আর খেলবেন না আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, শনিবারই গৌরবোজ্জ্বল ক্রিকেট কেরিয়ারে ইতি টানলেন ভারতের বিশ্বকাপজয়ী প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। কেরিয়ারের সূর্য অস্তমিত হলেও তিনি ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে সবসময়ই মধ্যগগনে থাকা সূর্য। তিনিই প্রথম কোনও অধিনায়ক যিনি বিশ্বকাপ, আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি এবং টি২০ বিশ্বকাপ-এই তিনটি কাপ ভারতীয় ক্রিকেটকে উপহার দেন। অথচ এই ধোনিকেই অধিনায়ক পদ থেকে বাদ দিতে চেয়েছিলেন বিসিসিআইয়ের বেশ কয়েকজন নির্বাচক, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন বিসিসিআইয়ের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসন।
কেন এই সিদ্ধান্তের কথা উঠেছিল বিসিসিআই অন্দরে?
২০১১ সালে এপ্রিল মাসে ধোনির নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জেতে ভারত। কিন্তু সে বছরেই ইংল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়ায় খেলা টেস্ট ম্যাচে একবারে ভরাডুবি হয় ভারতের। দুই দেশের কাছেই পাঁচটি টেস্ট ম্যাচে ৪-০ তে সিরিজ হারে ধোনির ভারত। সেই সময় ভারতোয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডে নির্বাচক ছিলেন কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত এবং তাঁর সতীর্থ মহিন্দর অমরনাথ। দুজনেই চেয়েছিলেন ভারতের ক্যাপ্টেনসিতে বদল আসুক।
ধোনির উপর চাপ ছিল কেন?
সেই সময় আইসিসি টেস্ট ক্রম তালিকায় ১ নম্বরে ছিল ভারত। দেশের মাটিতে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স করলেও বিদেশের মাটিতে ভিত শক্ত করতে পারছিল না দল। তবে ইংল্যান্ডে ধোনির রান খারাপ ছিল না। ভারতের হয়ে মাহির রানই ছিল সবচেয়ে বেশি। মোট রান ছিল ২৩৬, গড়-৭৮। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় ব্যর্থ হন তিনি। আরএরই ওঠে অধিনায়ক পদ বদলের দাবি। যদিও এই দাবিকে নস্যাৎ করেন তৎকালীন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসন।
আরও পড়ুন, “পরিকল্পনা করেই ধোনি আর আমি অবসর নিয়েছি”, খবর ফাঁস করলেন রায়না
ধোনির স্বপক্ষে কী যুক্তি দিয়েছিলেন বোর্ড প্রধান?
বিসিসিআই-এর নিয়ম অনুযায়ী একটি ম্যাচের ভিত্তিতে কখনই ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স বিচার করা হয় না। তাই টেস্ট ম্যাচের হার দিয়ে ধোনির অধিনায়কত্ব বিচারও করা যাবে না বলেই জানিয়েছিলেন শ্রীনিবাসন। তিনি বলেন, "কিছুদিন আগেই যিনি ভারতকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছেন তাঁকে অধিনায়ক পদ থেকে বাদ দেওয়া যায় না কি?" তিনি এও বলেন, "কোনও বদলি ক্যাপ্টেনের কথা না ভেবেই ক্যাপ্টেনসি বদলের কথা বলা হয়। কিন্তু আমি একটাই নাম বলে রেখেছিলাম। তা হল এম এস ধোনি। বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের সব ক্ষমতার ব্যবহার করেছিলাম সেদিন।”
আরও পড়ুন, “তোমাকে কেউ কোনওদিন ভুলবে না”, ধোনিকে নিয়ে বিহ্বল স্ত্রী সাক্ষী
বিসিসিআই প্রেসিডেন্টের হাতে কি সত্যিই সেই ক্ষমতা থাকে?
আগে এই ক্ষমতা থাকলেও পরবর্তীতে লোধা কমিটি এসে এই ব্যবস্থার পরিবর্তন করেন। বিসিসিআইয়ের এখন যে নতুন নিয়ম যেখানে সম্মতি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট, তা হল, "দলের পারফরম্যান্সের নির্বাচন, কোচিং এবং মূল্যায়নের মতো ক্রিকেট সংক্রান্ত বিষয়াদি পরিচালনা কেবলমাত্র খেলোয়াড়ের সমন্বয়ে ক্রিকেট কমিটিগুলি (দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাছাই কমিটি) দ্বারা পরিচালিত হবে।"
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন