PM Narendra Modi vs WB CM Mamata Banerjee: ‘বিজেপি হঠাও, দেশ বাঁচাও’, এ স্লোগানকে সামনে রেখেই এবার নির্বাচনী প্রচারে নেমেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রচারের শুরু থেকে শেষ মমতার টার্গেট ছিল একজনই, নরেন্দ্র মোদী। ‘এক্সপায়ারি প্রধানমন্ত্রী’ হোক কিংবা ‘ঝুটা প্রধানমন্ত্রী’, মোদীকে বিঁধতে মমতার শব্দচয়নে সরগরম হয়েছে বঙ্গ রাজনীতি। কখনও মোদীকে কান ধরে ওঠবোস করার নিদান, আবার কখনও মোদীকে জেলে ঢোকানোর হুঁশিয়ারি, মমতা-বাণীতে সরগরম থেকেছে এই বঙ্গের ভোট বাজার। কখনও মোদীকে মাটির রসগোল্লা-লাড্ডু খাওয়ানোর কথা বলেছেন, আবার কখনও তাঁকে ‘ঠাটিয়ে গণতন্ত্রের থাপ্পড়’ মারার হঙ্কার কেড়েছেন মমতা। তবে শুধু মোদীই নন, বিজেপিকে নিশানা করতে গিয়ে বহুবারই মোদী সেনাপতি অমিত শাহকে একহাত নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অমিত শাহর ‘কাঙাল’ মন্তব্য নিয়ে যেমন সরব হয়েছেন মমতা, তেমনই আবার বাংলায় দুর্গাপুজো-সরস্বতী পুজো নিয়ে শাহর অভিযোগে পাল্টা জবাবে তৃণমূল নেত্রীর কটাক্ষ, ‘‘ওঁরা নকল গেরুয়া পরেন, আর ভিতরটা ঝাড়ুয়া’’।
অন্যদিকে, বাংলায় একের পর এক নির্বাচনী সভা থেকে চিটফান্ড কেলঙ্কারির প্রসঙ্গ টেনে মমতাকে বিঁধেছেন মোদী। কখনও আবার মমতারই ৪০ বিধায়ককে ভাঙানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বাংলার উন্নয়ন নিয়ে গলা হাঁকাতে গিয়ে মমতাকে ‘উন্নয়নের স্পিড ব্রেকার’ বলেও তোপ দেগেছেন প্রধানমন্ত্রী। মমতাকে আক্রমণ করতে গিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করেছেন নমো। পাশাপাশি বিজেপি সভাপতি অমিত শাহও মমতার তৃণমূলকে ‘টিএমসি এখন টেরর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি’ বলে কটাক্ষ করেছেন। সবমিলিয়ে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারযুদ্ধে মমতা-মোদী বা মমতা-শাহ বাগযুদ্ধে তোলপাড় হয়েছে বঙ্গ রাজনীতি।
Lok Sabha Election 2019: PM Modi vs Mamata Banerjee: লোকসভা নির্বাচনের প্রচার যুদ্ধে মোদী-মমতা বাগযুদ্ধ একনজরে...
