দীর্ঘদিন ধরে সকালে ওঠার বাঁধাধরা নিয়ম নেই। দিনটা কেটে যায় খাটের ওপর। নীচে নামতে পারেন না। বিছানাটাই এখন তাঁর জগৎ। শুক্রবার সকাল থেকেই ভয়ঙ্কর সিওপিডি-র (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ) সমস্যা শুরু হয়। সকালে ঘুম থেকে নিত্যদিনের কাজ করার মতো যেটুকু শারীরিক শক্তি প্রয়োজন, শুক্রবার তাও ছিল না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। অথচ, একটা সময় ছিল সকাল সাড়ে নটার মধ্যে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে পৌঁছে যেতেন তিনি। কিন্তু এখন সকালে ঘুম থেকে ওঠার তেমন বাঁধাধরা নিয়ম নেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। সব সময় বিছানায় তিনি বসতেও পারেন না শারীরিক দুর্বলতার জন্য। এরমধ্যে শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হল অতিরিক্ত বিপত্তি। এমনই অবস্থা হল যে তাঁর খাওয়া-দাওয়া সব বন্ধ হয়ে গেল এবং কথাবার্তা প্রায় না বলার মতনই অবস্থা।
জানা গিয়েছে, একদিকে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা, তার ওপর রক্তচাপ অত্যন্ত কমে যাওয়া। হিমোগ্লোবিন কমে যাওয়া। নানা ধরনের শারীরিক কষ্ট ভোগ করছিলেন সকাল থেকেই। পাম অ্যাভিনিউর ফ্ল্যাটে কিছুতেই বিছানাতেও উঠে বসতে পারছিলেন না। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শরীরটা এতটাই খারাপ ছিল সকাল থেকে খাওয়া-দাওয়াও করতে পারেননি। শরীর অত্যন্ত দুর্বল হওয়ায় বিছানায় বসারও ক্ষমতা ছিল না এদিন।
আরও পড়ুন: ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের প্রতিবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখলেন মুখ্যমন্ত্রী
শক্ত ধরনের কোনও খাবার খেতে পারেন না বুদ্ধবাবু। বাংলার এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে নরম জাতীয় খাবার খেতে হয়। ভাতও পেষ্টিং করে খেতে দেওয়া হয়। জানা গেছে এদিন মুখে খাবারই তুলতে পারছিলেন না। দুপুরে যখন ভাত খেতে পারলেন না তখন চিন্তিত হয়ে পড়েন তার স্ত্রী ও মেয়ে। সন্ধের সময় ফোন করা হয় ডাক্তার ফুয়াদ হালিমকে।
সন্ধে সাড়ে ছটা নাগাদ হালিম আসেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে। তিনি তাঁর স্বাস্থ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন এবং মত দেন অবিলম্বে হাসপাতলে ভর্তি করতে হবে। সেইমতো তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে। জানা গেছে, এই সিওপিডি জনিত কারণে নানা ধরনের স্টেরয়েডধর্মী ওষুধ খেতে হয় বুদ্ধবাবুকে। যার ফলে শরীরে নানা ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় তাঁর।