Chandan Sen Reaction On Kesari 2: এপ্রিলে মুক্তি পেয়েছে অক্ষয় কুমার অভিনীত মুভি 'কেশরি চ্যাপ্টার ২'। ফ্লপের গেরো কাটিয়ে এই ছবির মাধ্যমে সাফল্যের মুখ দেখার আশা ছিল আক্কির। যদিও সেই আশা পূরণ হয়নি। উলটে চরম বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে কেশরি ২। ওটিটি-তে মুক্তির পর সেই বিতর্ক আরও জোড়াল হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অপমান ও তথ্য বিকৃতির অভিযোগ উঠেছে এই ছবির বিরুদ্ধে। জল গড়িয়েছে নবান্ন পর্যন্ত। বিধাননগর দক্ষিণ থানায় মামলা দায়ের হওয়ার পর এই ইস্যুতে ফুঁসে উঠেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কড়া ভাষায় ছবির নির্মাতাদের দিকে আঙুল তুলে প্রশ্ন ছুঁড়েছেন, 'সিনেমা তৈরি করে ক্ষুদিরামকে বলছেন ক্ষুদিরাম সিং! লজ্জা করে না স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অসম্মান করতে? অন্য রাজ্যের কাউকে আমরা অসম্মান করি না। সত্যকে বিকৃত করে যদি মনে করেন বিজেপির নকল ধর্ম দিয়ে বাংলার ব্রেন ক্যাপচার করবেন, জানবেন বাংলার মানুষ এর প্রত্যুত্তর দিতে তৈরি হচ্ছে।'
এবার কেশরী ২ নিয়ে ফুঁসে উঠলেন বিগদ্ধ অভিনেতা চন্দন সেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায় এই ঘটনার প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে বললেন, 'এই ধরনের ভাবনা-অশিক্ষা ২০১৪ সালের আগে প্রায় ছিলই না। যে প্রজন্ম সিনেমায় এই শব্দটা (ক্ষুদিরাম সিং) ব্যবহার করেছে তার আগের প্রজন্ম ভাবতেও পারত না এই ধরনের ভুল করা সম্ভব। কিন্তু, বর্তমান প্রজন্মের অনেক অভিনেতা-অভিনেত্রী আছেন যাঁরা এই মারাত্মক ভুল করতে পারেন। যাঁদের শিক্ষা সম্পর্কে কোনও জ্ঞান নেই, অভিজ্ঞান সম্পর্কে তো নেই-ই। এরাই একমাত্র ক্ষুদিরাম বসুকে ক্ষুদিরাম সিং বলতে পারেন।'
তাঁর প্রতিবাদী কণ্ঠ বলছে, '২০১৪-এর পরবর্তী ক্ষেত্রে এই ধরনের ঘটনা ঘটার একটা বিশেষ কারণ আছে। সতেরো ও আঠারো শতক, এই দুটি শতকই তো বাঙালির পরিচয়, বাঙালির জাতিসত্ত্বার পরিচয়। আর সেই পরিচয়টাকে মুছে ফেলতে চায় ওঁরা। এই ঘটনা যতটা না অশিক্ষার পরিচয় দিচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি অবহেলা মনোভাবের পরিচয় দিয়েছে। যদি কেউ অবজ্ঞা না করে তাহলে এই ধরনের কথা বলতে পারেন না।'
আরও পড়ুন 'কেশরী ২'-তে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের চরম অপমান! তীব্র প্রতিবাদ সৃজিত-ঋত্বিকের
এই ঘটনার প্রতি রাজ্য সরকারের নড়েচড়ে বসা উচিত বলে মনে করছেন চন্দন সেন। তাঁর মতে, 'শুধু মুখে প্রতিবাদ করে লাভ নেই। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উচিত এই ঘটনার তীব্র বিরোধীতা করা। আইনের সাহায্যে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। সর্বভারতীয় স্তরে যদি এই ঘটনার প্রভাব না পড়ে তাহলে এই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটবে।'
প্রসঙ্গত, সোশ্যাল মিডিয়ায় কেশরী ২-নিয়ে সুর চড়িয়ে অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী লিখেছেন, 'শুনলাম "ছাপরি চ্যাপ্টার গু" বলে একটা হিন্দি সিনেমায় নাকি ইতিহাস বিকৃত হয়েছে। অবশ্য হিন্দি সিনেমার থেকে ইতিহাস শেখা উচিত নয়। ওরা কিন্তু যে-কোনো দিন ছাপ মারা বিশ্বাসঘাতক কে বীর বলে চালিয়ে দেবে।'
আরও পড়ুন কেশরী ২-তে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম ও তথ্য বিকৃতির অভিযোগ, বলিউড নিয়ে বিস্ফোরক দেবী চৌধুরানী খ্যাত শুভ্রজিৎ
পোস্টের শেষে পুনশ্চ সহযোগে আরও লেখেন, 'এক বন্ধু জানালেন সিনেমার নামটা ভুল বলছি। আসল নাম "যুবা কেসরী- ফুঃ'। অক্ষয় অভিনীত সিনেমার সেই নির্দিষ্ট অংশটুকু শেযার করে পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন তুলেছেন, 'ক্ষুদিরাম সিং? এরপর তাহলে মোহনদাস করমচাঁদ মুখোপাধ্যায়? জহওরলাল দস্তিদার? লালা লাজপত লাহা? এই রিসার্চ দেখে অত্যন্ত দুঃখ হচ্ছে।'