* চিটফান্ড চর্চা:
বাংলায় ভোটের প্রচারে এসে বারবার চিটফান্ড কেলেঙ্কারির প্রসঙ্গ তুলে মমতার বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছেন মোদী-শাহরা। মোদী সেনাপতি যেমন বলেছেন, ‘‘চিটফান্ড কেলেঙ্কারি বাংলার মানুষের অনেক ক্ষতি করে দিয়েছে। আমাদের ক্ষমতায় আসার সুযোগ করে দিন, তারপর কাউকে ছাড়া হবে না ৯০ দিনের মধ্যে চিটফান্ডের অভিযুক্তদের জেলে ভরা হবে’’। শাহর মুখে এও শোনা গিয়েছে, ‘‘টিএমসি এখন টেরর ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি’’। চিটফান্ড ইস্যুতে মোদী বলেছেন, “কয়েকটি আসনে লড়াই করে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন দিদি! প্রধানমন্ত্রীর পদ নিলামে পাওয়া গেলে লুটে নেওয়া জিনিস নিয়ে হাজির হয়ে যেত তৃণমূল আর কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রীর পদ নিলামে মেলে না। তাহলে ওই পদ সারদা-নারদের টাকায় কেনা হয়ে যেত।কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হতে গেলে সাধারন মানুষের ভোটে জিতে আসতে হয়। ১৩০ কোটি দেশবাসীর আশীর্বাদে ওই পদ পাওয়া যায়।”
আরও পড়ুন- উনিশের ভোটের লড়াইয়ে নজরে বাংলার তারকা প্রার্থীরা
অন্যদিকে, মোদী-শাহদের চিটফান্ড মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে মথুরাপুরে মোদীর সভাস্থলের প্রসঙ্গে টেনে মমতা বলেছেন, ‘‘নারদা-সারদা-বড়দা, এই ভাবেই আপনারা তৈরি করেন এদের। যে মাটিতে দাঁড়িয়ে আপনি ভোট চাইবেন সেটা চিটফান্ডের মালিকের জমি, আপনার লজ্জা হওয়া উচিত নরেন্দ্র মোদী’’। পাশাপাশি মমতা বলেছেন, সারদা বাম আমলে হয়েছে।
* এক্সপায়ারি প্রাইম মিনিস্টার:
মোদীর প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনী প্রচারের শুরুতে মমতার মুখে ‘এক্সপায়ারি প্রাইম মিনিস্টার’ মন্তব্য নিয়ে জোর চর্চা হয়েছে রাজনীতির আঙিনায়। মমতা বলেছেন, মোদী এক্সপায়ারি প্রাইম মিনিস্টার। ওঁর মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। এ প্রসঙ্গে মোদীকে ‘মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ’ বলেছেন তৃণমূলনেত্রী। এদিকে, মোদী সেনাপতির গলায় বহুবার শোনা গিয়েছে, ‘‘বাংলায় পরিবর্তনের সূর্য উঠবে’’।
* মাটির রসগোল্লা, থাপ্পড়:
মোদীকে আক্রমণ করতে গিয়ে ‘থাপ্পড়’ মারার কথা বলেছেন মমতা। আবার মমতার হাতের ‘থাপ্পড়’কেই আশীর্বাদ হিসেবে মাথা পেতে নেওয়ার কথা বলেছেন মোদী। মমতা বলেছেন, ‘‘যখন আমার নামে, আমার কাজের নামে কেউ কেউ মিথ্যা কথা বলে, ইচ্ছে করে ঠাটিয়ে গণতন্ত্রের থাপ্পড় দিই’’। পরে অবশ্য এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘আমি থাপ্পড় মারব বলিনি, মিষ্টি দেব বলেছি। আমি বলেছি ‘গণতন্ত্রের’ থাপ্পড় দেবো। আমি নয় ভোটের মাধ্যমে মানুষই ওঁকে এই গণতন্ত্রের থাপ্পড় দেবে। আর আমি স্টোনচিপের লাড্ডু খাওয়াব। খাবে আর দাঁত ভাঙবে’’। মমতার এই মন্তব্যের পাল্টা মোদী বলেছেন, ‘‘আমি ওঁকে দিদি বলি, সম্মান করি। কিন্তু দিদি বলেছেন মোদীকে “থাপ্পড়” মারবেন। আপনার থাপ্পড় আমি মাথা পেতে নেবো, আশীর্বাদ হিসেবে ধরে নেবো’’। অন্যদিকে, মমতার ‘মাটির রসগোল্লা’ তাঁর কাছে ‘পবিত্র প্রসাদ’ বলে বর্ণনা করেছেন নমো।
