পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে আগে ধর্মীয় গোলমাল কম হয়নি। এবারেও তার বিচিত্র নয়। পাঞ্জাব প্রদেশের পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার হিন্দু মন্দির হামলায় সংযুক্ত ২০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, আট বছর বয়সি ছেলের আদালতে মুক্তির পরই ক্ষোভে ফেটে পড়েন অনেকেই। তার প্রতিহিংসা স্বরূপ রহিমইয়ার খান জেলার ভং এলাকায় শত শত মানুষ লাঠি, পাথর ও ইট নিয়ে মন্দিরে হামলা চালায়। মন্দিরের কিছু অংশ পুড়িয়ে দেয় এবং বিগ্রহের ক্ষতি করে। জানা যায়, বছর আটের সেই শিশুটিকে একটি স্থানীয় বিদ্যালয়ের সামনে প্রস্রাব করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাতে ইসলামিক ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে বলেই দাবি তাদের। শিশুটিকে মুক্তি দেওয়ার ফলস্বরূপ এই হামলা চালায় তারা।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অমান্য করার অপরাধেই, পুলিশি গ্রেফতারির পথে বিষয়টি এগিয়ে যায়। এইসব ঘটনা আন্তর্জাতিক স্তরে দেশের বদনাম করছে বলেই জানিয়েছেন কোর্টের আধিকারিকরা। জেলা পুলিশ কর্মকর্তা (ডিপিও) আসাদ সরফরাজ সাংবাদিকদের বলেন, "আমরা এখন পর্যন্ত ভংয়ের মন্দিরে হামলার সঙ্গে জড়িত ২০ জন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছি। এবং ভবিষ্যতে এর সংখ্যা বাড়তেই পারে। পুলিশ ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করছে।"
আরও পড়ুন নিশানায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী! তালিবানদের বোমা বর্ষণে নিহত ৮, তীব্র আতঙ্ক কাবুলে
তিনি আরও বলেন, "মন্দিরে হামলায় জড়িত থাকার জন্য ১৫০ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ এবং পাকিস্তান দণ্ডবিধির অন্যান্য ধারার অধীনে একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এই অপরাধে জড়িত প্রত্যেক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করা হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মন্দিরের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে।" যে কোনও ঘটনার রেশ ধর্মীয় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন নেই বলেই জানান তিনি।
শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি গুলজার আহমেদ জানান, মন্দিরে ভাঙচুর দেশের সকল নাগরিকের জন্য লজ্জা এবং এর কারণ হিসেবে পুলিশের নীরব দর্শকের মতো কাজকে দায়ী করেন তিনি। প্রধান বিচারপতি আট বছরের ছেলেকে গ্রেফতারের বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং জিজ্ঞাসা করেন পুলিশ অপ্রাপ্তবয়স্কদের মানসিক ক্ষমতা বোঝার অক্ষম কি না। পাকিস্তানের পার্লামেন্ট শুক্রবার একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে মন্দির হামলার নিন্দা জানিয়েছে। মামলার শুনানি ১৩ আগস্ট পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন তালিবানদের গুলিতে নিহত আফগান সরকারের মিডিয়া প্রধান
ভারতের পক্ষ থেকেও এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। হিন্দুরা পাকিস্তানে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং এইভাবে কোনও সম্প্রদায়ের ধর্মের স্বাধীনতায় এবং তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়ে হামলা চালানো অপরাধমূলক। নয়া দিল্লিতে পাকিস্তানি দূতাবাসের আধিকারিকদের ভর্ৎসনা করে ঘটনার প্রতি তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন