দেশের দক্ষিণ প্রান্তে জলকষ্টের ছবি সামনে আসার পরই জল সংরক্ষণ নিয়ে পথে নেমেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জল অপচয় ঠেকাতে রাজ্য সরকারের তরফে সচেতনতামূলক প্রচারে বলা হচ্ছে ‘শাওয়ার নয়, বালতির জলে স্নান করুন’। এবার জল সংরক্ষণে অভিনব উদ্যোগের ছবি সামনে এল আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষক অভিজিৎ দেবনাথের হাত ধরে। বৃষ্টির জল সংরক্ষণে নিজের খরচেই গ্রামে বানিয়ে ফেলেছেন আস্ত জল প্রকল্প বা রেন ওয়াটার হার্ভেস্টিং। আসানসোলের পলাশডিহা গ্রামে গড়ে উঠেছে এই প্রকল্প।
আরও পড়ুন: আজব কাণ্ড! রাতের আঁধারে পুড়ছে বাইক-গাড়ি, আতঙ্কে প্রহর গুনছে দুর্গাপুর
জল সংরক্ষণ নিয়ে জনমানসে সচেতনতা বাড়াতে পোস্টার নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছিলেন শিক্ষিক অভিজিৎ দেবনাথ। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা কার্যত ব্যর্থ হয়। শহরের রাস্তায় শিক্ষকের এই সচেতনতার বার্তা কেউ আদপে কানেই তোলেননি। কিন্তু গ্রামে উল্টো ছবি চোখে পড়ে। বৃষ্টির জল সংরক্ষণে সচেতন বার্তায় শহরের মানুষ তেমন উৎসাহ না দেখালেও এগিয়ে এসেছেন গ্রামের মানুষরা। আসানসোলের পলাশডিহা গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে এই বিশেষ প্রকল্প।
দুর্গাপুরের সব খবর পড়ুন এখানে
আরও পড়ুন: রাস্তার হাল ফেরানোয় ‘গড়িমসি’, পঞ্চায়েতে ক্ষোভ স্থানীয়দের
উল্লেখ্য, পলাশডিহা গ্রামে অধিকাংশ দিনমজুর শ্রেণির মানুষের বাস। পুরনিগমের জলের ব্যবস্থা থাকলেও এখানকার মানুষের কাজের সময়ের কারণে সেই জল সংগ্রহ করতে পারতেন না তাঁরা। আর তাই পানীয় জলের সমস্যা না থাকলেও জলের সমস্যা ছিল। এই কথা জানার পরে অভিজিৎ দেবনাথ সেখানকার বাসিন্দাদের বৃষ্টির জল সংরক্ষণ করার কথা বলেন। গ্রামের মানুষ উৎসাহ দেখান। অভিজিৎ দেবনাথকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আরেক শিক্ষক চন্দ্রশেখর কুণ্ডু। এরপর এই দুই শিক্ষকের চেষ্টায় পলাশডিহা গ্রামে গড়ে উঠেছে বৃষ্টি বাড়ি প্রকল্পের একটি পাইলট প্রজেক্ট। আপাতত ছোটো করে এই প্রজেক্ট শুরু করা হয়েছে। যাতে এলাকাবাসীর কাছে বৃষ্টির জল ধরে রাখার বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। বৃষ্টি হলে এখানে দুটি বড় বড় ড্রামে জল ভরা হচ্ছে এবং সেই জল তাঁরা দৈনন্দিন নানান কাজে ব্যবহার করতে পারছেন। গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাঁরা উপকৃত হচ্ছেন এই বৃষ্টির জল ধরে রাখাতে। আগামী দিনে এই ধরনের আরও প্রকল্প গড়ে তোলার ইচ্ছা আছে বলে জানিয়েছেন অভিজিৎ দেবনাথ।