/indian-express-bangla/media/media_files/2025/05/31/SbIAGRHUyTcwS90STXT8.jpg)
Smart Meter: প্রতীকী ছবি।
ত্রিপুরায় স্মার্ট মিটার চালু করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রাজ্যে বিরোধী সিপিআইএম, কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেস দলের জোর আন্দোলনের মুখে রাজ্যে সরকারের হয়ে বিরোধীদের দিকে সোমবার অভিযোগের আঙুল তুলে বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, "সাধারণ মানুষকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্ত করার চক্রান্ত করছে বিরোধীরা।" তিনি আরও জানান, গত সাত বছরের BJP শাসনে যেখানে ২৪.৯ শতাংশ বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি হয়েছে, বাম আমলের শেষ সাত বছরে সেখানে ১১৬ শতাংশ বিদ্যুৎ মাসুল বৃদ্ধি হয়েছিল। এদিকে ত্রিপুরার বিভিন্ন জেলায় আজ স্মার্ট মিটার চালু করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে জোর বিক্ষোভ দেখিয়েছে বিরোধী দলগুলি।
আগরতলায় বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথের বাড়ির সামনে স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস যুবনেতা শান্তনু সাহা বলেন, "প্রতিনিয়ত ত্রিপুরায় বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করা হচ্ছে। স্মার্ট মিটারের নামে জনগণের ঘাড়ে বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে সরকার। বেসরকারিকরণের লক্ষ্যে টাটা, আম্বানি, আদানিদের পকেট ভরার জন্যে মন্ত্রী রতনবাবুর নেতৃত্বে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে স্মার্ট মিটারের নামে বোঝা চাপাতে চাইছে তারা। তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে আমরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছি। আমরা মন্ত্রীর বাসভবনের সামনে ধর্নায় বসেছি, যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। যে স্মার্ট মিটার বন্ধ হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে"।
পরে বিদ্যুৎ মন্ত্রীর বাড়ির সামনে তাদের ধর্নাস্থল থেকে গ্রেফতার করে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কর্মীদের অরুন্ধতিনগর পুলিশ লাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে আগরতলায় ত্রিপুরা রাজ্যে বিদ্যুৎ নিগমের মুখ্য কার্যালয়ের সামনে, সিপাহিজলা জেলার বিশ্রামগঞ্জে, গোমতী জেলার উদয়পুরে, উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মগর শহরে, উনকোটি জেলার কৈলাশহর, কুমারঘাট, পাবিয়াছড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় স্মার্ট মিটারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে কংগ্রেস।
বনমালিপুরস্থিত রাজ্যে বিদ্যুৎ নিগম কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে এক সদর জেলা কংগ্রেস নেতা অভিযোগ করেন, উপভোক্তাদের না জানিয়ে আচমকা সানড্রিস, ডিউটি, ফিক্সড চার্জ ইত্যাদি নাম দিয়ে বিভিন্ন ট্যাক্স যোগ করে ৫০০-১০০০ টাকা প্রতি বিলে বাড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তলানিতে ঠেকেছে। কংগ্রেসের পক্ষে প্রবীর চক্রবর্তী, তন্ময় রায়রা বলেন,"আমরা সদর জেলা কংগ্রেসের পক্ষে এইসব সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছি। স্মার্ট মিটারের নামে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বরা প্রতিবাদ করছেন, বলছেন স্মার্ট মিটারে বিল বেশি উঠে। অথচ পশ্চিমবঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী যেখানে স্বীকার করে নিয়েছেন তাঁরা এই মিটার লাগাবেন না, এখানে বিদ্যুৎমন্ত্রী নাছোড়বান্দা, তিনি স্মার্ট মিটার চালু করছেন।
যেসব উপভোক্তাদের আগে ৬০০-৭০০ টাকা বিল আসত, এই নতুন মিটারে ১২ হাজার, ১৪ হাজার টাকা বিল আসছে। তাই আমরা দাবি করছি, অতি দ্রুত এই স্মার্ট মিটার প্রত্যাহার করুন এবং বর্ধিত বিদ্যুৎ মাশুল প্রত্যাহার করে নিন," বলেন কংগ্রেস নেতা তন্ময় রায়। কুমারঘাট, কৈলাসহর, ধর্মনগরেও অনুরূপ প্রতিবাদ সংগঠিত করে কংগ্রেস দল। কৈলাসহরে কংগ্রেসের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে জেলা কংগ্রেস সভাপতি বদরুজ্জামান বলেন ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে ৫০ ইউনিট বিদ্যুৎ বিনামূল্যে দেবর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি দল; কিন্তু প্রতিশ্রুতি পূরণ করার বদলে মানুষের ওপর স্মার্ট মিটার চাপিয়ে দেয় হচ্ছে এবং অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিলের ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন উপভোক্তারা।