Jagdeep Dhankhar Resignation: 'ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমি সঠিক সময়ে, ২০২৭ সালেই অবসর নেব!' মাত্র ১২ দিন আগে দিল্লির জেএনইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে জগদীপ ধনখড় এমনই মন্তব্য করেছিলেন। তার পর
সোমবার (২১ জুলাই) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে আচমকা পৌঁছান জগদীপ ধনখড়। রাত ৯টার সময় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন তিনি এবং মাত্র ২৫ মিনিটের মধ্যেই পদত্যাগপত্র জমা দেন। রাত ৯.২৫ নাগাদ তাঁর ইস্তফার বিষয়ে সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়।
ধনখড়ের এই হঠাৎ সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনার ঢেউ। কংগ্রেস দাবি করেছে, ধনখড়ের পদত্যাগের পেছনে 'স্বাস্থ্য' নয়, রয়েছে গভীর 'রাজনৈতিক' কারণ। দলের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন,“দুপুর ১টা থেকে সাড়ে ৪টার মধ্যে কিছু গুরুতর ঘটনা ঘটেছে, যার জেরেই জেপি নাড্ডা ও কিরেন রিজিজু দ্বিতীয় BAC মিটিংয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। এরপরই ধনখড় পদত্যাগ করেন। স্বাস্থ্য ছিল বাহানা, আসল কারণ আরও গভীর।” তিনি আরও দাবি করেন, ধনখড় নিয়ম, প্রথা ও শিষ্টাচারে বিশ্বাসী ছিলেন এবং গত কিছুদিন ধরে সেই নীতিগুলিকে উপেক্ষা করা হচ্ছিল।“তিনি কৃষকদের পক্ষে বারবার কথা বলেছেন, বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা চেয়েছেন। ২০১৪-পরবর্তী সরকারের প্রশংসা করলেও, ‘G2 শাসনব্যবস্থা’র মাঝে বিরোধীদের জায়গা দেওয়ারও চেষ্টা করেছেন।” এছাড়া কংগ্রেস নেতা পি. চিদাম্বরম বলেছেন,“ধনখড় 'সীমা' অতিক্রম করেছিলেন। সরকার তাঁর উপর আস্থা হারিয়েছিল। সেই কারণেই পদত্যাগ করতে হয়েছে।”
প্রোটোকল ভেঙে রাষ্ট্রপতি ভবনে উপস্থিতি
ধনখড়ের আচরণে বিস্মিত রাষ্ট্রপতি ভবনের কর্মীরাও। কারণ, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করার জন্য সাধারণত আগে থেকেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। অথচ এদিন কোনও তথ্য ছাড়াই রাত ৯টায় হঠাৎ রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছন তিনি। ধনখড় প্রোটোকল ভেঙে হঠাৎ রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন এবং সংবিধানের অনুচ্ছেদ অনুযায়ী পদত্যাগপত্র জমা দেন। তাঁর পদত্যাগ নিয়ে জল্পনা আরও বাড়িয়ে দেয় তাঁর এই আচরণ। সূত্রের দাবি, সরকারের সঙ্গে ধনখড়ের সম্পর্ক ক্রমেই অবনতি হচ্ছিল। আর ঠিক সেই কারণেই পদত্যাগ করতে হয় ধনখড়কে। কংগ্রেসের মতে, ধনখড় হয়তো বিজেপির অন্দরমহলে সংঘাতের শিকার হয়েছেন। সেই কারণেই তিনি পদত্যাগ করেছেন।
উল্লেখ্য, ধনখড় ১১ আগস্ট ২০২২ সালে উপরাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন এবং ২০২৭ সাল পর্যন্ত তাঁর মেয়াদে থাকার কথা ছিল। তবে তিনি মেয়াদপূর্তির আগেই পদত্যাগ করলেন। এর ফলে তিনি ভারতের তৃতীয় উপরাষ্ট্রপতি, যিনি পূর্ণমেয়াদ শেষের আগেই ইস্তফা দিলেন। তাঁর আগে ভিভি গিরি ও ভৈরো সিং শেখাওয়াত এই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।