২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে নতুন দল তৈরি করে বামেদের সঙ্গে জোটে গিয়েছিল ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্ট। বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে ব্রিগেডের মঞ্চে হাজির ছিলেন ফ্রন্টের প্রধান উদ্যোক্তা আব্বাস সিদ্দিকী। আপাতত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোটের কথা মাথায় না রেখে এককভাবে লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে আইএসএফ। দলের চেয়ারম্যান বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, 'রাজ্যজুড়ে সংগঠন মজবুত করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে আগামী জানুয়ারিতে রাজ্য সম্মেলন হবে।'
সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনায় আইএসএফকে সভা করতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। এই অভিযোগ করেছে দল। তবে গন্ডগোলের আশঙ্কায় অনুমতি দেওয়া হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, 'পুলিশ আমাদের সভা করতে দিচ্ছে না। আমাকে আটকানোর চেষ্টা করছে। শান্তিপূর্ণ নিরস্ত্র অনুষ্ঠান করলে কীসের অনুমতি লাগবে? পুলিশকে সামনে রেখে গণতান্ত্রিক ও ন্য়ায়ের আন্দোলন বন্ধ করা হচ্ছে। এখন শাসকদলের বাড়ি থেকে বোম-গুলি উদ্ধার হচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিরোধীদের বাড়ি থেকে বোম-গুলি-অস্ত্র উদ্ধার হবে।' পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের নামে মিথ্যা কেস দেওয়া হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আইএসএফের একমাত্র বিধায়ক।
তবে সভা-সমাবেশ করার ব্যাপারে পুলিশের সঙ্গে তাঁরা ঝঞ্ঝাটে যাবে না বলেও জানিয়েছেন নওশাদ। তিনি বলেন, 'পুলিশ-প্রশাসন আমাকে আটকেছিল বলে ধাক্কা দিয়ে চলে যাবে তাও নয়। ঠিকঠাক কর্তব্য না করলে আইন দিয়ে লড়াই করব। আদালতের দ্বারস্থ হব।' সব বিষয়ে আদালতে যেতে হলে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সরকার গঠন করার কী দরকার আছে? সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন মতুয়াগড় নদিয়ায় জমি পোক্ত করতে মুকুলে ভরসা দিদির? জোরালো ইঙ্গিতে চড়ছে চর্চা
গত বিধানসভা নির্বাচনে জোট করে লড়াই করেছিল সেক্যুলার ফ্রন্ট। এখনও জোট নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। তবে জয়ের লক্ষ্যেই প্রার্থী দেওয়া হব বলে জানিয়ে দেন আইএসএফ বিধায়ক। নওশাদ বলেন, 'মূলত ৩০টা বিধানসভা আসনে আমরা লড়াই করেছি। সেইসব এলাকা ছাড়া যেখানে আমাদের সংগঠন আছে সেখানে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। জোট নিয়ে এখনও কথা হয়নি। আগামী দিনে চলার পথে আলোচনা হলে সেক্ষেত্রে কি হয় দেখা যাবে। জানুয়ারিতে প্রথম প্রকাশ্য রাজ্য সম্মেলন হবে। এখনও স্থান ঠিক করা হয়নি।' দুই ২৪ পরগনা ছাড়া মালদা, মুর্শিদাবাদ, হাওড়া, হুগলি ও কোচবিহারে পঞ্চায়েত প্রার্থী দেওয়া নিয়ে তোড়জোড় শুরু করেছে আইএসএফ।
২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া থেকে প্রচার ও ভোটের দিন লাগাতার সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক মহলের মতে, পঞ্চায়েতে ভোট দিতে না পারার ক্ষোভ মানুষ উগরে দিয়েছিল ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে। জানা গিয়েছে, এবার পঞ্চায়েতে ভোট দিতে যাতে কাউকে বাধা না দেওয়া হয় সেবিষয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা নেতৃত্বদের জানিয়ে দিয়েছেন।
নওশাদের স্পষ্ট বক্তব্য, 'গত বিধানসভায় সিএএ দেখিয়ে ভোট নিয়েছে, বিজেপির জুজুতে ভোট হয়েছে। জিতেছে তৃণমূল। এবার তা হবে না। তবে এবারও যদি পঞ্চায়েত ভোট ২০১৮-এর মতো হয় তাহলে ২০১৯-এর থেকেও ২০২৪-এ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ফল আরও খারাপ হবে।'