Advertisment

WB Assembly By Elections 2024: কেন 'হাত' ছেড়ে ঐক্যের লড়াই বামফ্রন্টের? উপনির্বাচনে কৌশল কি সফল হবে?

West Bengal Assembly By Elections 2024: নির্বাচনী ময়দানে মুখোমুখি লড়াইয়ে দুই বিরোধী শক্তি বাম ও কংগ্রেস। অন্যদিকে তৃণমূল ও বিজেপি আসরে তো থাকছেই। কিন্তু এটা কি জোটপ্রেমের যবনিকা? নাকি ২০২৬ বিধানসভা ভোটের আগে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা?

author-image
Joyprakash Das
New Update
By Election Result, CPM-Congress Alliance

West Bengal Assembly By Elections 2024: বিধানসভা উপনির্বাচনে কেন হাত ছেড়ে লড়ছে বামফ্রন্ট?

West Bengal Assembly By Elections 2024: আপাতত কংগ্রেসের হাত ছেড়ে উপনির্বাচনে লড়াইতে নেমেছে বামফ্রন্ট। উত্তর ২৪ পরগণার হাড়োয়া বিধানসভা কেন্দ্র ছেড়ে এর আগেই ৫ আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে বামেরা। এবার কংগ্রেসও উপনির্বাচনের ৬ আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে। মোদ্দা কথা, নির্বাচনী ময়দানে মুখোমুখি লড়াইয়ে দুই বিরোধী শক্তি বাম ও কংগ্রেস। অন্যদিকে তৃণমূল ও বিজেপি আসরে তো থাকছেই। কিন্তু এটা কি জোটপ্রেমের যবনিকা? নাকি ২০২৬ বিধানসভা ভোটের আগে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের মাধ্যমে রাজনৈতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা? এই আলোচনাই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বাংলার রাজনীতিতে। 

Advertisment

২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করেই বামেদের ক্ষমতাচ্যুত করেছিল তৃণমূল। যদিও সেই মধুর সম্পর্ক ধুলিসাৎ হয়ে যায় কিছু সময়ের মধ্যেই। পরবর্তী ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনেই কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট হাত ধরাধরি করে লড়াইয়ের আসরে ঝাঁপিয়েছিল। বিগত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনগুলিতে বাম-কংগ্রেস এক সঙ্গে লড়াই করেছে। একযোগে পথে নেমে আন্দোলন করেছে। ৬ আসনের বিধানসভা উপনির্বাচনে একেবারে যেন বামফ্রন্টগত ভাবে লড়াইয়ের ঘোষণা হয়েছে। তাদের কোনও দলই দুটি আসনে প্রার্থী দেয়নি। এমনকী সিপিএমের একসময়ের শক্ত ঘাঁটি নৈহাটি কেন্দ্রটিও তারা ছেড়ে দিয়েছে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনকে। আবার হাড়োয়া কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছে আইএসএফ। 

২০২১ বিধানসভা নির্বাচনেও জোট হয়েছিল বাম ও কংগ্রেসের। সেই জোটে ছিল আইএসএফ-ও। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের জোটে আইএসএফ ছিল না। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যজুড়ে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস কোনও আসনে জিততে পারেনি। একমাত্র ভাঙড় কেন্দ্রে জয়লাভ করে ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের নওশাদ সিদ্দিকী। এবারও মুসলিম অধ্যুষিত হাড়োয়া বিধানসভা আসন বামেরা ছাড়ল আইএসএফকে! গতবারও এই কেন্দ্রে নওশাদদের প্রার্থী ছিল।

আরজি কর কান্ডে পথে নেমে নাগরিক সমাজ আন্দোলন করছে। কিন্তু রাজনৈতিক দিক থেকে বামেদের নেতা, কর্মী-সমর্থকদের বড় ভূমিকা ছিল আরজি কর সংক্রান্ত নানা আন্দোলনে, দাবি ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের। চিকিৎসক সংগঠনের নেতৃত্বের অনেকেই বাম মনোভাবাপন্ন। প্রকাশ্যে না বললেও বামফ্রন্ট এই উপনির্বাচনে মূলত ভোট-শতাংশ বৃদ্ধির দিকে নজর দিয়েছে, মত রাজনৈতিক মহলের। পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলনের ফসল ঘরে উঠতে পারে বলেও নেতৃত্বের একাংশ মনে করছে। নৈহাটির মতো আসন সিপিআইএমএল লিবারেশনকে ছেড়ে দিয়ে বামফ্রন্টের ঐক্যের চেহারা তুলে ধরতে চাইছে তাঁরা। 

