তাঁকে ঘর থেকে বাইরে বের করে আনে। তারপর প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে তারা বাঁশ ও লাঠি দিয়ে তাঁর মাথা সহ গোটা শরীরের বিভিন্ন অংশে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে। সেই মারধোরে রক্তাক্ত হয়ে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জ্ঞান হারান। ওই অবস্থার মধ্যেই তাঁর হাতের আঙুলে থাকা ২ টি সোনার আংটি হামলাকারী মিলন মালিক খুলে নেয়।" ব্যবসায়ীর অভিযোগ, “মারধোরে জখম হয়ে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাঁকে বাঁচানোর জন্য তাঁর স্ত্রী ছুটে আসেন। হামলাকারীরা তাঁর স্ত্রীকেও রেহাই দেয়নি। জঘন্য ভাষায় গালিগালাজ করার পাশাপাশি তাঁর স্ত্রীকে বাড়ি থেকে ফাঁকা মাঠে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করার হুমকি দেয় সেখ সাহাদ আলি ওরফে লকাই।"

আরও পড়ুন- Murshidabad Violence: মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ হিংসা, মুখ্যমন্ত্রীর না যাওয়া নিয়ে প্রবল সমালোচনা, শেষমেশ বিরাট সিদ্ধান্ত মমতার

Advertisment

 আক্রান্ত সুবীর মণ্ডলের অভিযোগ, ১২ এপ্রিল তিনি বর্ধমান হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে খণ্ডঘোষ থানায় অভিযোগ জানাতে যান। তখন থানা তাঁর অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। সেই কারণে বাধ্য হয়ে তিনি জেলার পুলিশ সুপারের দফতরে অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরে খণ্ডঘোষ থানা তাঁর অভিযোগ নিতে চাইলে ১৮ এপ্রিল তিনি খণ্ডঘোষ থানায় FIR রুজু করেন। পাঁচিল টপকে বাড়িতে ঢুকে হামলা মারধোরের সবিস্তার তাঁর বাড়ির সিসি ক্যামেরার ধরা পড়েছে বলে ব্যবসায়ী সুবীর মণ্ডল দাবি করেছেন। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি ও ন্যায় বিচারের দাবি করেছেন সুবীর মণ্ডলের স্ত্রী। 

এমন ঘটনা নিয়ে কোনও FIR রুজু হয়েছে কি না তা খোঁজ জানতে হবে বলে SDPO (বর্ধমান দক্ষিণ) অভিষেক মণ্ডল জানিয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে কোনও রাখঢাক না রেখে খণ্ডঘোষ থানার এক পুলিশকর্তা জানান,সুবীর মণ্ডলের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত  চলছে।

আরও পড়ুন- Birbhum News: 'মেরে ঠ্যাং ভেঙে দেব', তৃণমূল ব্লক সভাপতিকে 'চরম-বার্তা' দলেরই দাপুটে নেতার

ব্যবসায়ীকে মারধরে প্রধান অভিযুক্ত সেখ সাহাদ আলি ওরফে লকাই হলেন খণ্ডঘোষের বেরুগ্রাম অঞ্চল তৃণমূলের মূল কার্যকর্তা। ১১ তারিখ রাতের ঘটনার জন্য তিনি অনুতাপ প্রকাশ করেছেন। তবে সুবীর মণ্ডলের বিরুদ্ধেও তিনি বিস্ফোরক অভিযোগ এনেছেন।  লকাইয়ের কথায়, “এক মহিলার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল সুবীর। ওই মহিলা সেই সম্পর্ক ছিন্ন করলে সুবীর বদলা নেওয়ার জন্য মহিলার লগ্ন ছবি ভাইরাল করে দেয়। এর প্রতিবাদ করা হলে সুবীর নোংরা ভাষায় তাঁকে গালিগালাজ করে। এমনকী তৃণমূল কংগ্রেস দলের পতাকা ছিঁড়ে ফেলে তার উপর প্রস্রাব পর্যন্ত করে দেয়।" এই সব কারণেই সুবীর মণ্ডলের বিরুদ্ধে ক্ষোভের পারদ চড়েছিল বলে লকাই জানিয়েছেন। 

বিরোধীরা অবশ্য এই ঘটনাকে হালকাভাবে দেখতে নারাজ। রাতের অন্ধকারে পাঁচিল টপকে বাড়িতে ঢুকে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে জখম করার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ তাঁরা জানিয়েছেন। জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “বাংলায় আইনের শাসন এখন আর নেই। বাংলায় এখন তৃণমূলী শাসন চলছে। খণ্ডঘোষের সুলতানপুরের ঘটনা তারই প্রমাণ।"

police tmc Purba Bardhaman