আরও পড়ুন- ‘মাটির রসগোল্লা’ থেকে ‘থাপ্পড়’, উনিশের প্রচার মাত করলেন মমতা
* ছিলেন চাওয়ালা, এখন চৌকিদার:
মোদীকে বিঁধতে গিয়ে মমতার গলাতেও শোনা গিয়েছে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগান। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেছেন, ‘‘আগে চাওয়ালা ছিলেন, এখন চৌকিদার। আর চৌকিদার ঝুটা হ্যায়, চোর ভি হ্যায়, লুটেরা ভি হ্যায়। আগের বার ভোট চাইতে এসে নাটক করে বলেছিল, আমি চা-ওয়ালা, চা এর ভাঁড় নিয়ে ঘুরলো, কেটলি নিয়ে ঘুরলো, এখন তো আর সঙ্গে কেটলি নেই, সঙ্গে আছে জেটলি। এখন আবার বলছে উনি চা-ওয়ালা নয়, উনি চৌকিদার’’। অন্যদিকে, বহু সভায় মোদীকে বলতে শোনা গিয়েছে, এই চৌকিদারই দেশকে বাঁচাবে। দেশে দুর্নীতি রুখবে এই চৌকিদারই।
* মমতা, মোদী, মাঝে বিদ্যাসাগর:
উত্তর কলকাতায় অমিত শাহর রোড শো ঘিরে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কলেজ স্ট্রিট চত্বর। রাজনৈতিক সংঘর্ষের জেরে বিদ্যাসাগর কলেজে রাখা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার অভিযোগ ওঠে। যা ঘিরে তোলপাড় হয় বঙ্গ রাজনীতি। ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থেই মমতার লোকেরা বিদ্যাসাগরের মূপ্তি ভেঙেছে বলে অভিযোগ করেন অমিত শাহ। উত্তরপ্রদেশের সভা থেকে মোদী ঘোষণা করে দেন, ‘‘ক্ষমতায় এলে ওই জায়গাতেই বিদ্যাসাগরের পঞ্চধাতুর মূর্তি গড়ে দেবে কেন্দ্রীয় সরকার’’ এদিকে, এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ থেকে বলছে, মূর্তি বানিয়ে দেবে। তোমারটা থোড়াই নেব আমরা। বাংলায় টাকা আছে বিদ্যাসাগরের মূর্তি বানানোর জন্য। তোমার কাছে বাংলা ভিক্ষা চায় না। ২০০ বছরের ঐতিহ্য ভেঙেছেন। ফেরাতে পারবেন? কান ধরে ওঠবোস করা উচিত। একবার নয়, লক্ষবার করা উচিত। মিথ্যা কথা বলার জন্য। প্রমাণ করুণ, যে আমরা মূর্তি ভেঙেছি, তা না হলে জেলে টানব আপনাকে। আমরা ছেড়ে কথা বলব না’’। পাশাপাশি মমতা বলেন, ‘‘একটা কালো মূর্তি থাকবে তোমাদের জন্য। ওটা ফ্যাসিস্টের প্রতীক’’। রাম মন্দির ইস্যুর প্রসঙ্গ টেনে মমতার কটাক্ষ, ‘‘৫ বছরে রাম মন্দির বানাতে পারেনি, আবার বিদ্যাসাগরের মূর্তি বানাবে!’’
৪০ তৃণমূল বিধায়ককে নিয়ে টানাটানি:
বাংলায় ভোটপ্রচারে এসে হঠাৎই মমতাকে আক্রমণ করতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘আপনার ৪০ বিধায়ক আমার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন’’। এ প্রসঙ্গে মোদীকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে মমতা বলেন, ‘‘উনি (মোদী) বলেছিলেন ৪০ জন বিধায়ককে ভাঙাবেন। লজ্জা করে না! নির্লজ্জ প্রধানমন্ত্রী। একজন প্রধানমন্ত্রী হয়ে বেচা-কেনা করছ! যাকে নিয়ে নেওয়ার নিয়ে যাও। কিচ্ছু যায় আসে না। একটা পেলে জোগাড় করো। তোমার দলের মতো আমার দল চোর নয়। তোমার দল টাকার বিনিময়ে চলে, আমার দল রক্তের বিনিময়ে চলে। আমরা একটা গেলে ১ লক্ষ তৈরি করি, তৈরি করার মানসিকতা রয়েছে’’।
আরও পড়ুন- ‘অহংকারী’ মমতার রাজ্যে উনিশের ভোটে কী কী বললেন মোদী?
