সালটা ১৯৯১। সেপ্টেম্বরে ডিডি ওয়ান চ্যানেলে মুক্তি পেয়েছিল শক্তিমান। এতটাই জনপ্রিয় হয়েছিল এই শো যে আট বছর টানা সম্প্রচার করা হয়েছিল। 'মহাভারত' খ্যাত অভিনেতা মুকেশ খান্নার মস্তিষ্কপ্রসূত এই টেলিভিশন শোয়ের প্রধান চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকেই। নিজের বাড়িতে টিভিতে বাচ্চাদের জন্য সুপারহিরো শো দেখেই শক্তিমানের ভাবনা আসে তাঁর মনে। এটাই ছিল ভারতীয় টিভিতে শিশুদের জন্য প্রথম শো, যেখানে প্রথম পর্ব থেকেই স্পনসররা উৎসাহী হয়েছিলেন। শেষমেশ পার্লে-জি প্রথম থেকেই ধারাবাহিকটির মুখ্য স্পনসর হয়।
বিভিন্ন ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল শক্তিমানের কমিক বুক। ছোটদের মধ্যে তুমুল জনপ্রিয়তা পায় শক্তিমান পোশাক। নব্বইয়ের দশকের শিশুদের বেড়ে ওঠার অঙ্গ এই ধারাবাহিক। এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক এই টেলি সিরিজের শিল্পীরা এখন কোথায়।
আরও পড়ুন, ‘দুপুর ঠাকুরপো’-র তৃতীয় সিজন, পর্দায় নতুন বৌদি
প্রকৃতির পঞ্চমহাভূত থেকে শক্তি পেত ভারতের প্রথম টিভি সুপারহিরো শক্তিমান। মহাভারতের পর সূর্যবংশীদের থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিলেন শ্রী সত্য। শক্তিমান তাঁরই পুনর্জন্ম। পৃথিবীর অশুভ শক্তি বিনাশের জন্যই তাঁর আগমন। তাঁর অবশ্য ছদ্মবেশ ছিল, একজন ফোটোগ্রাফারের, নাম পণ্ডিত গঙ্গাধর বিদ্যাধর মায়াধর ওঙ্কারনাথ শাস্ত্রী। প্রত্যেকটা পর্বে অশুভ শক্তির সঙ্গে লড়াই করত, এবং শেষে খুদে দর্শকদের উদ্দেশ্যে নীতিবাক্যও বলত শক্তিমান।
'প্যায়ার কা দর্দ হ্যায়' ধারাবাহিকে শেষ দেখা গিয়েছে মুকেশ খান্নাকে। সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেল খুলেছেন অভিনেতা। সেখানে তিনি ইন্ডাস্ট্রির চড়াই উতড়াই নিয়ে কথা বলেন। শেষ পর্বে একতা কাপুরের নতুন 'মহাভারত'-এর সমালোচনায় মুখর হয়েছেন তিনি। এও জানিয়েছেন, শক্তিমানকে তিনি সিরিজ কিংবা চলচ্চিত্র হিসেবে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী।
আরও পড়ুন, ইস্টবেঙ্গল প্রেম বরুণের গলায়, ভালবাসার বার্তা ভিডিওতে
দৈনিক সংবাদপত্রের রিপোর্টার ছিলেন গীতা বিশ্বাস। তিনিই প্রথম সুপারহিরোর কথা লেখেন এবং নাম দেন 'শক্তিমান'। গীতা এবং শক্তিমান একে অপরকে ভালবাসতেন, কিন্তু বিশ্বের প্রতি তাঁর দায়িত্বের জন্য শক্তিমান কখনও সেই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যায় নি।
বৈষ্ণবী এই চরিত্রের জন্য প্রভূত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এতটাই, যে যখন গীতার চরিত্রটিকে শো থেকে বাদ দিয়েও তাকে ফিরিয়ে আনার দাবিতে দর্শকের চাপে জেরবার হয়ে যান প্রযোজক। 'ছুঁয়া হ্যায় আসমান', 'সপনে সুহানে লড়কপনকে', 'টশন-এ-ইশক'এর মতো ধারাবাহিকে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সম্প্রতি 'দিব্য দৃষ্টি' এবং 'ইয়ে উন দিনো কী বাত হ্যায়' ধারাবাহিকে দেখা যাচ্ছে বৈষ্ণবীকে।
আরও পড়ুন, অনলাইনে ফাঁস কঙ্গনার ‘জাজমেন্টাল হ্যায় ক্যায়া’
সিরিজের ভিলেন ছিল তমরাজ কিলভিশ। অন্ধকারের রাজা। এক হাজার বছর বেঁচে ছিল শুধুমাত্র শক্তিমানকে মারার জন্য। কালো শক্তি দিয়ে বিশ্বে রাজত্ব করতে চাইত সে। সবসময় বলত "অন্ধেরা কায়েম রহে"। শোয়ের পরের দিকে হায়নার লুকেও দেখা যতে তাকে।
তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে সুরেন্দ্র পাল জনপ্রিয় অভিনেতা। 'খুদা গওয়া', 'শেহর', 'যোধা আকবর'এর মতো ছবিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। সম্প্রতি 'মহাভারতে' দ্রোণাচার্য এবং 'আত্মা রাক্ষস' ধারাবাহিকে চাণক্যের মতো চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। 'জানা দিল সে দূর' ধারাবাহিকে শেষ দেখা গিয়েছে তাঁকে।
আরও পড়ুন, ‘রাজনীতির অলিন্দে’ ফিরছেন রাজা চন্দ
ড. জ্যাকল এক অসৎ বিজ্ঞানী, যে কিলভিশের অধীনে কাজ করত। জ্যাকল শয়তান ছিল বটে, কিন্তু বিজ্ঞানের পূজারীও ছিল। কিলভিশ তাকে ল্যাব দিয়েছিল পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য। তারপরেই খল চরিত্র তৈরি করতে লাগল সে। 'মুবারকা' ছবিতে শেষ দেখা গিয়েছে অভিনেতা ললিত পারিমুকে। 'কেসরিয়া বালম আও হামারে দেশ' ধারাবাহিকেও কাজ করেছেন তিনি। এছাড়াও থিয়েটার করেন মন দিয়ে।
তবে এই চারজন ছাড়াও শক্তিমান ধারাবাহিকে দেখা গিয়েছিল টম অল্টার, অশ্বিনী কালসেকর, নবাব শাহ, রাজেন্দ্র গুপ্ত, ঊর্ব্বশী ঢোলাকিয়ার মতো শিল্পীদের।
Read the full story in English