Pakistani spy Arrested: ভারতে থেকে পাকিস্তানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির দায়ে দু’জনকে গ্রেপ্তার করলো বেঙ্গল এসটিএফ। ধৃতদের নাম মুকেশ রাজক এবং রাকেশ গুপ্তা। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের মেমারির একটি আবাসন এবং শহর বর্ধমানে দুর্ধর্ষ অভিযান চালিয়ে এসটিএফ এই দুই পাকিস্তানি গুপ্তচরকে পাকড়াও করে। আদালতের নির্দেশে ধৃতরা এখন এসটিএফ হেফাজতে রয়েছে।
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার আবহে জ্যোতি মালহোত্রার গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনা ভারতে পাকিস্তানি গুপ্তচরবৃত্তির বিষয়টি সামনে আসে। এবার বাংলাতেও পাকিস্তানি গুপ্তচরের সন্ধান মিলল। জানা গিয়েছে,এসটিএফ পূ্র্ব বর্ধমান থেকে যে দু’জন গুপ্তচরকে পাকড়াও করেছে তারা মেমারি, বর্ধমান সহ বিভিন্ন জেলার দোকান থেকে বেনামে সিম কার্ড তুলতো। সেই মোবাইল নম্বরগুলি হোয়াটসঅ্যাপ খোলার জন্য তারা গুপ্তচর সংস্থার কাছে পাঠাতো। এমনকি তারা হোয়াটসঅ্যাপের জন্য ’ওটিপি’ শেয়ারও করতো। পাকিস্তান যোগে ধৃত দুই যুবক মেমারির একটি আপার্টমেন্টে ভাড়া থাকতো বলেই জানা গিয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, বেনামে তোলা মোবাইল সিমকার্ড নম্বর গুলি "হানিট্র্যাপের" কাজে ব্যবহার হতো। তাদের টার্গেটে থাকতো ভারতীয় সেনাবাহিনীর আধিকারিকরা। হানিট্র্যাপের শিকার ব্যক্তিদের কাছ থেকে ধাপে ধাপে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে তা পাকিস্তানের বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাচার করা হত। গোপন সূত্রে সেই খবর পেয়ে, শনিবার গভীর রাতে বর্ধমানের দুটি পৃথক জায়গায় অভিযান চালিয়ে এসটিএফ দুজনকে পাকড়াও করে। ধৃতদের মধ্যে মুকেশকে বর্ধমান থেকে আর রাকেশ মেমারির একটি ভাড়াবাড়ি থেকে বেঙ্গল এসটিএফ গ্রেপ্তার করে কলকাতায় নিয়ে যায়।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি এবং রাজ্যের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স একাধিকবার তদন্তে নেমে দেখতে পেয়েছে,’সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ভুয়ো পরিচয় দিয়ে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ভারতীয় সেনা ও টেলিকম সংস্থার কর্মীদের টার্গেট করছে। এই হানিট্র্যাপের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে ধাপে ধাপে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে যে পাকিস্তানের বিভিন্ন সংস্থার কাছে পাচার করা হয়,সেই ব্যাপারেও এক প্রকার নিশ্চিত গোয়েন্দারা।
এদিকে বেঙ্গল এসটিএফের অভিযান নিয়ে বর্ধমানে শোরগোল পড়ে যায়। মঙ্গলবার রাতে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনেন বর্ধমানের একটি বেসরকারী নার্সিংহোমের ম্যানেজার প্রাণকৃষ্ণ ঘোষ। তিনি জানান,রাকেশ গুপ্তা নামের ওই ব্যক্তি ৩০ জুন তারিখে হার্ণিয়া চিকিৎসার জন্য তাদের নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন। তার পেটে ব্যাথা, বমি সহ নানা উপসর্গ ছিল। এক মেডিসিন ডাক্তারের অধীনে সে ভর্তি হয়। ৩ জুলাই এস টি এফের টিমের আধিকারিকরা তার কাছে এসে নিজেদের পরিচয় দেন। তারা রাকেশ গুপ্তাকে জেরা করার কথা বলেন। জেরার পর বর্ধমান থানার আই সি জানান রোগী ছাড়া পাবার আগে যেন পুলিশকে জানানো হয়। চারদিকে এসটিএফ পাহারায় থাকলেও কিন্তু কোনো অসুবিধা করেনি। সেইমত ৪ জুলাই রাকেশ গুপ্তার ছুটি হবার পর নার্সিংহোমের বাইরে বেরোতেই তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় এসটিএফ।