/indian-express-bangla/media/media_files/2025/10/20/jaya-prada-husband-family-relationships-old-photos-movies-2025-10-20-14-55-51.jpg)
চেনেন এই অভিনেত্রীকে?
একসময় ভারতীয় সিনেমার রাজত্বকারী তারকা জয়া প্রদা, ছিলেন এক নামেই পরিচিত। ৭০ ও ৮০-এর দশকে তিনি রজনীকান্ত, অমিতাভ বচ্চন, এনটি রামা রাও (এনটিআর), ড. রাজকুমার এবং কমল হাসানের মতো কিংবদন্তি অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলেন। দক্ষিণ থেকে উত্তর, দেশের বিভিন্ন ভাষার ছবিতে তাঁর ছাপ আজও অমলিন।
অন্ধ্রপ্রদেশের রাজামুন্দ্রিতে ১৯৬২ সালের ৩ এপ্রিল কৃষ্ণ ও নীলাবেণীর ঘরে জন্ম নেন জয়া প্রদা। মাত্র কিশোরী বয়সেই তিনি সিনে-জগতে পা রাখেন। ১৯৭৪ সালে তেলুগু ছবি 'ভূমি কোসম'-এ একটি গানে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর পর্দায় অভিষেক হয়- যার জন্য তিনি পারিশ্রমিক পান মাত্র ১০ টাকা। এরপর কে. বালাচন্দরের মনমধা লীলাই (১৯৭৬) ছবির মাধ্যমে তামিল ছবিতে আত্মপ্রকাশ করেন। তাঁর প্রতিভা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে পরিচালক বালাচন্দর তাঁকে প্রধান চরিত্রে কাস্ট করেন, তামিল হিট আভাল ওরু থোডার কাথাই-এর তেলুগু সংস্করণ অন্তুলেনি কথা-তে।
Ahana Dutta-Kali Puja: 'শব্দটা কমুক এবার ', কালীপুজোয় মেয়ে মীরাকে নিয়ে সচেতনতার বার্তা অহনার..
ক্লাসিকাল নৃত্যে দক্ষ হওয়ায় জয়া দ্রুতই দক্ষিণের পর্দায় নিজের জায়গা পাকা করে নেন। সীতা কল্যাণম, আদাভি রামুডু, নিনাইথালে ইনিকুম, ভালে কৃষ্ণুডু, সিরি সিরি মুভা থেকে সাগরা সঙ্গমম- প্রতিটি ছবিতে তিনি দর্শককে মুগ্ধ করেছেন।
বলিউডে তাঁর যাত্রা শুরু হয় হিন্দি ছবি সরগম দিয়ে (যা সিরি সিরি মুভা-এর রিমেক)। এর পরেই আসে একের পর এক জনপ্রিয় ছবি। শারাবি, তোহফা, সঞ্জোগ, কামচোর প্রভৃতি। তিনি অমিতাভ বচ্চন, জিতেন্দ্র, শ্রীদেবী, রাকেশ রোশনদের মতো তারকাদের সঙ্গে পর্দা ভাগ করেন। জিতেন্দ্রর সঙ্গে তাঁর জুটি তৎকালীন বলিউডের সবচেয়ে সফল জুটিগুলির একটি হয়ে ওঠে। এবং তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক-প্রাপ্ত অভিনেত্রীদের একজন হয়ে যান। মালায়ালম সিনেমাতেও তিনি কাজ করেছেন, যেমন মামুট্টির সঙ্গে ইনিয়াম কথা থুদারুম-এ।
তবে ব্যক্তিগত জীবনে জয়া প্রদা কম বিতর্কের মুখ দেখেননি। তিনি প্রযোজক শ্রীকান্ত নাহাতাকে বিয়ে করেন, যিনি তখন বিবাহিত এবং তিন সন্তানের বাবা ছিলেন। ২০০৫ সালে এক সাক্ষাৎকারে জয়া জানান, কীভাবে শ্রীকান্ত তাঁর কঠিন সময়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁর কথায়, "আমার ক্যারিয়ার যখন তুঙ্গে, তখন ট্যাক্স-সংক্রান্ত সমস্যায় আমি ভুগছিলাম। শ্রীকান্ত সেই সময়ে আমাকে সমর্থন করেছিলেন। আমার মুখে হাসি ফিরিয়ে এনেছিলেন।"
তবে বিয়ে তাঁকে অনেক মানসিক আঘাত দেয়। তাঁর কথায়, “শ্রীকান্তের জন্য আমি সব কিছু ত্যাগ করেছিলাম, কিন্তু বিনিময়ে পেয়েছিলাম অপমান ও একাকিত্ব। আমাকে ‘অন্য মহিলা’ হিসেবে উপহাস করা হয়েছিল।” পরে তিনি সম্রাট নামে এক পুত্রকে দত্তক নেন।
বিয়ের পর তাঁর ক্যারিয়ারে মন্দা দেখা দিলেও কাজের ধারা থেমে যায়নি। ত্যাগী, ইন্দ্রজিৎ, পাপ্পী দেবতা, লোহপুরুষ, খাকি, তথাস্তু, দশাবতারাম, দ্য ডিজায়ার ও সুবর্ণ সুন্দরী-এর মতো ছবিতে তাঁকে দেখা গেছে। মোহনলালের সঙ্গে দেবদূতন (২০০০) ও প্রাণায়াম (২০১১)-এ তাঁর অভিনয়ও প্রশংসিত হয়।
৯০-এর দশকে জয়া প্রদা রাজনীতিতেও পা রাখেন। প্রথমে এন. টি. রামা রাওয়ের তেলুগু দেশম পার্টিতে (টিডিপি) যোগ দেন। পরবর্তীতে তিনি সমাজবাদী পার্টি ও পরে রাষ্ট্রীয় লোক দলে (আরএলডি) যুক্ত হন। ২০১৯ সালে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০২ পর্যন্ত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন, এরপর ২০০৪ ও ২০০৯ সালে উত্তরপ্রদেশের রামপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন।