Advertisment

হাওয়ালা-সারদা থেকে নিয়োগ দুর্নীতি: তদন্তে 'রহস্যময়' ডায়েরির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, কেন?

মতামত জানালেন প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস।

author-image
Joyprakash Das
New Update
Why role of diary is important in investigating recruitment corruption from hawala and sarda case

গোয়েন্দাদের নজরে পার্থ-অর্পিতার ব্যবহার করা লাল ডায়ারি।

তোলপাড় হওয়া যে কোনও বড় আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ডায়েরির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থেকেই যায়। অন্তত অতীত থেকে বর্তমান তাই বলছে। তবে সেই ডায়েরি আদৌ তদন্তের কাজে ব্যবহার করা হবে কিনা, না উদ্ধার হওয়ার পর উধাও হয়ে যাবে, সেটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। প্রাক্তন সিবিআই আধিকারিক তথা বিহারের পশুখাদ্য কেলেঙ্কারির উদ্ঘাটন করা আইপিএস ড. উপেন বিশ্বাসের অভিমত, 'উদ্ধার হওয়া ডায়েরির মাধ্যমে তদন্তের পথ খুলে যেতে পারে।' এসএসসি দুর্নীতি নিয়োগ মামলায় অর্পিতার বাড়ি থেকে কালো ডায়েরি, পকেট ডায়েরি উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। ওই ডায়েরি থেকে জানা যেতে পারে অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুই ফ্ল্যাট থেকে বস্তা বস্তা টাকা, সোনা-রুপা, নথি উদ্ধারের গোপন কাহিনীর রহস্য।

Advertisment

সরদা চিটফান্ড কেলেঙ্কারি মামলায় 'লাল' ডায়েরি মিলেছিল। সিবিআই-ইডি সূত্রে খবর, সারদার মিডল্যান্ড পার্কে সারদা-কর্তা সুদীপ্ত সেনের অফিস ঘরের সামনে ওই ডায়েরি রাখা থাকত। কাউকে কোনও অর্থ দিলে তাঁর নাম ও টাকার পরিমান ওই ডায়েরি লেখা হত। সেই ডায়েরি উদ্ধার হলেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে যায়নি বলেই দাবি। তদন্তকারীদের দাবি, ওই ডায়েরি গবেষণা করলেই অনেক তথ্য় মিলতে পারত। এদিকে এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে কালো ডায়েরি ও পকেট ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছে ইডি সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন- ‘প্রায়ই আসতেন ফ্ল্যাটে, টাকার পাহাড়ের মালিক পার্থই’, সব ‘ফাঁস’ করলেন অর্পিতা

হাওয়ালা অর্থনৈতিক কেলেঙ্কারিতে নব্বইয়ের দশকে সুরেন্দ্র জৈনের 'রহস্যময় ডায়েরি' নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল ভারতের রাজনীতি। ওই ডায়েরিতে দেশের তাবড় রাজনৈতিক নেতাদের নাম কোড হিসাবে লেখা হয়েছিল বলে দেশজুড়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তারপর ২০১৭-১৮-তে আরেক বেসরকারি আর্থিক সংস্থা সাহারার সর্বময় কর্তা সুব্রত রায়ের ডায়েরি নিয়েও রহস্য দাঁনা বেধেছিল। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এইসব উদ্ধার হওয়া ডায়েরি সঠিক গবেষণা করলে তদন্তের গোপন রহস্য উদ্ঘাটন করা সহজ হতে পারে। তবে ডায়েরি উদ্ধারের পর তার হাল কি হয় তা নিয়ে সন্দিহান দাপুটে গোয়েন্দারা।

আরও পড়ুন- টনক নড়ল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের, পার্থকে ছেঁটে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু

ইতিমধ্যে অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। কালো ডায়েরি আরও দিক নির্দেশ করতে পারে বলেই অভিজ্ঞমহলের ধারনা। প্রাক্তন দুঁদে গোয়েন্দা ড. উপেন বিশ্বাস ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'তদন্তের ক্ষেত্রে যে কোনও ডকুমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তদন্তকারী সংস্থা ডকুমেন্টের ওপর জোর দেয়। সেক্ষেত্রে ডায়েরি বা যে কোনও নথি হাতে এলে সেটা বারে বারে পড়া দরকার। সেখান থেকে মূল বিষয় বের করতে হবে। ডায়েরি বা নথির লেখা একাধিকবার পড়লে কিছু না কিছু মিলবেই। সেটই হয়তো তদন্তের ক্ষেত্রে বড় বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।'

উপেনবাবুর মতে, 'মানুষের সব কিছু মনে থাকে না। ডায়েরি বা খাতায় সেগুলি লিখে রাখবেই। প্রতিদিন না লিখলেও মাঝে-মধ্যে লিখবে। লিখিত বিষয় তদন্তের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নথি। সেই লিখিত নথি বারে বারে পড়ে মামলার সঙ্গে কানেক্ট করতে হবে। তদন্তের ক্ষেত্রে সঠিক পথ দেখাতে পারে ডায়েরি বা নথি।'

WB SSC Scam Enforcement Directorate arpita chatterjee partha chatterjee
Advertisment