Lok Sabha Election: লোকসভার সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা অতি শীঘ্র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে পাঠাতে চলেছে বঙ্গ বিজেপি। রাজ্যের সাধারণ সম্পাদকরা এই প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা পাঠাবেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের মাধ্যমে। রাজ্য থেকে প্রেরিত তালিকার উপর ভিত্তি করেই আলোচনায় বসবেন মোদী-শাহরা। এই বৈঠকে উপস্থিত থাকবে রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বও। তবে এই প্রার্থী তালিকা থেকেই যে সমস্ত কেন্দ্রের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে, তেমন কোনও স্থিরতা নেই।
এই মুহূর্তে রাজ্যে যেহেতু জোনভিত্তিক দায়িত্বে রয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদকরা, তাই তাঁদের প্রার্থী তালিকাকে আলাদা গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে সূত্রের খবর। মঙ্গলবার নিউ টাউনের এক হোটেলে বৈঠকে বসেছিল রাজ্য বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব। সেখানে প্রার্থী তালিকা নিয়ে অল্প বিস্তর আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু ওই বৈঠকে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের অনেকেই ২০১৯ লোকসভা ভোটে প্রার্থী হতে পারেন। ফলে, নিজের কথা নিজে বলাটা হাস্যকর বিষয় হবে বলে ওই বৈঠকে প্রার্থীপদ প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনাই হয়নি। মঙ্গলবারের বৈঠকে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন ও প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্স-এর বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আরও পড়ুন- রাজ্যে একাই লড়বে তৃণমূল কংগ্রেস: মমতা
বিজেপি-র এক শীর্ষনেতার বক্তব্য, প্রার্থী তালিকা নিয়ে যতই আলোচনা হোক, তৃণমূল কংগ্রেস এ রাজ্যে লোকসভার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার আগে বিজেপি প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে না। কারণ, আগে বিজেপি দেখে নেবে তৃণমূল কাদের প্রার্থী করে, এরপরই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে বঙ্গ বিজেপি।
রাজনীতির কারবারিদের মতে, তৃণমূল সাংসদদের অনেকেই গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। তাছাড়া এমনটাই দাবি করে আসছেন তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে যাওয়া মুকুল রায়ও। ইতিমধ্যে বিষ্ণুপুরের তৃণমূল সাংসদ সৌমিত্র খাঁ এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা মুকুল রায়ের হাত ধরেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। বোলপুরের সাংসদ অনুপম হাজরাকেও তৃণমূল কংগ্রেস বহিষ্কার করেছে। সূত্রের খবর, এই সাংসদ এখন অনেকটাই ঝুঁকে রয়েছেন বিজেপির প্রতি। এই ভাবে দেখলে রাজ্যের যেসব কেন্দ্রে বিজেপি একটু হলেও দাঁত ফোটাতে পেরেছে, সে সব কেন্দ্রের বর্তমান সাংসদরা কোন দলের হয়ে 'খেলবেন' তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
আরও পড়ুন- “ভোটের আগে যুদ্ধের কথা মনে পড়ল?”
প্রসঙ্গত, ঘরোয়া বৈঠকে বিজেপি যোগ নিয়ে অনেকবারই ক্ষোভপ্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে খোদ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২৫ ফেব্রুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ধিত কোর কমিটির বৈঠক রয়েছে নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে। সেই বৈঠকেও বিজেপি যোগ সম্পর্কে সাবধান বাণী শোনাবেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে দলের সাংসদরা কোন দিকে ঝুঁকছেন তা স্বয়ং মমতাও বুঝে উঠতে না পারায় 'আশায় বুক বাঁধছে' বিজেপি। পদ্ম শিবির দেখে নিতে চাইছে, কে কে 'বঞ্চিত হয়' জোড়া ফুলের টিকিট থেকে। তাছাড়া, বিজেপি-র সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলা তৃণমূল নেতারা শেষ পর্যন্ত টিকিট পায় কি না, সেটাও দেখার বিষয়।
অন্যদিকে, আগে প্রার্থীতালিকা ঘোষণা না করে তৃণমূল কংগ্রেসকে চাপে রাখর কৌশলও নিয়েছে বিজেপি। সেক্ষেত্রে যদি কোনও ঘোষিত তৃণমূল প্রার্থীকে ঘর ভাঙিয়ে বিজেপি-তে আনা যায়, তাহলে চমক এবং আঘাত দুটিই জোরদার হবে। এক্ষেত্র রাজ্যের শাসকদল রীতিমতো চাপে পড়বে বলেও মনে করছে পদ্ম শিবির। সমস্ত দিক বিবেচনা করে তাই গেরুয়া বাহিনীর সিদ্ধান্ত, তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভার প্রার্থী ঘোষণা করার পরই ৪২ আসনের পদ্ম প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করা হবে।