/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/16/trump-putin-meet-2025-08-16-13-11-00.jpg)
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে নতুন প্রচেষ্টা নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু রয়েই গেল
Trump-Putin Meet: আলাস্কায় ট্রাম্প-পুতিন বৈঠক, জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে নতুন প্রচেষ্টা নিয়ে প্রশ্ন কিন্তু রয়েই গেল
আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। লক্ষ্য— তিন বছর ধরে চলমান ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান ঘটানো। তবে এত আলোচনার পরও যুদ্ধবিরতি বা শান্তি চুক্তি নিয়ে নির্দিষ্ট কোন চুক্তির প্রসঙ্গ সামনে আসেনি।
১৫ আগস্ট (শুক্রবার) প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে ট্রাম্প ও পুতিনের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে ট্রাম্প বলেন, “খুব ভালো আলোচনা হয়েছে” এবং উভয় দেশই “বিশাল অগ্রগতি” করেছে। তবে কোনও সুনির্দিষ্ট চুক্তি হয়নি। ট্রাম্প স্পষ্ট বলেন, এখন সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের— “বল জেলেনস্কির কোর্টে।”
আরও পড়ুন- পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ফের বোমা ফাটালেন ট্রাম্প! কেন উঠে এল ভারতের নাম?
পুতিনকে লাল গালিচায় অভ্যর্থনা জানানো হলেও জেলেনস্কিকে কেন এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তা নিয়ে কিন্তু প্রশ্ন থাকছেই। পরে প্রতিশ্রুতি মতো ট্রাম্প ফোনে জেলেনস্কিকে বৈঠকের বিষয় জানালেও, কীভাবে শান্তির পথে এগোনো হবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই বৈঠক ছিল লোকদেখানো। কারণ বৈঠক চলাকালীনও রাশিয়ার ড্রোন হামলা ইউক্রেনে অব্যাহত ছিল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুতিন তার শর্তেই অটল ছিলেন এবং কোনও ছাড় দেননি। অন্যদিকে জেলেনস্কি বারবার বলেছেন— দেশের এক ইঞ্চিও ভূমি তিনি ছাড়বেন না। ফলে আলোচনার ফলাফল নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন- প্রয়াত পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন রাজ্যপাল, শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর
ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে সবসময় “ডিল মেকার” হিসেবে তুলে ধরেন। রাশিয়া-ইউক্রেন এই যুদ্ধ বন্ধ হলে তা হবে ট্রাম্পের জন্য এক বিরাট রাজনৈতিক সাফল্য। এমনকি অনেকে মনে করছেন, তার চোখ নোবেল শান্তি পুরস্কারের দিকেও থাকতে পারে। তবে সমালোচকেরা বলছেন, ট্রাম্প আসলে ইউক্রেনের উপর চাপ তৈরি করছেন এবং পুতিনের প্রতি নরম মনোভাব দেখাচ্ছেন।
এই বৈঠকের দিকে ভারতও নজর রেখেছিল। একদিকে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা, অন্যদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক ভারতের জন্য নতুন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ট্রাম্প প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভারতের রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ তেল আমদানির কারণে। তাঁর অভিযোগ, এই তেল রাশিয়াকে আর্থিকভাবে শক্তিশালী করছে এবং যুদ্ধ চালাতে সাহায্য করছে।
প্রায় আড়াই ঘণ্টার আলোচনার পর ট্রাম্প ও পুতিন যৌথ সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন। মাত্র ১২ মিনিটের সংক্ষিপ্ত সম্মেলনে কোনও সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর দেননি দুই নেতা। ট্রাম্প বৈঠককে ১০-এর মধ্যে ১০ নম্বর দিলেও জানিয়ে দেন যুদ্ধ বন্ধে আপাতত কোন “চুক্তি হয়নি”। অন্যদিকে পুতিন দাবি করেন, একটি “সমঝোতা” হয়েছে এবং তিনি ট্রাম্পকে মস্কোতে আমন্ত্রণও জানান।
আরও পড়ুন-জঙ্গলমহলে আবারও নতুন করে মাওবাদী আতঙ্ক! মৃত্যুদণ্ডের হুঁশিয়ারি দিয়ে পোস্টার
বর্তমানে ট্রাম্প জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন এবং ন্যাটো নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন। তবে বাস্তবে শান্তি কতটা এগোবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে। বিশ্বের নজর এখন আমেরিকা, রাশিয়া ও ইউক্রেনের দিকে— এই ধ্বংসাত্মক যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটবে নাকি আরও জটিল হয়ে উঠবে, সেই প্রশ্নই এখন বড় প্রশ্ন।