অধীর চৌধুরী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকাকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বাম জোট নিয়ে জোরালো সওয়াল করতেন। এখন রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতিও পরিবর্তন হয়েছে। আলাপ-আলোচনা দূরে থাক দুতরফ থেকেই প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। এদিকে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বাম ও কংগ্রেস জোটের প্রার্থী বায়রন বিশ্বাস জয়ী হয়েছিলেন। এরাজ্যে তৃণমূলের শাসনকালে উপনির্বাচনে ২০ হাজারের বেশি ভোটে জয়ী হওয়া অত্যন্ত কঠিন। সেই পরিস্থিতিতে বড় জয় পেয়েও সকলকে অবাক করে কংগ্রেস বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস তৃণমূলের পতাকাতলে চলে যান। জয়ের আনন্দে সাময়িক আবির মাখামাখি করলেও রাজ্য বিধানসভায় শূন্যর অপবাদ ঘোচেনি বাম-কংগ্রেস জোটের। বামেদের একাংশের বক্তব্য, সিপিএম প্রার্থী জয়ী হলে দলবদল সহজে হত না। তবে ২০১১ পরবর্তী সময়ে একাধিক বামনেতা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছে এটাও বাস্তব। 

আরও পড়ুন ৬ বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় বিরাট চমক তৃণমূলের! কোন কেন্দ্রে কে? জানুন

রাজনৈতিক মহলের মতে, মূলত এরাজ্যে কংগ্রেসের সাংগঠনিক শক্তি রয়েছে মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলায়। মালদা জেলা লোকসভা নির্বাচনে এরাজ্যে কংগ্রেসকে শূন্য হতে দেয়নি। গণি খানের পরিবার সম্মান রেখেছে কংগ্রেসের। তবে বামেরা এই রাজ্যে লোকসভা ও বিধানসভা দুই ক্ষেত্রেই এখনও শূন্যের অপবাদ ঘোচাতে পারেনি। দক্ষিণের চার ও উত্তরের দুই কেন্দ্রে কংগ্রেসর তেমন সাংগঠনিক শক্তি নেই। রাজনৈতিক মহলের মতে, মালদা ও মুর্শিদাবাদের কোনও আসনে উপনির্বাচন হলে হয়তো অন্যভাবে চিন্তা করত বামেরা। এবারের ৬ আসনের উপনির্বাচনে নিজেদের কব্জির জোর পরখ করতে চান বিমান বসু, মহম্মদ সেলিমরা।

বামফ্রন্ট হাড়োয়া কেন্দ্রে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেনি। নওশাদের প্রার্থীকে হাড়োয়ায় সমর্থন করছে বামফ্রন্ট। নৈহাটিতে লিবারেশনের প্রার্থী, অন্যদিকে হাড়োয়ায় নওশাদদের আইএসএফের প্রার্থী। ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট হলেও এই কম্বিনেশন দেখে মুচকি হাসছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। মোদ্দা কথা, সামাজিক আন্দোলনের ফসল কতটা ঘরে উঠবে সেদিকে নজর রয়েছে রাজনৈতিক মহলের। রাজনৈতিক মহলের মতে, ৬ আসনের উপনির্বাচনে মূল লড়াই হবে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। দেখার বিষয় বামফন্ট কতটা টক্কর দিতে পারে। বামেরা ভোট শতাংশ আদৌ বৃদ্ধি করতে সক্ষম হবে কি? তাঁরা কি দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসতে পারবে? বামেদের শূন্য ঘোচানো কি সহজ হবে?পাশাপাশি বিনাজোটে কংগ্রেস কত শতাংশ ভোট পায়, সেদিকেও নজর থাকছে রাজনৈতিক মহলের।

CONGRESS left front CPIM West Bengal Bengal Bypolls By-Election
Advertisment