পারিবারিক বিবাদ ঘিরে নির্জন আমবাগানে নিয়ে গিয়ে স্বামীর মাথায় আঘাত করে গলা টিপে খুন করার অভিযোগ উঠলো স্ত্রীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মালদার ভূতনি থানার দক্ষিণ চণ্ডীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নীলকন্ঠটোলা এলাকায়। এই ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত ওই মহিলা সান্তনা কুমারী মহালদার আটক করেছে।
পুলিশি জেরায় ওই মহিলা জানিয়েছে, তিনি স্বামীর সঙ্গে গত ৬ মাস ধরে দিল্লিতে শ্রমিকের কাজ করতেন। কিন্তু চক্রান্ত করে তার স্বামী দিল্লির যৌনপল্লীতে তাঁকে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছিল। তারপর তিনি মালদার ভুতনিতে জামাইবাবুর বাড়ি পালিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু স্ত্রীর পিছু নিয়ে দিল্লি থেকে তার স্বামী সেখানেও চলে আসে। জোর করে তাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল বলে দাবি মহিলার। তারপরে এই ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম উত্তম মহালদার (৩৫)। তার বাড়ি চাঁচোল মহকুমার রতুয়া থানার বালুপুর এলাকায়। শান্তনার সঙ্গে গত পাঁচ বছর আগে বিয়ে হয় উত্তমের। সান্তনার বাবার বাড়ি ভূতনি থানা এলাকায়। তাদের একটি দুই বছরের কন্যা সন্তান রয়েছে। গত ৬ মাস ধরে উত্তম তার স্ত্রী সান্তনাকে নিয়ে দিল্লিতে দিনমজুরির কাজে যুক্ত ছিল। সেখানেই বাড়ি ভাড়া করে থাকত তারা।
আরও পড়ুন- West Bengal News live Updates:SSC-এর চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়াতে মরিয়া রাজ্য, আবারও নতুন তৎপরতা সরকারের
পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ওই মহিলার এক জামাইবাবু অশোক মণ্ডল বলেন, "গত সপ্তাহের শুক্রবার ছোট শ্যালিকা সান্তনা তার নাবালিকা মেয়েকে নিয়ে দিল্লি থেকে আমাদের বাড়ি পালিয়ে আসে। সে বলে তার স্বামী নাকি ওকে দিল্লির কোনও এক পতিতালয়ে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন- Mamata Banerjee: মমতার বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগে দিল্লি পুলিশে নালিশ করলেন কে? কারণও জোর চর্চায়!
বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গোলমাল হয়ে আসছে ওদের মধ্যে। এরপর সোমবার সান্তনার স্বামী উত্তম আমাদের বাড়ি চলে আসে। শ্যালিকাকে জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। ওই দিন রাত থেকে গোলমাল চলছিল। এদিন সকালে আমি কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলাম। এরপর গ্রামবাসীদের মুখে শুনতে পাই শ্যালিকার হাতে তার স্বামী খুন হয়েছে। এই ঘটনার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে শান্তনাকে আটক করে নিয়ে যায়।"
আরও পড়ুন- operation mahadev:পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় যুক্ত জঙ্গিরা খতম! 'অপারেশন মহাদেব' ১০০ শতাংশ সফল, জানালেন অমিত শাহ
এদিকে, ভূতনি থানার পুলিশ জানিয়েছে প্রাথমিক জেরায় ওই মহিলা জানিয়েছেন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পারিবারিক বিবাদ এবং নারী পাচার চক্র ও দেহ ব্যবসায়ীদের হাতে তাকে বিক্রি করে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছিল। সেই কারণেই তিনি দিল্লি থেকে তার জামাইবাবুর বাড়ি পালিয়ে এসেছিলেন। সেখান থেকেও জোর করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল তাকে। এরপরই এই ঘটনাটি ঘটেছে। ইতিমধ্যে পুলিশ মৃতের পরিবারকে খবর পাঠিয়েছে। এরই পাশাপাশি মৃতদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।