/indian-express-bangla/media/media_files/2025/02/14/qb5fCsuAiBfOeb2wM2yJ.jpg)
প্রতীকী ছবি।
যে চুল ইস্তাম্বুল, বাংলাদেশ সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানির মাধ্যমে মোটা অংকের মুনাফা জমা হতো ভারতীয় ব্যবসায়ীদের অ্যাকাউন্টে, সেই চুলের গাড়ির চালককে অপহরণ করে কোটি টাকার লুঠ করা হলো। এই ঘটনায় সিভিক ভলান্টিয়ার সহ ৫ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।
এই গাড়িতে ১৫০০ কেজি চুল ছিল। যার বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা বলে জানাগিয়েছে। নাকাশীপাড়া থানা এলাকার ভোলাডাঙা এলাকার এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম নাম চাইরুদ্দিন শেখ, হাসিবুল শেখ, মোশারফ হালসানা, মহম্মদ রণী সেখ, কামালউদ্দিন সেখ। ধৃত প্রথম ৩ জনের বাড়ি নদীয়া জেলায়। বাকি দুজনের বাড়ি মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা এলাকায়। ধৃতদের মধ্যে মোশারফ হালসানা সিভিক ভলান্টিয়ার। সোমবার প্রথম ৩ জন ও মঙ্গলবার ২ জনকে নিয়ে মোট ৫ জনকে কৃষ্ণনগর জেলা আদালতে তোলা হলে পুলিশী হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এই গোটা ঘটনার মাস্টামাইন্ড বছর আঠারোর রণী সেখ। কয়েক বছর আগে সে পড়াশুনা শিকেয় তুলে দেয়। তারপর থেকেই সে ডাকাতি ছিনতাইয়ে হাত পাকায়। এর আগে তার নামে ঝাড়খন্ডের ডাকাতির অভিযোগ রয়েছে। তবে তাকে গতকাল রাতে ধুবুলিয়া থানা এলাকা থেকে পুলিশ বিশেষ কৌশলে গ্রেফতার করেছে। জানা গিয়েছে, এই চুল দিয়ে পরচুলা সহ বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী তৈরি হয়। প্রায় ৩০ বস্তার চুল নিয়ে একটি ট্রাক হায়দ্রাবাদ থেকে আসছিল৷
আরও পড়ুন-নির্দেশ মানেনি রাজ্য, মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে দিল্লি তলব নির্বাচন কমিশনের
ট্রাকটির যাওয়ার কথা ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙায়। ১৪ জন ব্যবসায়ীর চুল ছিল এই ট্রাকে। এই ব্যবসায়ীরা এই চুল নিয়ে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার পর বিদেশে রপ্তানি করে। জানাগিয়েছে, এখান থেকে এই চুল বিভিন্ন প্রক্রিয়ার পর ইস্তাম্বুল, বাংলাদেশ, মায়ানমার সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানির জন্য যায়। এই চুলের ব্যবসা থেকে মোটা অঙ্কের মুনাফা আসে বলে জানাগিয়েছে। একইসঙ্গে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়। হায়দ্রাবাদ থেকে গাড়িটি শালিমারের কাছে আসার পরই শুরু হয় গাড়ির উপর লুঠকারীদের নজরদারি। সেই মতো গাড়িটি হাইজ্যাক করার পর চালককে শান্তিপুরে অপহরণ করা হয়।
আরও পড়ুন-'ভুয়ো নাগরিকদের চিহ্নিত করে তাড়াতেই হবে', SIR-এ 'অনিয়ম' মানবেন না ভাইজান!
পরে গাড়িটি ধুবুলিয়া হয়ে নাকাশীপাড়ার ভোলাডাঙায় ঢুকতে রবিবার সকালে চুলের বস্তা নামিয়ে নেওয়া হয়। পরে ট্রাকটিকে রোডের ধারে যুগপুরে ফেলে রাখা হয়। সেই চুল গাড়িতে করে চলে যায় চাইরুদ্দিন শেখের বাড়িতে। সেখান থেকে চলে যায় সিভিক ভলেনটিয়ার মোশারফের বাড়ির গোডাউনে। পুলিশ সোর্স ও সিসিটিভি ব্যবহার করে এই কেসের উদঘাটন করেছে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীদের অনুমান ব্যবসায়ীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব, ঈর্ষা থেকে এই ঘটনা ঘটতে পারে। পরে পরিবহন সংস্থার কাছে চুল লুঠের গল্প বলে চাপ তৈরি করার ছক থাকতে পারে। তাতে অতিরিক্ত টাকা আদায়, একইসঙ্গে চুলও পাওয়া যেত।
অর্থাৎ অবৈধ ভাবে বাড়তি টাকা আয়ের ছক। কিন্ত পুলিশের হাতে গোটা বিষয়টি সোর্স মারফৎ চলে আসায় পুরো ছক ভেস্তে যায়। এই কেসে নাকাশীপাড়ার হরিদ্রপোতা গ্রামে বাড়ি পুলিশের এক সোর্স বাড়ি থেকে বেরিয়ে দুটি বস্তা পড়ে থাকতে দেখে। বস্তা দুটি হাল্কা। সন্দেহ হতে পুলিশকে সে জানায়। একই ভাবে ভোলাডাঙা এলাকাতেও একই ঘটনা ঘটে। তার আগে ট্র্বান্সপোর্টার গুলেশ বিন্দে অভিযোগ করে পুলিশের কাছে। একে একে ধরা পড়ে যায় চাইরুদ্দিন শেখ, হাসিবুল শেখ, মোসারফ হালসানা, মহম্মদ রণী সেখ, কামালউদ্দিন সেখরা। এদিন দুপুরে এ নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিত কুমার প্রেসমিট করেন।