/indian-express-bangla/media/media_files/2025/07/22/wqdqw-2025-07-22-17-35-13.jpg)
অভিনেতার লড়াইয়ের কাহিনি
Bollywood Actor Sad Story: ভারতের চলচ্চিত্রের ইতিহাসে কালজয়ী ছবিগুলোর মধ্যে অন্যতম শোলে। ৫০ বছর পূর্তির পথে এই ছবি। রমেশ সিপ্পি পরিচালিত শোলে এমন এক বিরল সৃষ্টি যেখানে প্রতিটি চরিত্র এবং সংলাপ আজও লোকমুখে ফেরে। অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, সঞ্জীব কুমার, আমজাদ খান ও জয়া বচ্চনের মতো তারকাখচিত একটি ছবির সাফল্যের অন্যতম কণ্ডারি ছিলেন আসরানি, জগদীপ, ম্যাক মোহন, এ কে হাঙ্গাল ও বিজু খোটেও। জগদীপ অভিনীত 'সুরমা ভোপালি' চরিত্রটি আজও প্রতিটি সিনেপ্রেমীর হৃদয়ে জীবন্ত। তাঁর সংলাপ "হামারা নাম সুরমা ভোপালি অ্যায়সে হি নাহি হ্যায়" আজও চলচ্চিত্রপ্রেমীদের মনে গেঁথে আছে। কিন্তু জগদীপের জীবনের বাস্তব গল্পটা ছিল ঠিক সিনেমার চেয়েও অতি নাটকীয়।
/indian-express-bangla/media/post_attachments/b38213d7-420.jpg)
কঠিন শৈশব ও সংগ্রামের দিন
জগদীপ, যাঁর প্রকৃত নাম ছিল সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ জাফরি। দেশভাগের ঠিক আগে তিনি গোয়ালিয়রের কাছে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার মৃত্যুর পর মা তাকে করাচিতে নিয়ে যান যেখানে তার দুই ভাই থাকতেন। কিন্তু দেশভাগের কারণে পরিস্থিতি বদলে যায় এবং মা-ছেলে মুম্বই ফিরে আসেন। এরপর জগদীপের বড় ভাই তাদের ছেড়ে চলে যান। ফলে মা-ছেলের খরচ নিজেদেরই বহন করতে হয়। সেই জন্য রাস্তায় রাত কাটানো থেকে সাবান বা ঘুড়ি বিক্রি করে দিন গুজরান করতে হত। রাঁধুনি হিসেবেও কাজ করেছেন জগদীপের মা। এভাবেই ছোটখাটো কাজ করে যা টাকা জুটত, তা দিয়েই কোনওক্রমে সংসার চলত। জগদীপের ছেলে জাভেদ জাফরি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'টাকার অভাবে মেঝে থেকে পড়ে থাকা রুটির টুকরো কুড়িয়ে খেতেন। সেই খাবারে আবার ইঁদুর আর তেলাপোকার মল পর্যন্ত থাকত। খিদে মেটাতে সেগুলোই পরিষ্কার করে খেতেন।'
আরও পড়ুন ঢাকার মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় সন্তানহারা বহু বাবা-মা, লাইভে বুকফাটা কান্না অভিনেত্রী তিশার
/indian-express-bangla/media/post_attachments/a2abb135-de6.jpg)
সিনেমায় আত্মপ্রকাশ
চরম দারিদ্র্যের মাঝেই জগদীপের জীবনে আসে অভিনয়ের প্রথম সুযোগ। বি আর চোপড়ার আফসানা ছবির জন্য শিশুশিল্পী খোঁজ চলছিল।প্রতিদিন তিন টাকা রোজগারের সুযোগ শুনে জগদীপ খুশিতে লাফিয়ে ওঠেন। পরে জানেন, যারা উর্দুতে কথা বলতে পারেন তাঁরা পাবেন ছ'টাকা পায়। সেই থেকেই সিনে দুনিয়ার পথ চলা শুরু। অথচ সেই সময় সিনেমা দেখার পয়সা পকেটে ছিল না। এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, খাওয়ার পয়সা ছিল না, সিনেমা দেখা দূরঅস্ত। দিলীপ কুমার একবার জদগীপের অভিনয়ে এতটাই মুগ্ধ হন যে তাঁকে ১০০ টাকা উপহার দেন। এমনকি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু “হাম পাঁচি এক ডাল কে” ছবির প্রদর্শনীতে ডেকে নিজের হাঁটার লাঠিটি উপহার হিসেবে দেন।
আরও পড়ুন 'এগুলো না করলে...', অভিনেত্রী হতে কী শর্ত? কেরিয়ারের শুরুতে ভয়ংকর অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুললেন কল্কি
শিশুশিল্পী থেকে ধীরে ধীরে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান জগদীপ। যদিও তিনি কখনও মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পাননি। তবে শোলে-তে তাঁর "সুরমা ভোপালি" চরিত্র কেরিয়ারের সেরা প্রাপ্তি। সেলিম-জাভেদ জুটি তাঁকে এই চরিত্রের জন্য প্রস্তাব দেন। জগদীপের ছেলে নাভেদ জানান, 'জাভেদ সাহেব চাইতেন চরিত্রটি যেন সাধারণ ভোপালি পুরুষের মতো না হয়ে বরং ভোপালি নারীর মতো সংলাপ বলুক। যেটা দর্শকের কাছে আরও মজাদার হবে।'
শেষ জীবন
"শোলে"-র সাফল্যর পর জগদীপ নিজেই একটি সিনেমা পরিচালনা করেন যার নাম দেন 'সুরমা ভোপালি'। পুরাণ মন্দির, আন্দাজ আপনা আপনা-এর মতো সিনেমায় কাজ করেছেন। কিন্তু শোলে-র সুরমা ভোপালি-র মতো জনপ্রিয়তা ছুঁতে পারেননি। ২০২০ সালে ৮১ বছর বয়সে জগদীপ এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন। কিন্তু তাঁর জীবনের সংগ্রাম, হাস্যরস এবং অবদান চিরকাল ভারতীয় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের হৃদয়ে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন 'বুকের ভেতর ধরফর...', ঢাকায় বিমান দুর্ঘটনার পর কেন তড়িঘড়ি হাসপাতালে পরি মণি?
/indian-express-bangla/media/agency_attachments/2024-07-23t122310686z-short.webp)

Follow Us