রতন কাহার
অরুণবাবু ভীষণ ভাল একজন মানুষ ছিলেন। সত্যবাদী ছিলেন। কিন্তু, চিরদিন তো কেউ থাকে না। অরুণবাবুর প্রয়াণের খবরে আমি শোকার্ত। খুব খারাপ একটা খবর। কিন্তু, এটা তো প্রকৃতির নিয়ম, কিছু করার নেই। মনে খুব আঘাত লাগল, কতটা দুঃখ পেয়েছি সেটা বলে বোঝানো যাবে না। আমার সঙ্গে খুব যে দেখা সাক্ষাৎ বা কথাবার্তা হত এমনটা নয়। তবে, যখন দেখা হত খুব কথা বলতেন। একদম মাই ডিয়ার লোক ছিলেন। আমার ওকে ভীষণ ভাল লাগত। এত সুন্দর কথা বলতেন...।
আমাদের যখনই দেখা হয়েছে গান নিয়ে চর্চা করেছি। বেশ খানিকক্ষণ সময় কাটিয়েছি। সেগুলো খুব সুন্দর স্মৃতি। এই বছরেই মহালয়াতেই আসানসোলের একটি অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল। আমাকে বলেছিল, আপনার বাড়ি যাব। আমি বলেছিলাম একশোবার আসবেন। কিন্তু, আসতে পারেননি সেটা একটা আক্ষেপ রয়ে গেল। গান নিয়ে অনেকরকমের কথা বলতেন। একবার আমাদের বর্ধমানের একটি অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল। যখনই ওঁর সঙ্গে দেখা হত একটা করে লজেন্স দিতেন।
আমরা একসঙ্গে স্টেজ প্রোগ্রামও করেছি। তবে দুজনেএকসঙ্গে গান গাইনি। উনি লাল পাহাড়ির দেশে যা গেয়েছেন। তখন আমি বসে ছিলাম। আবার আমি যখন বড়লোকের বেটি লো গেয়েছি তখন উনি বসে। স্টেজে একসঙ্গে ছিলাম। সেদিন অনেক গল্প করেছি দুজনে। সবমিলিয়ে আমরা একসঙ্গে কম সময় কাটালেও যটুকু দেখা সাক্ষাৎ হয়েছে খুব ভাল লেগেছিল। এত ভাল একজন মানুষ ছিলেন...।
আরও পড়ুন: লাল পাহাড়ির দেশ ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি! প্রয়াত কালজয়ী গানের স্রষ্টা অরুণ চক্রবর্তী
লোকসংগীতের একটা আলাদা মাধুর্য আছে যা কোনওদিন হারিয়ে যাবে না। এটা আমার বিশ্বাস। লোকসংগীতের একটা আলাদা সম্মান আছে। এখন যাঁরা লোকসংগীত গাইছেন, তাঁরা কিন্তু, সঠিক মেকআপ করতে পারছেন না। মিউজিক বেশি, কথা বেশি। অনেক কিছুই বদলে ফেলা হচ্ছে। আমি সারাজীবন নিজের সুরে নিজে গান বেঁধেছি। পরীক্ষিত বালার মতো অনেকেই আবার মর্যাদার সঙ্গে লোকসংগীত গেয়েছেন।