LoC on the Edge: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে ফের উত্তেজনা। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহ থেকে প্রতি রাতেই পাকিস্তান সেনা যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গুলিবর্ষণ করছে। ভারতীয় সেনা এর মোকাবিলায় সমানতালে জবাব দিচ্ছে। তবে, এই ঘটনার পেছনে শুধু সামরিক পদক্ষেপ নয়, রয়েছে রাজনৈতিক ও কৌশলগত বার্তাও।
যুদ্ধবিরতির ইতিহাস কী?
ভারত (India) ও পাকিস্তানের (pakistan) মধ্যে শেষ যুদ্ধ হয়েছিল ১৯৭১ সালে। এরপর সিমলা চুক্তির মাধ্যমে ‘সিজফায়ার লাইন’ হয়ে ওঠে ‘লাইন অফ কন্ট্রোল’। এটি কোনও আন্তর্জাতিক সীমান্ত নয়, বরং দুটি দেশের সেনাবাহিনীর দখল অনুযায়ী একটি সামরিক রেখা।
আরও পড়ুন- বিশ্বের সবচেয়ে বড় সেনাবাহিনীগুলো, ২০২৫-এ ভারত আছে কততম স্থানে?
২০০৩ সালে দুই দেশের ডিরেক্টর জেনারেলস অফ মিলিটারি অপারেশনস (DGMOs) একটি মৌখিক সমঝোতায় পৌঁছায়—যেটি যুদ্ধবিরতি রক্ষা করে। কিন্তু, এটি কোনও লিখিত চুক্তি নয়। তাই একে অনেকেই বলেন “understanding rather than agreement”।
কেন লঙ্ঘন করছে পাকিস্তান?
১. সন্ত্রাসবাদ আড়াল করার কৌশল: গত ২২ এপ্রিল, কাশ্মীরের পাহালগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারান। তার পরই পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন শুরু। এমন হামলার পর সীমান্তে উত্তেজনা বাড়িয়ে তারা ভারতীয় সেনার নজর সরাতে চায়।
আরও পড়ুন- মোজা পরলেই পায়ের গন্ধ? মাত্র কয়েক দিনে মিলবে মুক্তি এই উপায়ে!
২. মরাল অ্যাসেনডেন্সি দেখানো: সীমান্তে নতুন কমান্ডারদের সাহস বা কৌশল “পরীক্ষা” করার জন্য এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। এটি সামরিক ব্যাকরণে পরিচিত “Autonomous Military Factors” হিসেবে।
আরও পড়ুন- ঠোঁট ফেটে যাচ্ছে? ঘরোয়া উপায়েই মিলবে সহজে আরাম!
৩. রাজনৈতিক বার্তা: অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা বা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপ থেকে দৃষ্টি সরাতে সীমান্তে উত্তেজনা (Border Tension) তৈরি পাকিস্তানের পুরোনো কৌশল।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন কখন থামে?
যখন দুই দেশের সেনা কমান্ডারদের মধ্যে হটলাইন বা ফ্ল্যাগ মিটিং-এর মাধ্যমে বোঝাপড়া হয়, তখন অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি ফিরে আসে। এই বোঝাপড়াগুলি বহুবার ভেঙেছে, আবার বহুবার পুনরায় চালু হয়েছে।
আরও পড়ুন- হাজারো চেষ্টাতেও সারছে না ব্রণ! ট্রাই করুন এগুলো, মিলবে নিশ্চিত মুক্তি
২০২১ সালে, চিন সীমান্তে চাপের মধ্যে ভারত ও পাকিস্তান আবার একটি শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এতে সীমান্তের গ্রামবাসীদের উপকার হয়— চাষাবাদ বেড়েছে, প্রাণহানি কমেছিল।
বর্তমান পরিস্থিতি কী?
সাম্প্রতিক ঘটনার পর ২৯ এপ্রিল দুই দেশের DGMOs হটলাইনে কথা বলেন। ভারত এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের তীব্র প্রতিবাদ জানায়। পাকিস্তান এখনও থামার ইঙ্গিত দেয়নি, বরং নিজেদের ঘুঁটি শক্ত করছে।
লাইন অফ কন্ট্রোল (LoC) এমন এক সীমান্ত, যেখানে যুদ্ধবিরতি থাকলেও গোলাগুলি অস্বাভাবিক নয়। পাকিস্তান যতবারই আক্রমণ করে, ভারত সঠিক ও পরিমিত জবাব দেয়। কিন্তু প্রকৃত শান্তি তখনই সম্ভব, যখন কেবল সেনা নয়, কূটনৈতিক স্তরেও পারস্পরিক বিশ্বাস ও স্বচ্ছতা থাকবে।