Debolinaa Nandy: অল্প সময়ের ব্যবধানে একের পর এক ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান দুর্ঘটনায় আতঙ্কের রেশ কাটতে না কাটতেই ফের মাঝ আকাশে ভেঙে পড়ল উড়ান। রবিবার ভোরে কেদারনাথ ধামে বিরাট দুর্ঘটনা, হেলিকপ্টার ভেঙে মৃত্যু কমপক্ষে ৫ জনের। এ যেন এক অভিশপ্ত রবিবাসরীয় সকাল! বারংবার এই মারাত্মক দুর্ঘটনায় উৎকণ্ঠায় ক্যাপ্টেন পত্নী দেবলীনা নন্দী। আহমেদাবাদের ঘটনাটা যে মুহূর্তে ঘটে সেই মুহূর্তে শুটে থাকার দরুণ তৎক্ষণাত খবরটা তাঁর কাছে পৌঁছায়নি। কিন্তু, যখন এই হাড় হিম করা বিমান দুর্ঘটনার কথা শুনেছেন কয়েক সেকেণ্ডের জন্য যেন থমকে গিয়েছিলেন দেবলীনা। কারণ তাঁর জীবনের প্রিয় মানুষ অর্থাৎ প্রবাহ যে পেশায় একজন ক্যাপ্টেন। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই দুঃশ্চিন্তায় দিন কাটে দেবলীনা দত্তর।
আহমেদাবাদের ঘটনার পর স্বামীর সঙ্গে একটি আদুরে ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, 'যতক্ষণ তুমি আছ আমার হার্টবিট সচল থাকে।' বৃহস্পতিবার আহমেদাবাদের পর রবিবার কেদারনাথের ঘটনার পর আরও উদ্বিগ্ন দেবলীনা? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, 'হ্যাঁ, সেটা তো খুব স্বাভাবিক। কাছের মানুষদের জন্য তো সবসময়ই চিন্তা হয়। ভালবাসার মানুষকে হারিয়ে ফেলার ভয় প্রত্যেকের হয়। ফ্লাইট যখন ডিপার্ট করে আর ল্যান্ড করে তখন আমাকে নিয়মিত মেসেজ করে জানায়। ওই মেসেজটার জন্যই আমি অপেক্ষা করে থাকি। ওটা পেতে যদি দেরি হয় তখনই চিন্তা শুরু হয়।'
আরও পড়ুন 'ফোনের ওপারে কারও সাড়া না পেয়ে...', ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় কাছের মানুষকে হারিয়ে শোকাচ্ছন্ন বাঙালি অভিনেত্রী
দেবলীনা উৎকণ্ঠার সঙ্গে বলেন, 'ওই ঘটনার পর ওকে বলেছিলাম কয়েকটা দিন কাজে না গেলে হয় না। কিন্তু, কর্মস্থানে যে সেটা সম্ভব নয় তা আমি বুঝি। আসলে মনের মধ্যে নানারকম দুঃশ্চিন্তা, ভয় কাজ করে বলেই বলেছিলাম। রবিবার ওঁর ডিউটি আছে, দুটো মেসেজের জন্যই অপেক্ষায় থাকব। আসলে অনেকেই বলে ডোমেস্টিক আর ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইটের মধ্যে পার্থক্য আছে। কিন্তু, যাঁর বাড়ির লোক এই পেশার সঙ্গে যুক্ত তাঁর মনে ভয়টা সর্বদাই কাজ করে। জীবন খুবই অনিশ্চিত। আগামীকাল কী হবে কেউ জানে না।'
আরও পড়ুন 'চোখের সামনে সব ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে-বুঝতে পারছে আর কয়েক সেকেণ্ড', বিমান দুর্ঘটনায় মারাত্মক আতঙ্কিত ঋতাভরী
প্রসঙ্গত, দেবলীনা পেশায় একজন শিল্পী হওয়ার পাশাপাশি জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারও। তাঁর ভ্লগ দেখতে মুখিয়ে থাকে অনুরাগীরা। বিমান দুর্ঘটনার পর একটি ভ্লগে মানসিক অবস্থার কথা শেয়ার করেছিলেন দেবলীনা নন্দী। তাঁর কথায়, প্রবাহ যখন ডিউটি জয়েন করে তখন আর ফোন পাওয়া যায় না যতক্ষণ না বিমান অবতরণ করছে। তাই ওই সময়টা চরম উদ্বেগের মধ্যে কাটে। বিমানবন্দরে প্রবাহকে সেদিন ছাড়তে গিয়ে দেবলীনা একবার ভেবেছিলেন তাঁকে বলবেন, আজ আর ফ্লাই করতে হবে না। পরক্ষণেই আবার মনে হয়েছে কাজের জায়গায় তো সেটা সম্ভব নয়। আবার মনে হয়েছিল যদি এটা বলেন, 'আজকে যেতে হবে না অন্যদিন যেও। কিন্তু, মনে হল এটাও কর্মক্ষেত্রে সম্ভব নয়।' এই মুহূর্তে দেবলীনার বাড়ির প্রতিটি সদস্য অর্থাৎ তাঁর ভাই, বাবা, শাশুড়ি মা প্রত্যেকের দিন খুব চিন্তার মধ্যে দিয়ে কাটছে।