/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/07/jaipur-migrant-workers-accident-2025-09-07-09-03-57.jpg)
ভয়াবহ দূর্ঘটনা, হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বহুতল, মৃত্যু বাবা-মেয়ের, শোকের ছায়া এলাকায়
Migrant Worker Death: রাজস্থানের জয়পুরে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হলেন বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিক পরিবার। শুক্রবার গভীর রাতে টানা বৃষ্টিতে একটি পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়ে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর কাশিপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রভাত বাগদি (৩৫) এবং তাঁর পাঁচ বছরের মেয়ে পিউ বাগদির। গুরুতর আহত অবস্থায় প্রভাতের স্ত্রী সুমিত্রা বাগদি বর্তমানে জয়পুরের এক হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। একই ঘটনায় আরও চারজন জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শনিবার সকালে এই মর্মান্তিক খবর পৌঁছাতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে পূর্বস্থলীর ঝাউডাঙা পঞ্চায়েতের কাশিপুর গ্রামে। শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়েছে মৃতদের পরিবার ও গ্রামবাসীরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আর্থিক দুরবস্থার কারণে প্রভাত ও তাঁর পরিবার বহু বছর আগে জীবিকার সন্ধানে ভিনরাজ্যে পাড়ি জমান। প্রায় দুই দশক ধরে বাগদি পরিবার রাজস্থানের জয়পুরের সুভাষচকে ভাড়া বাড়িতে থেকে সোনা-রুপোর অলংকার তৈরির কাজ করতেন। ওই বহুতলে আরও কয়েকজন পূর্বস্থলীর শ্রমিকও ভাড়া থাকতেন।
আরও পড়ুন- নবম-দশমের পরীক্ষায় বসবেন ৩,১৯ ৯১৯ পরীক্ষার্থী, কোমর বেঁধে আসরে প্রশাসন
শুক্রবার রাতভর বৃষ্টি চলার মধ্যেই হঠাৎই বিকট শব্দে ভেঙে পড়ে ওই বহুতল বাড়ি। মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েন ভাড়াটিয়ারা। খবর পেয়ে পুলিশ ও উদ্ধারকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাতভর অভিযান চালিয়ে ধ্বংসস্তূপ থেকে একে একে সকলকে উদ্ধার করেন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা প্রভাত ও তাঁর মেয়েকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রভাতের স্ত্রী সুমিত্রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন সোনা বাগদি, ঋষি বাগদি, সুদেব বাগদি ও সুপর্ণা বাগদি।
মৃতের দুই বৌদি পূর্ণিমা ও অনিমা বাগদি জানান, ২০০৪ সাল থেকে তাঁদের পরিবারের পুরুষেরা জয়পুরে গিয়ে ওই কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের মতে, টানা বৃষ্টির কারণে ভাড়া বাড়ি ভেঙে পড়ায় এই মর্মান্তিকঘটনা ঘটেছে। প্রভাত ও তাঁর ছোট মেয়ের অকালমৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। গ্রামে থাকা প্রভাতের বৃদ্ধা মা শোকে ঘন ঘন সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ছেন।
আরও পড়ুন-দলীয় কার্যালয় লাগোয়া ঘরেই চলত ভয়ঙ্কর যৌন নির্যাতন, বিরাট অভিযোগে গ্রেফতার TMC-র তিন ডাকাবুকো নেতা-কর্মী
এই ঘটনার পর বাংলার শ্রমিকদের ভিনরাজ্যে কাজ করতে যাওয়ার বাস্তবতা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “একশো দিনের কাজ বন্ধ থাকায় বহু গরিব পরিবারকে ভিনরাজ্যে যেতে বাধ্য হতে হচ্ছে।” অন্যদিকে, বিজেপি নেতা প্রহ্লাদ ঘোষের অভিযোগ, “বাংলায় কাজের সুযোগ না থাকায় শ্রমিকদের বাইরে যেতে হচ্ছে, এর জন্য দায়ী রাজ্যের সরকার।”