Rituparna Sengupta On Mother's Day: ১১ মে 'মাদার্স ডে'। আজকের দিনে মায়ের কথা বড্ড মনে পড়ছে টলি কুইন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের। সুদূর সিঙ্গাপুরে থেকেও কলকাতার দুঃস্থ মাদের জন্য নিয়েছেন বিশেষ উদ্যোগ। সেই সঙ্গে একটি বৃদ্ধাশ্রমের মায়েদের জন্য খাওয়াদাওয়ার আয়োজনও করেছেন। আর নিজের মায়ের ফোনে মাতৃদিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, 'হ্যাপি মাদার্স ডে'। আজকের এই বিশেষ দিনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার সঙ্গে মনের কথা শেয়ার করে ঋতুপর্ণা বললেন, 'মা এত তাড়াতাড়ি চলে না গেলেও পারত...।' কথাগুলো বলার সময় শব্দগুলো যেন তাঁর গলার কাছে দলা পাকিয়ে আসছিল।
একরাশ দুঃখ নিয়ে ঋতুপর্ণা বলেন, 'আমার মা-ই নেই আর মাদার্স ডে!! তবে আজ আমি কলকাতার এক বৃদ্ধাশ্রমের মায়েদের জন্য খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। যে সকল দুঃস্থ মায়েরা আছেন তাঁদেরকেও খাওয়াব। আসলে মা তো মা-ই হয়। মায়ের কোনও বিকল্প নেই। নিজের মায়ের সঙ্গে দিনটা উদযাপন করতে পারছি না কিন্তু, পৃথিবীর বাকি মায়েরা যাতে ভাল থাকেন সেই জন্য আমার এই ছোট্ট প্রয়াস। শত কষ্টের মধ্যেও একটা আনন্দ, আজ মেয়ের জন্য আমার জীবনেও মাদার্স ডে। ও আমাকে সানফ্লাওয়ারের তোড়া আর পছন্দের পারফিউম দিয়েছে। আমার মায়েরও এগুলো খুব পছন্দ ছিল। আমাকে দেওয়ার সময় মেয়ে-ও সেই কথা বলল, তোমার আর মিমির দুজনেরই তো এগুলো পছন্দ।'
অভিনেত্রীর সংযোজন, 'এখন আমি সিঙ্গাপুরে। গতকাল মাদার্স ডে উপলক্ষে এখানে পুরতানের একটা শো ছিল। মনটা আজ ভীষণ খারাপ। সবকিছুর মধ্যে দিয়ে মাকে বারবার খুঁজে পেতে চাইছি। এখন তো আর মায়ের ফোন আসে না। কিন্তু, আজ মায়ের নম্বরেই একটা মেসেজ করলাম, 'হ্যাপি মাদার্স ডে'। ফোনটা এখন ভাইয়ের কাছে থাকে। তাই মনে হল মা-ই যেন আমার মেসেজটা দেখল। আমি এখনও হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজগুলো দেখি। কিন্তু, সেই ভয়েজ মেসেজগুলো শোনার আর সাহস হয় না। খুব কষ্ট হয়। যেখানে মা বলত, সাবধানে থাকিস। ফোন করিস। আজ ফোন করতে এত দেরি হল কেন। সেদিন হঠাৎ মায়ের ফোন থেকে মেসেজ এসেছে। আমি চমকে গিয়েছিলাম। তখনই ভাই বলল, দিদি ফোনটা আমি আমার কাছে রেখেছি।'
আরও পড়ুন 'একটু আদর করে চুমু খেতে পারলাম না...', মায়ের জন্মদিনে আক্ষেপ মাতৃহারা ঋতুপর্ণার
মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে বলেন, 'মায়ের আশীর্বাদেই পুরাতনটা সফল হল। এখনও বহু মানুষ সিনেমাটা দেখছে। এটা তো আসলে মায়েদের জন্যই বানানো। আজ দিল্লিতে শর্মিলা ঠাকুর তাঁর পরিচিতদের নিয়ে একটা অনুষ্ঠান করছেন। সেখানেও মায়েরা আসবেন। মনে মনে মা-কে বলছিলাম, এত তাড়াতাড়ি কেন চলে গেলে? আরও কয়েকটা দিন আমাদের সঙ্গে থাকতে পারতে। এই ব্যথাটা চিরন্তন। কোনও মলম নেই। মেয়ে যখন আমাকে আদর করল আমি বললাম মিমি (আমার মা-কে ও ডাকত)-র শেয়ারের আদরটাও করে দাও। যাঁদের মা আছে তাঁরা যেন মায়েদের যত্ন করে। বর্তমান পরিস্থিতিতে (ভারত-পাক উত্তেজনা) যে মায়ের সন্তানরা আর্ম ফোর্সে আছেন তাঁরা কতটা দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সেটা তো বলার মতো বিষয়ই নয়। তাঁদের জন্য আমার ভালবাসা-শ্রদ্ধা রইল। তাঁরা তো বীরাঙ্গনা। সবচেয়ে সাহসী মা। দেশকে রক্ষা করতে তাঁরা সন্তানদের পাঠিয়েছেন। আমি তাঁদেরকে স্যালুট করি। প্রতিটি মায়ের ইমোশন একই হয়। কারণ মা তো মা-ই হয়। যে মায়েরা সন্তানদের হারিয়ে ফেলেছেন তাঁদেরকেও আমি কুর্নিশ জানাই। তাঁরা তো প্রকৃত সাহসী মা। আমরা তো দূর থেকে এটুকুই করতে পারি। এর বেশি তো আমরা অক্ষম।'
আরও পড়ুন মাকে ছাড়া প্রথম নববর্ষ, তবে পুরাতনে মায়ের গন্ধুটুকু পাচ্ছি: ঋতুপর্ণা