কমিশন-বিজেপি ভাই-ভাই:
শেষ দফার লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলায় প্রচারের সময়সীমা কমানো নিয়ে কমিশন ও বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বলেন, ‘‘কমিশন বিজেপির কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে। নির্বাচন কমিশন বিজেপির আরেক ভাই। কয়েকটা দুষ্টু লোক সব অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। এ যুগের শয়তান ওঁরা। সত্যি কথা বলতে ভয় পাই না। জেল হলে হবে’’। পাশাপাশি তৃণমূলনেত্রী বলেন, ‘‘যাঁরা বিজেপিতে যাবেন, সমাজ তাঁদের আগামী দিন গ্রহণ করবেন না’’। বিজেপি ভোটারদের উদ্দেশে তৃণমূল নেত্রীর পরামর্শ, ‘‘এখনও বলছি, বিজেপি ভোটাররা, এ ঘটনার পর বিজেপি ছেড়ে বেরিয়ে আসুন’’। মোদী-শাহদের আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘‘জরুরি পরিস্থিতি তৈরি করে বাংলায় ভোট করছে’’।
মোদীকে বিঁধতে মমতার ভরসা আডবাণী-জোশী ও বুদ্ধদেব-জ্যোতি বসু:
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে একহাত নিয়ে বিজেপি ভোটারদের কৌশলী বার্তা দিতে গিয়ে মমতা বলেছেন, ‘‘অটল বিহারী বাজপেয়ী ভাল মানুষ ছিলেন। ওঁর সঙ্গে ভাল সম্পর্ক ছিল। বেঁচে থাকাকালীন অটলজি মোদীর মুখ দেখতেন না। আডবানিজি ওঁর (মোদী) মেন্টর,অথচ আডবানিজিকে ভোটের টিকিট দেয়নি। আডবানীজি বেচারা মুখে কিছু কথা বলতে পারেন না, মুরলী মনোহর যোশীও কথা বলতে পারেন না।’’ পাশাপাশি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিজেপি সমর্থক নন বলে যেমন মন্তব্য করেছেন মমতা। তেমনই জ্যোতি বসু বেঁচে থাকলেও যে তিনি বিজেপি বিরোধী হতেন, তেমন আন্দাজও করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
আরও পড়ুন- বাংলার নির্বাচনী প্রচারে অমিত-বাণী, পড়ুন এক ঝলকে
বিজেপি-হাওয়ালা যোগ:
ভোট কিনতে বিজেপি টাকা ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে মমতা বলেন, ‘‘কলকাতায় হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচার করছে বিজেপি। কলকাতার পুলিশ কমিশনার কেন বদল করা হল জানেন, হাওয়ালা হলে, বিজেপিকে যেন কেউ ধরতে না পারে। বিমানবন্দরে টাকার বাক্স নিয়ে নামলে যাতে ধরতে না পারে, সে কারণে বিধাননগরের কমিশনার বদল করা হল’’। যদিও মমতার এহেন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে বিজেপি।
কুর্তা-মিষ্টি:
