Babul-Abhijit Conflict: দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ও রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র বাকবিতন্ডার ভিডিও দেখেছে বাংলার মানুষ। দুই মেরুর দুই রাজনীতিকের গাড়ি রাতে মাঝ-রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাওয়ায় যানজট আরও বেড়ে গিয়েছিল। তবে কিস্যা সেখানে থেমে যায়নি। দুজনেই এই ইস্যুতে একে অপরকে প্রায় দেখে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সোশাল মাধ্যমে সাক্ষাৎকারে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ফের স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তিনি বাবুল সুপ্রিয়কে গ্রেফতার করাবেন। তা ভারতের যে কোনও জায়গায় হতে পারে। পাশাপাশি, একাধিকবার তমলুকের বিজেপি সাংসদ বলেছেন বাবুল মদ্যপ ছিলেন। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগের পর বাবুল সুপ্রিয় জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এবার লিখিত অভিযোগ করবেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তিনি মদ্যপ ছিলেন না বলেও দাবি করেছেন।
তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, "বাবুল সুপ্রিয়র গানের জীবন শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন গুন্ডার জীবন শুরু করেছেন। তাঁকে বিজেপি তাড়িয়ে দিয়েছিল।" ওই দিনের ঘটনা নিয়ে তিনি বলেছেন, "দ্বিতীয় হুগলি সেতু দিয়ে যখন গাড়িতে যাচ্ছিলাম তখন আমার সামনের গাড়িগুলো স্লো চলছিল। তাই হর্ণ দেওয়া হয়। হঠাৎ দেখি একটা গাড়ি পথ আটকে দাঁড়ায়। সেখান থেকে চিৎকার করে বলল হর্ণ দেবেন না। তিন-চারজনকে সঙ্গে নিয়ে ওই গাড়ি থেকে বাবুল সুপ্রিয় বেরিয়ে এলেন। তিনি সম্পূর্ণ মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন। তারপর আমার গাড়ির কাচের পাশে এলেন। তিনি এসে আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। হাত চালান। আমার হাত থেকে মোবাইল পড়ে যায়। সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।"
ভিড়ে মিশে গোপন কোন পরিকল্পনা? শিয়ালদা স্টেশনে বাংলাদেশি মহিলা গ্রেফতারিতে চূড়ান্ত চাঞ্চল্য
বিষয়টা যে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর রাস্তায় থেমে যায়নি তা স্পষ্ট করেছেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, "কলকাতার বাইরে যাচ্ছি,
দুদিন বাদে ফিরে যা করার করবো। ওনাকে বলে দিয়েছি আপনাকে আমি গ্রেপ্তার করাবো। ভারতের কোথায় হবে বলিনি। ওনার যা ট্রাক রেকর্ড তাতে গ্রেফতার হওয়া সময়ের অপেক্ষা। আজও তিনি যা করেছেন তা যদি যুক্ত হয় গ্রেফতার হবেনই। ওদের চুরি জোচ্চুরি ধরেছি বলে রাগ আছে আমার ওপর। বাবুল সুপ্রিয় দালালি করছেন। আমার দায়িত্বপ্রাপ্ত সিকিউরিটি নামতে না বললে আমি গাড়ি থেকে নামি না। বাবুল আমার গাড়ি ভাঙচুর করার চেষ্টা করেছেন। বাবুল সুপ্রিয় নিজের বিপদ নিজে ডেকেছেন।"
বাবুল সুপ্রিয়ও থামার পাত্র নন। তিনি অভিজিৎ গঙ্গেপাধ্যায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সোশাল মিডিয়ায় তিনি লিখেছেন, "কিসের ভিত্তিতে উনি বলছেন যে আমার গ্রেফতার হওয়া সময়ের অপেক্ষা। ভারতবর্ষের অন্য কোনও রাজ্যে গ্রেফতার করবেন!! গতকাল বেআইনিভাবে তারস্বরে হুটার বাজিয়ে, শুধুমাত্র পুলিশের গাড়িতে যেরকম rectangular Blue & Red Light লাগানো থাকে, সেরকম লাইট লাগিয়ে dangerously কলকাতা থেকে হাওড়ার দিকে যাচ্ছিলো! রাত নটা নাগাদ আর এমন একটি সময়ে যখন Repair-এর একটা লেন বন্ধ থাকে!! তখন, হুটার বাজানোর দরকারটা কি? যাওয়ার তো কোনো জায়গাই নেই!!! হ্যাঁ রাস্তা খালি থাকলে আমরা সবাই একটু আধটু জোরে চালাই। আমিও চালাই! কিন্তু যখন একটি ব্রিজের একটিমাত্র লেন-এ প্রচুর বাইক আর গাড়ীতে ঠাসা??!!!
আরজি কর কাণ্ডে এতদিনে টনক নড়ল রাজ্যের? সরকারি হাসপাতালের পরিষেবায় এবার আমূল বদল
তাহলে কি এবার দুই প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক নেতার মধ্যে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের পালা চলবে? নাকি দুজনই আইনের পথে হাঁটবেন? বাবুল জানিয়েছেন, "আমি গত রাতে তাঁর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করিনি। কিন্তু সে আজ যে সমস্ত অযৌক্তিক কথা বলেছে তার পরেও আমাকে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে যখন আমাকে যাঁরা চেনেন। আমি এখন তাঁর বিরুদ্ধে সরকারিভাবে অভিযোগ দায়ের করব। ভারতের যে কোনও প্রান্তে আমাকে গ্রেপ্তার করার তাঁর হুমকির বিষয়ে আমি শুধু বলতে পারি, তিনি ক্যামেরার সামনে বোকা সেজে জালিয়াতি করার মরিয়া চেষ্টা করেছে।" রাস্তার লড়াই কি এবার আইন-আদালতে গড়াবে?