কাশ্মীর ইস্যুতে ফের পাকিস্তানের পাশে চিন। শুক্রবার, কাশ্মীর ইস্যুতে মুখ খোলেন চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। তিনি বলেন, 'কাশ্মীর সমস্যার সমাধান রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন ও ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি মেনেই হওয়া উচিত। স্থিতাবস্থা পরিবর্তন করতে পারে এমন কোনও সিদ্ধান্ত কোনওপক্ষেরই একতরফাভাবে নেওয়া উচিত নয়'।
পাকিস্তানের বরাবরের বন্ধু রাষ্ট্র চিন। পাকিস্তানে চিনা বিনিয়োগের পরিমানও নেহাত কতম নয়। অন্যদিকে, ভারত-মার্কিন সম্পর্কে যে ক্রমশ পোক্ত হচ্ছে তা স্পষ্ট। তাই প্রতিপক্ষ আমেরিকাকে ঠেকাতে চিনের এই পাক প্রেম বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের একাংশ।
আরও পড়ুন: ভারতের সঙ্গে ডাক যোগাযোগ বন্ধ করল পাকিস্তান
কাশ্মীরে মুসলিমদের বাস। সেখানে ৩৭০ ধারা বিলোপ করে মানবাধিকার খর্ব করছে নয়াদিল্লি। সরব ইসলামাবাদ। তবে, কাশ্মীর নিয়ে চিন তাদের পাশে দাঁড়ালেও বেজিংয়ের পদক্ষেপে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে 'কাপ্তান' ইমরানকে। উপত্যকার মুসলিমদের জন্য ভাবনা থাকলেও চিনের চিনের মুসলিমদের পরিস্থিতি নিয়ে কেন মাথা ব্যথা নেই ইমরান খান প্রশাসনের, প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার সেই প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হল পাক সরকারকে।
'পশ্চিম চিনে যে সমস্ত মুসলিমকে আটক করে রাখা হয়েছে, তাঁদের জন্যেও একই রকম আকুতি থাকা উচিত। চিন দেশ জুড়ে মুসলমানদের সঙ্গে যা হচ্ছে, তাতে কাশ্মীরের তুলনায় অনেক বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে', সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ এবং মধ্য এশিয়ার সচিব অ্যালিস ওয়েলস জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কাশ্মীরে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছি মোদী-ইমরানকে: ট্রাম্প
শুক্রবার রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখেন ভারত ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী বিশ্বকল্যাণের কথা তুলে ধরেন। অন্যদিকে, ভারত বিরোধিতাকেই পুঁজি করেছিলেন ইমররান খান। হুকির সুরে তিনি বলেছেন, 'দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে যে কোনও কিছুই ঘটতে পারে। একটা দেশ পড়শির থেকে সাত গুণ ছোট, তাহলে দুটো বিকল্প হাতে থাকে। হয় আত্মসমর্পণ নয়তো স্বাধীনতার জন্য মৃত্যুবরণ।’ তাঁর হুমকি, ‘আমরা লড়াই করব। কিন্তু, যখন পরমাণুশক্তিধর রাষ্ট্র জীবনমরণ লড়াই করে তখন তার ফল সীমা ছাড়িয়ে যেতে পারে।'
পাক প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণের সময় অবশ্য কয়েকজন ভারতের তরফে কয়েকজন আধিকারিক ও কূটনীতিক ছাডা় তেমন কেউ উপস্থিত ছিলেন না। প্রদানমন্ত্রী ভাষণের কিছু পরেই সভা ছেড়ে চলে যান বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ইমরান খানের বক্তব্যের বিরোধিতা করেছে নয়াদিল্লি। বিদেশমন্ত্রকের প্রথম সচিব বিদিশা মৈত্র বলেন, 'পাক প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাষ্ট্র নেতাসুলভ নয়। সমস্যা সমাধানের বদলে ধ্বংসাত্মক পক্রিয়া প্রয়োগ করার চর্চাই তাদের বিশেষত্ব'। তাঁর সংযোজন, 'পাকিস্তান কি স্বীকার করবে যে তারা রাষ্ট্রসংঘ ঘোষিত আলকায়দা জঙ্গিদের অবসর ভাতা দান করে? ইমরান খান কি নিউ ইয়র্কে দাঁড়িয়ে অস্বীকার করতে পারবেন যে তিনি একসময় প্রকাশ্যে ওসামা বিন লাদেনকে সমর্থন করেছিলেন?'
Read the full story in English