CEO office independence: বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের মাঝেই এবার রাজ্যকে বার্তা পাঠাল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। রাজ্য নির্বাচন কমিশন বর্তমানে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরের অধীনে পরিচালিত হলেও, এবার সেটিকে একটি 'স্বাধীন সংস্থা' হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বার্তা পাঠানো হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। সূত্রের খবর, নির্বাচন কমিশনের এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে সিইও-র অফিসকে আর্থিক ও প্রশাসনিকভাবে রাজ্য সরকারের উপর নির্ভরশীলতা থেকে মুক্ত করা। এই সুপারিশ অনুসারে, সিইও-র অফিসকে স্বতন্ত্রভাবে কাজের জন্য ঘোষণা করা হলে, অফিসে কর্মী নিয়োগ ও অর্থ বরাদ্দে আর রাজ্য সরকারের অনুমতির প্রয়োজন হবে না।
তবে কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে নিয়ে ফের রাজ্য বনাম কেন্দ্র মত পার্থক্যের ইঙ্গিত মিলছে। বিশেষ করে, এই উদ্যোগ এমন এক সময়ে নেওয়া হয়েছে যখন বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) নিয়ে কেন্দ্র ও বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক টানাপোড়েন চলছে। উল্লেখ্য গত সোমবার ২১ জুলাই শহীদ দিবসের সমাবেশে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া ভাষায় ঘোষণা করেন,"বাংলায় কোনওভাবেই SIR বাস্তবায়ন করতে দেব না। প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশন ঘেরাও করা হবে।"
তৃণমূল কংগ্রেস এর আগে থেকেই নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। দলের তরফে দাবি করা হয় কেন্দ্র ভোটার তালিকা সংশোধনের নামে সংখ্যালঘু, দলিত এবং বিরোধী সমর্থক ভোটারদের নাম কেটে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। বিহারেও SIR কার্যক্রম নিয়ে ভারত নির্বাচন কমিশন এবং বিরোধী দলগুলোর মধ্যে প্রবল সংঘাত দেখা দিয়েছে। যদিও কমিশনের তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়েছে,"SIR-এর ফলে কেউ যদি ভোটার তালিকায় নাম পেতে অযোগ্য হন, তবুও তাঁর নাগরিকত্ব বাতিল করা হবে না।"তবুও তৃণমূল কংগ্রেস ও আরজেডি-সহ একাধিক বিরোধী দল দাবি করছে, এই প্রক্রিয়া প্রকৃতপক্ষে প্রান্তিক সম্প্রদায় ও সংখ্যালঘু ভোটারদের বাদ দেওয়ার কৌশল মাত্র। অন্যদিকে, কেন্দ্র জানিয়েছে SIR একটি নিয়মিত এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়া, যা নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইনের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।
২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অফিসকে রাজ্য সরকারের আওতার বাইরে এনে স্বাধীনভাবে কাজ করানোর এই কেন্দ্রীয় পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে প্রশাসনিকভাবে যুক্তিযুক্ত হলেও, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্তকে বিরোধীদের উপর নিয়ন্ত্রণ কায়েমের চেষ্টা বলেই মনে করছে রাজ্যের শাসকদল।