West Bengal Tab Scam: ট্যাব প্রতারণা কাণ্ডে মালদার বৈষ্ণবনগর থেকে গ্রেফতার আরও এক। এবারে গ্রেফতার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিক। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ বৈষ্ণবনগর থানার চকসহেরদি গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে। ধৃতের নাম সুব্রত বসাক। তাঁর বাড়ি থেকে বেশ কিছু নথি ও ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
ট্যাব কেলেঙ্কারির খবর সামনে আসতেই ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল ও মাদ্রাসা ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশন মালদা শাখার সদস্যরা সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করলেন‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্পে জালিয়াতিতে যুক্ত নয় তারা। তাঁরা মনে করেন এই পোর্টাল হ্যাক করা হয়েছে। স্কুল শিক্ষা দফতর যখন এই অ্যাপ চালু করে তার কিছুদিন পর তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে পুনরায় নতুন করে নতুন আইপি নম্বর ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়। সেই নিয়ম মেনেই তরুণের স্বপ্ন প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করা হয়। এই কেলেঙ্কারিতে শিক্ষা দফতরের কর্তারা জড়িয়ে থাকতে পারেন। এই কেলেঙ্কারি পর্দাফাঁস হতেই আতঙ্কে রয়েছেন তাঁরা। সমাজে সম্মানহানি হয়েছে তাঁদের।
শুক্রবার মালদা প্রেস কর্নারে সাংবাদিক বৈঠক করেন ওয়েস্ট বেঙ্গল স্কুল ও মাদ্রাসা ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশন মালদা শাখার সম্পাদক কালিশঙ্কর দাস দাবি করেন, 'ছাত্র-ছাত্রীদের বাংলা শিক্ষা পোর্টালে পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্ট নম্বরের লাস্ট আপডেট এবং আইপিও অ্যাড্রেস চেক করা হোক। ব্যাংক ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে বেনিফিশিয়ারির নাম, আইএফসি কোড এবং অ্যাকাউন্ট নম্বর মিলিয়ে তবেই টাকা ছাড়া হয় যেটা আমরা কন্যাশ্রী এবং শিক্ষাশ্রী প্রকল্পের ক্ষেত্রে দেখেছি। কিন্তু এক্ষেত্রে অর্থাৎ ১০,০০০ টাকা করে দিতে তা করা হয়নি বলে আমাদের মনে হচ্ছে। এতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কিছু দায় থেকে যায়। এখানে স্কুল এবং মাদ্রাসার করণিকরা জড়িত নয় অথচ তাঁদের জড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের সম্মানহানি করা হচ্ছে। তবে তদন্তের ক্ষেত্রে যদি আমাদের তলব করা হয় আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব। আমরা চাই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক আমরা ডিআইকে সেটা লিখিত আকারে জানিয়েছি।'
আরও পড়ুন দক্ষিণ ২৪ পরগনার স্কুলে-স্কুলে ট্যাব দুর্নীতি! বিহারের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে লক্ষ-লক্ষ টাকা
দক্ষিণ মালদা জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক অম্লান ভাদুড়ি বলেন, 'ট্যাব কেলেঙ্কারিতে এখনও পর্যন্ত বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছে। যার সঙ্গে এখন ব্যাঙ্কের সিএসপির মালিক যুক্ত থাকা অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার হয়েছে। যার মধ্যে তৃণমূল নেতার ছেলেও রয়েছে। এর থেকে একটা স্পষ্ট হয়েছে তৃণমূল দল ট্যাব কেলেঙ্কারিকে একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। এখানে ওপর নিচ বলে কিছু না একদম নীচু তলার ক্লারিকাল টিচার এবং উপর লেবেলে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা সকলেই যুক্ত আছে। না হলে এটা সম্ভব নয়। এত টাকা অন্য জায়গায় সিফট করে গেল এটা তদন্ত করে দেখা উচিত। দরকার পড়লে এটা সিবিআইকে দেওয়া উচিত। কারণ এর একটা পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দরকার। ছাত্রদের টাকা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা কখনওই মেনে নেওয়া যায় না।'
আরও পড়ুন ট্যাব কেলেঙ্কারির পর এবার মিড-ডে মিলের চাল চুরি! কাঠগড়ায় প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক
জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র আশিস কুন্ডু বলেন, 'আজকে যে কেলেঙ্কারির কথা বলছেন রাজ্যের সর্বোচ্চ আধিকারিক যাঁরা আছে তাঁদের নির্দেশে জেলা লেভেলে হাই কমিটি তদন্ত চলছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু গ্রেফতার হয়েছে। মালদা জেলা প্রশাসন অত্যন্ত সক্রিয়। আপনার নিশ্চিন্তে থাকুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প তরুণের প্রকল্পটিকে যারা কালিমালিপ্ত করতে চেয়েছেন প্রত্যেকে গ্রেফতার হবে।'