The 2019 Balakot Air Strike: ২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি, জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান শহিদ হন। এই হামলার দায় স্বীকার করেছিল পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ। এর মাত্র ১২ দিনের মাথায়, ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে ভারতীয় বায়ুসেনা চালায় ইতিহাসের অন্যতম দুঃসাহসিক ও কৌশলগত এয়ার স্ট্রাইক— যেটি আজও পরিচিত “বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক” নামে।
এয়ার স্ট্রাইকের মূল লক্ষ্য
ভারতের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের বালাকোট শহরে জইশ-ই-মোহাম্মদের একটি বড়সড় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছিল। সেখানে প্রায় ২০০–৩০০ জঙ্গি থাকত বলে দাবি করা হয়।
আরও পড়ুন- ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কি আদৌ যুদ্ধের সম্ভাবনা আছে? কী বলছে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএর নথি
ভারত ১২টি মিরাজ ২০০০ ফাইটার জেট ব্যবহার করে গভীর রাতের অন্ধকারে এই বালাকোটে ১০০০ কেজি ওজনের বোমা ফেলেছিল। লক্ষ্য ছিল— জঙ্গিদের ঘাঁটি ধ্বংস করা, যাতে ভবিষ্যতে ভারতের বিরুদ্ধে আঘাত হানার ক্ষমতা তারা হারিয়ে ফেলে।
আরও পড়ুন- 'আবদালি' উৎক্ষেপণ পাকিস্তানের, তীব্র প্রতিক্রিয়া ভারতের! কেন এই ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে এত মাথাব্যথা?
কীভাবে হয়েছিল অভিযান?
-
রাত ৩:৩0 নাগাদ মিরাজ জেটগুলো ভারতে থেকে উড়ে গিয়েছে।
-
পাকিস্তানের রেডার ফাঁকি দিয়ে তারা পাকিস্তানের সীমায় প্রবেশ করেছিল।
-
প্রায় ২১ মিনিটের মধ্যে হামলা শেষ হয়।
-
মাটিতে কোনও ভারতীয় সেনার পা রাখার প্রয়োজন হয়নি।
-
এই পুরো অপারেশনকে বলা হয় "নন-মিলিটারি প্রি-এম্পটিভ স্ট্রাইক", যাতে সাধারণ নাগরিকের ক্ষতি না হয়।
আরও পড়ুন- 'জিহাদি জেনারেল' আসিম মুনির! পাক সেনাপ্রধানের 'কাশ্মীর জিহাদ'-এর কাহিনি শুনলে শিউড়ে উঠবেন
পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া
পরদিন, ২৭ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তান পালটা হামলা চালায়। পাকিস্তানি এয়ারফোর্স ভারতীয় আকাশসীমায় প্রবেশ করলে, ভারতীয় উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান তাঁদের রুখে দেন। যদিও তিনি পাকিস্তানে বন্দি হন, তাঁকে ২ দিন পর কূটনৈতিক চাপে ফিরিয়ে দেয় পাকিস্তান।
আরও পড়ুন- কেন সংঘর্ষবিরতির পরও গুলি? পাক সেনার লাগাতার বিরতি লঙ্ঘনের পিছনে উদ্দেশ্যটা কী?
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
-
এই ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং ইজরায়েল ভারতের পাশে দাঁড়ায়।
-
চিন ও রাষ্ট্রসংঘ সংযম বজায় রাখার পরামর্শ দেয়।
-
ভারতের স্ট্রাইককে অনেকেই "সাহসী কিন্তু নিয়ন্ত্রিত পদক্ষেপ" বলে অভিহিত করেছিলেন।
বালাকোট এয়ার স্ট্রাইক ছিল ভারতের তরফ থেকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরাসরি বার্তা। এটি শুধু একটি প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নয়, বরং আন্তর্জাতিক পরিসরে ভারতের প্রতিরক্ষা নীতির নতুন দৃষ্টান্তও বটে। অপারেশন Sindoor আবারও ভারতের সেই সাহসিকতার কথাই মনে করিয়ে দিল। বুঝিয়ে দিল যে ভারত এখন আর শুধু "নিন্দা" করে থেমে থাকে না, প্রয়োজনে কড়া সামরিক প্রতিক্রিয়াও জানায়।