অক্ষয় কুমারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় মোদী বলেন, প্রতি বছর নিয়ম করে মমতা তাঁকে কুর্তা-মিষ্টি পাঠান। ভোটের ময়দানে মোদী-মমতার এহেন মিষ্টি সম্পর্ক সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। নীরবতা ভেঙে জনসভায় মমতা বলেন, ‘‘এই যে মোদীবাবু একটা ইন্টারভিউতে বলেছেন, আমি নাকি তাঁকে কুর্তা পাঠাই, দোষটা কীসের! আমার বিশ্ব বাংলা দোকান রয়েছে…তাঁতিরা কাজ করেন…তাঁরা আমায় তৈরি করে দেন, সেই জিনিস শুধু মোদীকে নয়, অনেককেই পাঠাই। ওঁরা বলে দেন, আমরা বলি না। আমরা নববর্ষে উপহার পাঠাই, দুর্গাপুজোয় পাঠাই। উনি তো নিজের নাম বলেছেন, সকলকে পাঠাই।। আমরা তো বলি না। সৌজন্য ও রাজনীতি আলাদা। আমি তো সবার জন্মদিনে চিঠি পাঠাই, আপনার জন্মদিনেও পাঠাই। কারও মৃত্যুকামনা তো করি না। সকলের শুভকামনা করি। সৌজন্যকে নিয়ে মার্কেটিং করছেন। ইমেজ তৈরি করছেন। তাহলে দেখুন, আপনাকে কত ভদ্রতা করি বলুন, তবুও রোজ চমকান। রোজ গুন্ডা বলেন’’।
এনআরসি তরজা:
ক্ষমতায় এলে বাংলায় এনআরসি করা হবে, এমন ঘোষণাই করেছেন অমিত শাহ। অনুপ্রবেশ রুখতে মোদীর মুখেও বারবার শোনা গিয়েছে এনআরসি। “অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা উইপোকার মতো’’, এমন মন্তব্যই করেছিলেন শাহ। পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে মমতা বলেছেন, ‘‘বাংলায় এনআরসি-র এন, আর , সি কিছুই করতে দেবনা। এনআরসি-র পাল্টা এনবিসি। মানে ন্যাশনাল বিদায় সার্টিফিকেট। আমরা এনবিসি করব, বিজেপিকে বিদায় করব’’। পাশাপাশি মমতা বলেন, ‘‘আগে দিল্লি সামলা, পরে বাংলা’’।
ধর্ম যখন ইস্যু:
বিজেপির হিন্দুত্ববাদকে নিশানা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি মমতার বিরুদ্ধে তোষণের রাজনীতির অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। রামনবমী উপলক্ষে গেরুয়াবাহিনীর অস্ত্র হাতে মিছিলকে নিশানা করে মমতা বলেন, ‘‘কিছু রাজনৈতিক দল মিথ্যা ধর্মের আনদানি করেছে, যার সঙ্গে বাংলার সংস্কৃতির মিল খায় না, ভারতের সংস্কৃতির মিল খায় না। একে অপরের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়াচ্ছে, সন্ত্রাস করছে। এদের ফ্যাসিবাদী শক্তি বলি। ধর্ম মানে হিংসা নয়, যুদ্ধ নয়। ধর্ম মানে মানবিকতা।’’ তৃণমূলনেত্রী আরও বলেন, ‘‘ধর্ম বেচে খাবেন না, ধর্মকে আমরা সম্মান করি। ধর্মকে নিয়ে রাজনীতি করার প্রয়োজন পড়ে না। নির্বাচনী বিধি লাগু রয়েছে, তার মধ্যে রামনবমীর মিছিল করছে। তোমরা আজ কেউ কেউ গদা নিয়ে, কেউ তরোয়াল নিয়ে বেরিয়ে পড়েছো। নিয়ে কার মাথা ফাটাবেন, কার গলা কাটবেন তরোয়াল দিয়ে? বাংলায় এসব করে ভোট হয় না।’’ পশাপাশি মোদী-শাহদের বিঁধে মমতা বলেন, “জগাই-মাধাই সরকার চালাচ্ছে। দুই ভাই মিলে দাঙ্গা করে দেশ চালাচ্ছ। ওদের তো দোষ নয়, আমাদের দোষ। কারণ, আমরাই ওদের হাতে দেশের দায়িত্বভার তুলে দিয়েছি” । মমতা এও বলেন, ‘আমাদের ব্লক সভাপতির যা যোগ্যতা আছে, সেই যোগ্যতা অমিত শাহের নেই। চ্যালেঞ্জ করে বলছি। একজন জেলা সভাপতির যে যোগ্যতা রয়েছে, তা নরেন্দ্র মোদীর নেই’’।